দেশে যে হিন্দি ভাষায় কথা বলাকে কথিত স্মার্ট বলা একটি বাজে প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এ কথা বহু আগেই আলোচনা করেছি। আমি ছোট মানুষ। আমার ছোট্র পরিসরে ভাষার রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনে ভিন্ন ভাষার গুরুত্ত্ব বোঝাতে অসংখ্য সতর্কতামূলক প্রবন্ধ লিখেছি। তর্ক করেছি, বিতর্ক করেছি। বলেছি হিন্দি চলচ্চিত্র, সিরিয়াল, গান, ভারতীয় চ্যানেল, ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশের সাংষ্কৃতিক স্বাতন্ত্রতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। আমার কথা কেউ আমলে নেয়নি। যারা নিয়েছে তাদের পরিমাণ কম। তবে সময়ের পরিক্রমায় ভাষার আগ্রাসনের এক নির্মম চিত্র আমরা দেখতে পেয়েছি বিবিসি হিন্দি চ্যানেলের কল্যাণে। একটি প্রজন্ম যখন নিজের ভাষা চর্চা বন্ধ করে দেবে তার পরজীবী হওয়ার শুরু সেখান থেকে।তাছাড়া ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি যে জাতির পূর্বপুরুষ রক্ত দিয়েছে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য সে জাতির উত্তরপুরুষের মধ্য থেকে কিছু বেহায়া উর্দুর জাত ভাই হিন্দি বলতে পেরে গেীরববোধ করছে সেটাই আমরা দেখলাম।ছি! এই আত্মমর্যাদাবোধহীন নষ্ট, এই দেশাত্মবোধহীন ভাষানষ্টাদের জন্য কি রক্ত দিয়েছিল আমাদের শহীদ রফিক, জব্বার, সালাম , বরকত, শফিউর প্রমুখ? একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে খালি পায়ে কালো ব্যাচ পরে দাঁড়িয়ে আমরা কি এই সম্মান জানাই এমন একটি একুশের চেতনাহীন অপপ্রজন্ম দেখার জন্য?
২
বলছিলাম ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে কিছু কথিত ইছমাট, ডিউড , ফ্রান্সদের কথা। ইউল্যাব নামের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিকড়হীন বেহায়া ছাত্রছাত্রী বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদকের সাথে হিন্দি ভাষায় কথা বলেছে। সাংবাদিকতার পরিভাষায় ভক্স পপ দিয়েছে।তাদের ভাষা ছিল একচ খাঁটি হিন্দি। বিবিসির ঐ প্রতিবেদকের চেয়ে ইউল্যাবের ঐ কোকিলের ডিমে তা দেয়া নির্লজ্জ, দেশাত্ববোধহীনরা সাবলীলভাবে হিন্দিতে কথা বলেছে। আমার ঘেন্না হচ্ছে ঐ বদমাশ প্রাণীগুলোরে দেখে। সোস্যাল মিডিয়ায়ও তীব্র সমালোচনা শুরু হবে নিশ্চয়ই। এরা নাকি সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। সাংষ্কৃতিক আগ্রাসন কিংবা হিজিমনি কিংবা মিডিয়া সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে এদের যে একচুল জ্ঞান নেই তা আর বলতে। এদের জন্য করুনা হয়। কতটুকু জাতীয়তাবোধহীন হলে একটি জাতির রক্ত দিয়ে অর্জিত ভাষা ফেলে অপেক্ষাকৃত কম সমৃদ্ধ একটি ভাষায় কথা বলতে পারে একটি প্রজন্ম? কষ্ট হলেও এরা প্রত্যেককে মানসিক ভারতীয় বলার যেীক্তিকতা পাওয়া যাবে। এদের দেহ ঢাকায় থাকলেও আত্মা পড়ে থাকে মুম্বাইয়ের বা কলকাতার কোন ফুটপাতে বেওয়ারিশ কুকুরের মত।