সর্বশেষ

ডিম পড়া:চোর ধরার একটি প্রাচীন তত্ত্ব

আমার এক চাচাতো ভাইয়ের মোবাইল ফোন হারিয়েছে গত পরশু।সে আবার তদবিরে মারতত্মক বিশ্বাসী।তাই চোর বা চোরনীকে ধরতে সে এক হুজুরের কাছ থেকে ডিম পড়া নিয়ে এলো।এই ডিম পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতলে চোর বা চোরনীর গায়ে ফোঁসকা পড়বে এবং আযাবে ফোন ফেরত দিতে বাধ্য হবে বলে ছোট ভাইয়ের বিশ্বাস।
ছোট ভাইয়ের তদবিরের প্রতি এই আস্থার অন্যতম কারণ তার একটা তাবিজ।যে তাবিজ তাকে এক সুললনার দুষ্প্রাপ্য ভালবাসা এনে দিয়েছে যে ছিল তার চেয়ে কয়েক ক্লাস উপরের ছাত্রী।
যেই ভাবা সেই কাজ!গতকাল সে ডিম পড়িয়ে এনে চুলায় পোড়া দেয়।তারপর পোড়া ডিম উঠিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলে।এসময় পাশে বসে থাকা এক ছোট ভাই তাকে একাধিকবার বলে,ও ভাই,ডিমটা পোড়ায় নষ্ট না করে আমারে দে।আমি খেয়ে দোয়া করবানি যাতে ফোনটা পাইস।
কে শোনে কার কথা!সেই ডিম সে উপযুক্ত নিয়ম পালন করে,কুফফুরী কালাম পড়ে সংরক্ষিত মাটিতে পুঁতে দিয়েছে।ডিমপড়ায় বিশ্বাসী সেই ছোট্র ভাই আজ খালে গোসল করতে এসেছে দেখে জিজ্ঞেস করলাম,ডিম পড়ায় কাজ কি হলো?
মুখ গোমড়া করে তাকিয়ে বলে,দাঁড়ান না ভাই,কাজ হবেই...ডিম পড়া বৃথা যায়না,ডিম পড়া কথা কয়রে ভাই।ঐ ডিম ওর গায়ে গিয়ে বিঁধবে,কোঁড়ামোড়া দিয়ে জ্বালাও পোড়ায়ে চোরের চৌদ্দগোষ্ঠী চলে আসবে ফোন নিয়ে।
উল্লেখ্য,হ্যান্ডসেটটি প্রায় ৫ বছরের পুরোনা চাইনিজ ফোন।
আমি বললাম,পোড়া ডিম কি চোরের পেটে গিয়ে বাচ্চাকাচ্চা উত্‍পাদন করার সম্ভাবনা আছে?ডিমটি হাঁসের না মুরগীর ছিল?
আমার কথায় উত্তর না দিয়ে গোসল করেই কপাল ভাঁজ করে বাঁকা হাসি দিয়ে চলে যায় শেষে।বাঁকা হাসির মর্ম,চান্দু তুমি বড় ভাই হতে পারো,লেখাপড়া জানতে পারো,তয় ডিম পড়ার ক্ষমতার পরিধি তুমি এখনো জানোনা...সবার সবজ্ঞান থাকেনা।ডিমের রাজ্যে তুমি বোকা।
আমি অপেক্ষায় আছি কাজ হয় কি না । যদি ফলপ্রসূ পরীক্ষা হয় তবে বাংলাদেশের বড় বড় চোর ধরতে আর কোটি কোটি টাকা খরচ করে অতো বাহিনী লাগবেনা।বরং ডিম পোড়া ডিপার্টমেন্ট খুললেই হলো।সময় ও অর্থ বাঁচবে এবং নিরপেক্ষতাও থাকবে।বাহিনীর নাম হবে এফডিআই বা FDI যার পুরো নাম হবে-
Federal Dim Investigation
অথবা
CID=Crime Investigation with Dim
বিকালে এ প্রস্তাব দেওয়ার পর ও এমনভাবে তাকালো যার মানে: আরেকটি ফাও কথা বললে আপনাকে ডিম পড়া দিয়ে শেষ করে দিবো কিন্তু.....
১০ জুন, ২০১৪।
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments