খুব গেীরবের সাথে বলি আমি ক্রিকেটার হতে চাইতাম । যেহেতু আমাদের সমাজে ক্রিকেট খেলা ভাল পারা ছেলেকে নিয়ে গৌরববোধ করার প্রবণতা তখনও (এখন একুট হয়েছে কি?) তৈরি হয়নি তাই মা-বাবাকে শতবার বলার পরেও আমার ক্রিকেটার হওয়া হয়নি । এদেশে ব্যাটে ছক্কা মারা, কিংবা লেগস্পিনে কুইকার দেয়ার চেয়ে ফাইভে , এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়ার সামাজিক মূল্যায়ণ বেশি হওয়ায় আমার ক্রিকেটার হয়ে ওঠা হয়নি । আমাকে বৃত্তি পেতে হয়েছিল । তবে টুকটাক খেলা চালিয়ে গিয়েছি লুকিয়ে, পালিয়ে । স্কুল, কলেজ ও সর্বশেষ ইউনিভার্সিটির বিভাগের টিমকে নেতৃত্ত্বও দিয়েছি । দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছি সাধ্যমত । এই ছবিটা আমার বন্ধু অভি তুলেছিল । আমার ভাল লাগে এই ছবিটা। যখনই খেলতে না পারার কষ্ট আসে বুকে তখন এরকম কিছু ছবি দেখি । কেন যেন মনে হয় খেলোয়ার হওয়ার কথা ছিল জীবনে...।
আমাদের সংকীর্ণ সামাজিক পরিবেশে ক্রিকেটার হতে চাওয়া আমার শৈশবের অপরাধ ছিল
। সেই অপরাধবোধে আনন্দের সাথে আমি এখনো ভুগি । আমি যখন বাংলাদেশের কট্রর
সমর্থক ছিলাম এবং যখন জাতীয় দলের ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম তখন বাংলাদেশ
ভারত ও পাকিস্তানের মেীলবাদী সমর্থকে ভরা। ৫ দিনের টেস্ট ২ দিনে ইনিংস
ব্যবধানে হারতো তখন ওরা । ওয়ানডেতে ২০০ খুব কমই হয়েছে । তখনও বিটিভির দিকে
চেয়ে থাকতাম ইশ যদি জিতে যায় ! যদি রফিক এসে একটা দুইটা ছক্কা মারে । যদি
হাবিবুল বাশারের ফিফটিটা আজ ১০০ হয়ে যায়, যদি আশরাফুল ফের ধুমসে পিটানো
শুরু করে । সমাজ বুঝতোনা ক্রিকেটের প্রতি এই ভালবাসা । পরিবারও বুঝতোনা,
যার ফলে ব্যাট-বল ফেলে আমার হাতে তারা তুলে দিয়েছিল কলম আর খাতা আর বস্তা
বস্তা বই । আমি তাদের আশা রেখেছি । কিন্তু আমার আশা কে রাখবে? কে আমার
ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ করবে???
0 Comments