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে , ঐ গুটিকয়েক জাতীয়তাবোধহীন কিছুতেই ইউল্যাবের সকল শিক্ষার্থীকে রিপ্রেজেন্ট করেনা। তাই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের উচিত এদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত করা। অথবা এরা যেন সমগ্র জাতির কাছে ক্ষমা চায় সে জন্য এদের চাপ প্রদান করা। সেই সাথে কোন শিক্ষক বাছাই করে হিন্দি বলতে পারা এই নির্লজ্জগুলোকে ক্যামেরার সামনে পাঠিয়েছে তাকেও জবাবদিহির আওতায় আনা। কারণ পুরো বাংলাদেশের মানুষকে এই গুটিকয়েক শিকড়হীন অসম্মান করেছে। তাদের দায়ভাব ইউ্ল্যাবের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নেবে কি? এখানে দেখুন ইউল্যাবের শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষুব্ধ কেউ কেউ কি বলছে ।(ইউল্যাবের হিন্দি পাগল নির্লজ্জদের উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া(ভিডিও)।)
৩।
৩।
একুশের চেতনাবিহীন ইউল্যাব ছাত্রছাত্রী বাংলা ছেড়ে কথা বলছে হিন্দিতে।ছবি/ইউটিউব |
বিবিসির ঐ সাংবাদিকের সঙ্গে ভক্স পপে কথা বলা ভিডিওটি থেকে কিছু বিষয় স্পষ্ট। আর তা হচ্ছে ঐ শিকড়হীন প্রজন্ম বাংলাদেশ,বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশকেন্দ্রিক জাতীয়তাবোধ সম্পর্ক পরিবার থেকে কোন শিক্ষা পায়নি। কারণ একাধিক মেয়ে তাদের বাসায় হিন্দি চ্যানেল নিয়মিত দেখা হয় বলে খুশিতে গদগদ করে স্বীকার করেছে। এমনকি তাদের “মা” গুলোও নাকি ঐসব হিন্দি চ্যানেল এবং সেগুলোর নোংরা, বস্তাপঁচা সিরিয়াল দেখে অভ্যস্ত। সেটিও বলছে প্রকাশ্যে।
এরা একবার ভাবলোনা এই কথাগুলো বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার হলে দেশ ও জাতির কতটুকু অমর্যাদা হবে। ঐসব বেহায়া দেশপ্রেমহীনদের সাবলীল হিন্দি বলা শুনেই সম্ভবত বিবিসির প্রতিবেদক অবাক হয়ে জানতে চায় কিভাবে তাদের এই হিন্দি বলা এতটা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব। তো, যাদের ঘরে মা-ই দেখে হিন্দি সিরিয়াল তাদের বাচ্চাকাচ্চা বাংলায় কথা বলবে এটা আশা করাও অবশ্য ভুল। মাতৃদোষে শিশু নষ্ট। আমাদের মায়েদের হিন্দিপ্রীতি কি দোষের কিছু নয়?আর বাবাগুলোও হিন্দি সিনেমাখোর। সন্তান তো শিকড়হীন আচরণ করিবেই। বাবা ব্যস্ত কাড়ি কাড়ি, বস্তা বস্তা টাকা কামাতে। সন্তানের সাংষ্কৃতিক গরিবী হাবভাব বরং তাকে গর্বিত করে। অথচ মজালুটা মেন্টালিটির কারণে এরাই পুরো সমাজ ও পরিবারে নিয়ে আসে রাজ্যের অশান্তি। অতিরিক্ত ভোগবাদী জীবন তারপর শর্টকাটে বেহেশতে যাওয়ার জন্য বদমাশ নিব্রাসীয় বর্বর পথে নিয়ে যায়। সাংষ্কৃতিক দীনতা কত ভয়াবহ জিনিস তা এ জাতির মাথাওয়ালারা কবে টের পাবে কেউ বলতে পারেন কি?
৪।
ভিডিওতে একজন বললো, তার পড়ার বিষয় মিডিয়া স্টাডিজ এবং জার্নালিজম। সম্ভবত অন্যরাও তাই। আমি লজ্জায় মরে যাই এরা জার্নালিজমে পড়ে ভেবে। এই দেশ ও জাতিকে কি আর দেবে? আর যে প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ইউল্যাব একটি বিদেশী চ্যানেলের কাছে Vox Pop দেয়ার সময় নিজের ভাষা ও সংষ্কৃতির গুরুত্ত্ব শেখাতে পারেনি সেটি কি দেবে এ জাতিকে? এরা তো একটি ভোগবাদী কর্পোরেট চাকর উৎপাদন ছাড়া আর কিছু করছেনা। দেশের রক্ত দিয়ে আনা ভাষায় বিবিসির সাথে কথা বললে কিছুই করার ছিলনা বিবিসির। বরং এটাই আশা করেছিল নিশ্চিত ঐ প্রতিবেদক যে সকলে বাংলায় আর তা না হলে ইংরেজিতে কথা বলবে। অথচ ঐ বেহায়াগুলোর একটিও আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলায় কথা বলেনি। প্রত্যেকটি ছেলে এবং মেয়ে দেশের প্রতি চরম নোংরা ব্যবহার করেছে। এরাই দেশদ্রোহী বদমাশ ভোগবাদী অপপ্রজন্ম।
এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা উচিত বিদেশে বাংলা ভাষাকে ছোট করে উপস্থাপনের দায়ে। আর এই দায় কিছুতেই ইউ্ল্যাব কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেনা। কারণ জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষকরা নিশ্চয়ই জানতো বিবিসির প্রতিবেদক হিন্দিতে ভক্স পপ নেবে বা নিতে চায় বা নিতে যাচ্ছে। তো শিক্ষকগুলো কেন এজেন্ডা সেট করে শিক্ষার্থীদের বাংলায় কথা বলতে শেখালোনা? বৃক্ষ তোমার নাম কি?ফলে যদি পরিচয় হয় তবে ঐ হিন্দি বলা ছ্যাভলা জেনারেশনের পিতামাতা এবং শিক্ষকরাই বৃক্ষ। এবং তারা আসলে একেকটা ধুতুরা বৃক্ষ। বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্ক। কলঙ্ক বাংলাদেশের জন্য।
ইউল্যাবের হিন্দি পাগল নির্লজ্জদের উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া(দ্বিতীয় ভিডিও)
এরা একবার ভাবলোনা এই কথাগুলো বিশ্বব্যাপী সম্প্রচার হলে দেশ ও জাতির কতটুকু অমর্যাদা হবে। ঐসব বেহায়া দেশপ্রেমহীনদের সাবলীল হিন্দি বলা শুনেই সম্ভবত বিবিসির প্রতিবেদক অবাক হয়ে জানতে চায় কিভাবে তাদের এই হিন্দি বলা এতটা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব। তো, যাদের ঘরে মা-ই দেখে হিন্দি সিরিয়াল তাদের বাচ্চাকাচ্চা বাংলায় কথা বলবে এটা আশা করাও অবশ্য ভুল। মাতৃদোষে শিশু নষ্ট। আমাদের মায়েদের হিন্দিপ্রীতি কি দোষের কিছু নয়?আর বাবাগুলোও হিন্দি সিনেমাখোর। সন্তান তো শিকড়হীন আচরণ করিবেই। বাবা ব্যস্ত কাড়ি কাড়ি, বস্তা বস্তা টাকা কামাতে। সন্তানের সাংষ্কৃতিক গরিবী হাবভাব বরং তাকে গর্বিত করে। অথচ মজালুটা মেন্টালিটির কারণে এরাই পুরো সমাজ ও পরিবারে নিয়ে আসে রাজ্যের অশান্তি। অতিরিক্ত ভোগবাদী জীবন তারপর শর্টকাটে বেহেশতে যাওয়ার জন্য বদমাশ নিব্রাসীয় বর্বর পথে নিয়ে যায়। সাংষ্কৃতিক দীনতা কত ভয়াবহ জিনিস তা এ জাতির মাথাওয়ালারা কবে টের পাবে কেউ বলতে পারেন কি?
৪।
ভিডিওতে একজন বললো, তার পড়ার বিষয় মিডিয়া স্টাডিজ এবং জার্নালিজম। সম্ভবত অন্যরাও তাই। আমি লজ্জায় মরে যাই এরা জার্নালিজমে পড়ে ভেবে। এই দেশ ও জাতিকে কি আর দেবে? আর যে প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ইউল্যাব একটি বিদেশী চ্যানেলের কাছে Vox Pop দেয়ার সময় নিজের ভাষা ও সংষ্কৃতির গুরুত্ত্ব শেখাতে পারেনি সেটি কি দেবে এ জাতিকে? এরা তো একটি ভোগবাদী কর্পোরেট চাকর উৎপাদন ছাড়া আর কিছু করছেনা। দেশের রক্ত দিয়ে আনা ভাষায় বিবিসির সাথে কথা বললে কিছুই করার ছিলনা বিবিসির। বরং এটাই আশা করেছিল নিশ্চিত ঐ প্রতিবেদক যে সকলে বাংলায় আর তা না হলে ইংরেজিতে কথা বলবে। অথচ ঐ বেহায়াগুলোর একটিও আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলায় কথা বলেনি। প্রত্যেকটি ছেলে এবং মেয়ে দেশের প্রতি চরম নোংরা ব্যবহার করেছে। এরাই দেশদ্রোহী বদমাশ ভোগবাদী অপপ্রজন্ম।
এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা উচিত বিদেশে বাংলা ভাষাকে ছোট করে উপস্থাপনের দায়ে। আর এই দায় কিছুতেই ইউ্ল্যাব কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেনা। কারণ জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষকরা নিশ্চয়ই জানতো বিবিসির প্রতিবেদক হিন্দিতে ভক্স পপ নেবে বা নিতে চায় বা নিতে যাচ্ছে। তো শিক্ষকগুলো কেন এজেন্ডা সেট করে শিক্ষার্থীদের বাংলায় কথা বলতে শেখালোনা? বৃক্ষ তোমার নাম কি?ফলে যদি পরিচয় হয় তবে ঐ হিন্দি বলা ছ্যাভলা জেনারেশনের পিতামাতা এবং শিক্ষকরাই বৃক্ষ। এবং তারা আসলে একেকটা ধুতুরা বৃক্ষ। বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্ক। কলঙ্ক বাংলাদেশের জন্য।
ইউল্যাবের হিন্দি পাগল নির্লজ্জদের উদ্দেশ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া(দ্বিতীয় ভিডিও)
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখলাম , আমাদের তথ্যমন্ত্রীও হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এটাও চরম হতাশাজনক কথা। দেশের কর্ণধাররা নিজের ভাষা ও সংষ্কৃতি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী আধিপত্যশীল ভাষায় কথা বললে আমরা যাবো কার কাছে?আপনি কোনদিন ভ্লাদিমির পুতিনকে রুশ ভাষা ছেড়ে কথা বলতে দেখেছেন?কোনদিন এঞ্জেলা মার্কেলকে জার্মান দেশে অন্য কোন ভাষায় বক্তব্য দিতে দেখেছেন?দেখেছেন নরেন্দ মোদিকে হিন্দিতে ছাড়া সাক্ষাৎকার দিতে?শুনেছেন কোনদিন ওবামাকে ইংরেজি ছাড়া কিছুতে কথা বলতে? অথচ তারা কেউ এমন কোন জাতির প্রতিনিধি না যারা নিজের মাতৃভাষা রক্ষায় জীবন দিয়েছে। আমরা সেই জাতি, অথচ আমরা যেন কেমন করি নিজেরে ঐতিহ্য নিয়ে।এটাই হীনমন্যতা। এটাই একটি জাতির পতনের মূল কারণ। এ থেকে বেরিয়ে আসা জরুরী। সত্যিই জরুরি।খুব বেশি জরুরি।
এরা কি জানে ১৯৫২? এরা কি চেনে সালাম আর জব্বারকে? এরা কি জানে বাংলা ভাষাকে মুখের ভাষা করতে রক্ত ঝরিয়েছিল বাঙালি একদিন? এরা কারা? এরা কি বাংলাদেশে বাস করে সন্তুুষ্ট নয়?ছবি/ইউটিউব |
৫।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে বিবিসি হিন্দিতে বাংলা বললে তা কিভাবে হিন্দিভাষীরা বুঝবে। এইটা কোন ব্যাপার না। বিশ্বের ২০ টি ভাষার অধিক ভাষায় ব্রিটিশ প্রোপাগান্ড মিডিয়া বিবিসি সম্প্রচার করে। তো আপনি বাংলা বললে ওরা ইংরেজি বা হিন্দিতে সাব টাইটেল দেবে।এবং এই সাব টাইটেল গ্লোবাল নিউজ মিডিয়ার একটি চমৎকার উপস্থাপন। এতে সংবাদের অথেনটিসিটি আরো বেড়ে যায়। সেই সাথে সাংবাদিকতার পেশাদারিত্ত্ব ও সামাজিক দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়। তাই বাংলা ভাষায় দেয়া বক্তব্যই ছিল সর্বোত্তম। এমন কি খোদ ভারতেও বাংলাভাষী রয়েছে ২০ কোটির উপরে। তাহলে কাদের জন্য কি উদ্দেশ্যে ঐ অসভ্যগুলো বাংলা ভাষায় মত প্রকাশ করলোনা? আমার এখন আব্দুল হাকিমের সেই বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ছে।
“যে স‘বে বঙ্গে জন্মি হিংসে বঙ্গবানী
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি ’
ইউ্ল্যাবের বাংলাদেশবিরোধী ঐ নষ্টনষ্টাভ্রষ্টভ্রষ্টাদের জন্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার মত অবস্থা কি তৈরি হয়েছে?
ইউল্যাবের হিন্দিতে কথা বলা শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া(তৃতীয় ভিডিও)
এখন প্রশ্ন আসতে পারে বিবিসি হিন্দিতে বাংলা বললে তা কিভাবে হিন্দিভাষীরা বুঝবে। এইটা কোন ব্যাপার না। বিশ্বের ২০ টি ভাষার অধিক ভাষায় ব্রিটিশ প্রোপাগান্ড মিডিয়া বিবিসি সম্প্রচার করে। তো আপনি বাংলা বললে ওরা ইংরেজি বা হিন্দিতে সাব টাইটেল দেবে।এবং এই সাব টাইটেল গ্লোবাল নিউজ মিডিয়ার একটি চমৎকার উপস্থাপন। এতে সংবাদের অথেনটিসিটি আরো বেড়ে যায়। সেই সাথে সাংবাদিকতার পেশাদারিত্ত্ব ও সামাজিক দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়। তাই বাংলা ভাষায় দেয়া বক্তব্যই ছিল সর্বোত্তম। এমন কি খোদ ভারতেও বাংলাভাষী রয়েছে ২০ কোটির উপরে। তাহলে কাদের জন্য কি উদ্দেশ্যে ঐ অসভ্যগুলো বাংলা ভাষায় মত প্রকাশ করলোনা? আমার এখন আব্দুল হাকিমের সেই বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ছে।
“যে স‘বে বঙ্গে জন্মি হিংসে বঙ্গবানী
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি ’
ইউ্ল্যাবের বাংলাদেশবিরোধী ঐ নষ্টনষ্টাভ্রষ্টভ্রষ্টাদের জন্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার মত অবস্থা কি তৈরি হয়েছে?
ইউল্যাবের হিন্দিতে কথা বলা শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া(তৃতীয় ভিডিও)
আমার কোন ভাষার প্রতি ক্ষোভ নেই। আমার ক্ষোভ আমার ভাষাকে অবজ্ঞা করে অন্য ভাষাকে আমারই দেশে মতপ্রকাশের প্রধান মাধ্যম করে নেয়ার কারণে। যদি কারো হিন্দি ভাল লাগে, হিন্দিতে কথা বলতে ভাল লাগে সে যেন ভারতীয় ভিসা সংগ্রহ করে সেদেশে চলে যায় যেভাবে উর্দুওয়ালাদের আমরা পাকিস্তানে পাঠিয়েছি। খাবি বাংলার আর গুণ গাবি হিন্দি তোতাপাখি হয়ে তা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশে হবেনা। আমরা বাংলা, বাঙালি ও বাঙলাদেশে বিশ্বাসী। এর প্রতি অবিশ্বাস থাকলে বিদেশের পথ মাপ। পরিষ্কার হিসাব।
৬।
৬।
ফিরে আসি সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনে। এ নিয়ে আমি বহু আলোচনা করেছি। এখন শুধু সংক্ষেপে প্রাসঙ্গিকতার কারণে কিছু কথা বলবো।একটি জাতি ও রাষ্ট্রের জ্বালানীর নাম সংষ্কৃতি। আর সংষ্কৃতির বাহন ভাষা। ভাষা ছাড়া সংষ্কৃতি টিকে থাকতে পারেনা। আর একটি দেশের সংষ্তৃতি টিকে না থাকলে সে জাতি আর টিকে থাকতে পারেনা। মানসিক হীনমন্যতায় সে অন্য সংষ্কৃতি গ্রহণ করে এবং এক সময় অন্য জাতির গর্ভে বিলীণ হয়। আধুনিককালে কেউ ট্যাংক আর গোলা বারুদ নিয়ে কোন দেশের উপর আধিপত্যবাদ স্থায়ী করতে পারেনা। এর জন্য সংষ্কৃতি হয় প্রধান অস্ত্র। প্রথমে সংষ্কৃতি দিয়ে ঐ জাতির তরুণ প্রজন্মের শক্ত জাতীয়তাবাদী অবস্থান নষ্ট করে দেয়া হয়। তারপর অন্য সংষ্কৃতি যখন স্থান পায় তখন আগের সবকিছু চলে যায়। ফলে নয়া সংষ্কৃতির দেশের প্রতি একটি মানসিক দাসত্ত্ব তৈরি হয়।
যখন হিন্দি ভাষা বাংলাদেশের তরুণ-তরুনীদের দ্বিতীয় প্রধান ভাষা হবে তখন তারা ভারতের সকল বিজ্ঞাপন বুঝতে পারবে। তখন ভারতের চ্যানেল ও হিন্দি চলচ্চিত্র হবে বিনোদনের খোরাক । আর এই খোরাকের মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক। যখন এই বেহায়াদের প্রিয় শাহরুখ খান, সানি লিওন প্রমুখ কোন পণ্যের বিজ্ঞপন দেবে তখন এরা সেই বিজ্ঞপনের পণ্য কিনতে আগ্রহী হবে।
প্রতি ঈদে পাখি ড্রেস বা কিরণমালার জনপ্রিয়তা যে দেশী বস্ত্রশিল্পের বারোটা বাজাচ্ছে তা এ ভোগবাদী প্রজন্ম খুঁজে দেখেবেনা। তো যা হোক ,এ বিষয়ে ইরানের বাংলা ভাষার সংবাদমাধ্যম রেডিও তেহরানে “সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনই ডেকে আনে অর্থনৈতিক আগ্রাসন” শীর্ষক একটি দীর্ঘ নিবন্ধে আমি বিস্তারিত লিখেছি(এখানে সে লেখা পড়তে পারেন সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনই ডেকে আনে অর্থনৈতিক আগ্রাসন)। এত কথার মূলকথা এই হিন্দি বলা প্রজন্ম বাংলাদেশের সাংষ্কৃতিক অস্তিত্ত্বকে হুমকির মুখে ফেলার আগে এদের ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ এবং আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশে হিন্দিকে গণমানুষের ভাষা হিসেবে দেখতে চায় ভারত। তাতে বাংলাদেশ সাংষ্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গুত্ত্ব বরণ করতে পারে। আর বাংলাদেশ পঙ্গু হলে আপনি সুস্থ থাকবেন তা ভাবছেন বুঝি? বাহ! কি নিদারূন ভাবনা আপনার ওগো “সংষ্কৃতির কোন দেশ নেই ,সীমান্ত নেই” বলে ঢোঁক গেলা বিরাট পন্ডিত!
যখন হিন্দি ভাষা বাংলাদেশের তরুণ-তরুনীদের দ্বিতীয় প্রধান ভাষা হবে তখন তারা ভারতের সকল বিজ্ঞাপন বুঝতে পারবে। তখন ভারতের চ্যানেল ও হিন্দি চলচ্চিত্র হবে বিনোদনের খোরাক । আর এই খোরাকের মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক। যখন এই বেহায়াদের প্রিয় শাহরুখ খান, সানি লিওন প্রমুখ কোন পণ্যের বিজ্ঞপন দেবে তখন এরা সেই বিজ্ঞপনের পণ্য কিনতে আগ্রহী হবে।
প্রতি ঈদে পাখি ড্রেস বা কিরণমালার জনপ্রিয়তা যে দেশী বস্ত্রশিল্পের বারোটা বাজাচ্ছে তা এ ভোগবাদী প্রজন্ম খুঁজে দেখেবেনা। তো যা হোক ,এ বিষয়ে ইরানের বাংলা ভাষার সংবাদমাধ্যম রেডিও তেহরানে “সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনই ডেকে আনে অর্থনৈতিক আগ্রাসন” শীর্ষক একটি দীর্ঘ নিবন্ধে আমি বিস্তারিত লিখেছি(এখানে সে লেখা পড়তে পারেন সাংষ্কৃতিক আগ্রাসনই ডেকে আনে অর্থনৈতিক আগ্রাসন)। এত কথার মূলকথা এই হিন্দি বলা প্রজন্ম বাংলাদেশের সাংষ্কৃতিক অস্তিত্ত্বকে হুমকির মুখে ফেলার আগে এদের ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ এবং আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশে হিন্দিকে গণমানুষের ভাষা হিসেবে দেখতে চায় ভারত। তাতে বাংলাদেশ সাংষ্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গুত্ত্ব বরণ করতে পারে। আর বাংলাদেশ পঙ্গু হলে আপনি সুস্থ থাকবেন তা ভাবছেন বুঝি? বাহ! কি নিদারূন ভাবনা আপনার ওগো “সংষ্কৃতির কোন দেশ নেই ,সীমান্ত নেই” বলে ঢোঁক গেলা বিরাট পন্ডিত!
ইউল্যাব শিক্ষার্থী বাংলা ছেড়ে কথা বলছে হিন্দিতে। ছি! এদের জন্য রক্ত দিয়েছিল আমার ভাইয়েরা? ছবি/ইউটিউব |
৭
এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের উপায় কি? উপায় অবশ্যই আছে। সবার আগে বাংলাদেশর শিক্ষা ব্যবস্থায় মাতৃভাষা চালু করতে হবে। পশ্চিম থেকে আসা কিছু পরজীবী সেবাদাসের কথামত বাংলা ভাষাকে উচ্চশিক্ষা থেকে দূরে সরানো যাবেনা। ভারতে বাংলাদেশের সকল চ্যানের প্রচার করার অনুমতি না দিলে বাংলাদেশেও ভারতের চ্যানেল বন্ধ করে দিতে হবে। যদি কার্টুন ডোরেমন শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হয় এবং তা বন্ধ করা যেতে পারে , তবে ঝগড়া,পরকীয়া, ব্যভিচার ও নোংরামী শেখানো স্টার প্লাস, স্টার জলসা , সেট ম্যাক্স কেন করা যাবেনা?যে প্রভাব বাচ্চার উপর পড়ে সেই সাংষ্কৃতিক প্রভাব বাচ্চার মায়ের বা বাবার উপর পড়বেনা? তা যদি পড়ে তবে রফিক-জব্বারের ভাষা আন্দোলনের সম্মান থাকে কি? তাহলে আর একটি প্রশ্ন। আজকে যারা নির্দ্বিধায় হিন্দিতে কথা বলবে তাদের সন্তানরা কোন ভাষায় কথা বলবে? তারা কি বাংলা ভাষা বলে কিছু আছে বলে বিশ্বাস করবে?
হিন্দিতে কথা বলা ইউল্যাব শিক্ষার্থী। ইনি কি জানেন “ ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রুগড়া এ ফেব্রুয়ারি”র মানে কি? |
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যারা কাজ করে এদের জাতীয়তাবোধের ঘাটতি রয়েছে। এরা মিডিয়ায় বলিউডের সংবাদ দিয়ে মনোজগতে ভারতের উপনিবেশ তৈরি করে।ভারতীয় মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণহীন প্রবেশ বাংলাদেশের নিজস্ব সংষ্কৃতিকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিলে তা বাংলাদেশর স্বাধীনতা ও সার্বভেীমত্ত্ব’র জন্যও হুমকি। কারণ আগেই বলেছি , সংষ্কৃতি একটি জাতির জ্বালানী শক্তি। জ্বালানী ফুরায়ে গেলে দেশের অগ্রগতি স্থবির হয়ে যাবে।
অতএব শিকড়হীনদের কবল থেকে বাংলাদেশের সংষ্কৃতিকে রক্ষার সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে কেবল একটি জাতি। সেই জাতির সন্তান হয়েও যে নির্লজ্জরা হিন্দি ভাষায় কথা বলে গেীরববোধ করে তারা বাংলাদেশে বসবাসের অযোগ্য নয় কি? যারা বাংলাদেশের ভাষা ও সংষ্কৃতি নিয়ে গর্ব করতে পারেনা, যারা বাংলাদেশর পণ্য ব্যবহার করেনা, যারা বাংলাদেশের কোন কিছুতে সন্তোষ প্রকাশ করেনা তারা বাংলাদেশের মাটিতে এক ঝাঁক নিকৃষ্ট পরগাছা। তারা ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার প্রতি সম্মান রাখেনা। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে যে ভাষায় কথা বলেছে মুক্তিযোদ্ধা, যে ভাষায় কথা বলেন সেতারা আর তারামন, যে ভাষা গ্রামের কৃষকের, যে ভাষা দেশপ্রেমিক তরুণের সেই ভাষায় যারা কথা বলতে দ্বিধা করে সেই নির্লজ্জ, আত্মকেন্দ্রিক, ভোগবাদী, বাজে প্রজন্মের শকুনদের কুনজর থেকে বাংলাদেশ এবং লাল-সবুজ পতাকাকে রক্ষার জন্য আপনি প্রস্তুত তো?
-আমি
মঈনুল রাকীব
শিক্ষার্থী ও মুক্ত সাংবাদিক
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ
মঈনুল রাকীব
শিক্ষার্থী ও মুক্ত সাংবাদিক
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ।