ব্রিটিশ ও পশ্চিমা জাতিগোষ্ঠী কর্তৃক উদ্ভাবিত বিচার ব্যবস্থার মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে কি? বর্তমান টেকনোলজির যুগে এই পশ্চিমা আইনী কাঠামোর কিছু বিষয় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়া উচিত কি? এ নিয়ে কেউ কিছু ভাবছেনা। অপরাধ নিশ্চিত প্রমাণিত হয়ে যাওয়ার পরেও পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার বিচার ব্যবস্থায় ‘অপরাধীকে আইনী সহায়তা’ দেয়ার যে ধারণা প্রচলিত তা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী নয় কি?একটু স্পষ্ট করি প্রশ্নত্রয়। যখন শিশু রাজনকে পিচাশরা হত্যা করলো পিটিয়ে তখন জনগণের প্রবল প্রতিরোধে খুনীদের গ্রেফতার করা হলো। তো ভিডিওযে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, আসামীরা খুন করছে পিটিয়ে পিটিয়ে। সরাসরি প্রমাণিত। কোন দরকার নেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষি জোগাড় করে আসলে খুন করছে কি না তা প্রমাণের। নাকি? কিংবা খুনীর এটা বলার ‘আমি খুন করিনি’ও সুযোগ নেই। অর্থাৎ ভিডিওটি দেখেই খুনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় নাকি? যেমন, খাদিজাকে কোপানো। আদালত সন্দেহ হলে টেকনিশিয়ান ডেকে ঐ ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারে। কিন্তু আমরা দেখেছি, শুধুমাত্র অর্থের কারণে খুনীদের পাশে দাঁড়িয়েছে আইনজীবীরা।
এটা সম্ভব হয়েছে, প্রচলিত আইনী কাঠামোর কারণে যেখানে যেকোন অপরাধীকে সেল্প ডিফেন্সের নামে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়। এ বিষয়টি ঠিক কতটুকু ন্যায় বিচার আনছে? নিশ্চিত অপকর্ম করার পর পুলিশ ধরছে। যেমন, বগুড়ার তুফান গং। তারাও আইনী সহায়তা পাবে এবং দেখা যাবে তারা জাঁদরেল আইনজীবী নিয়োগ করে নিজেদের অপকর্মকে জাস্টিফাইড করছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংস্কার করা যেতে পারে। মানে, অপরাধ যখন নিশ্চিত প্রমাণিত তখন প্রচলিত আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়ার বিকল্প তৈরি করা যেতে পারে। এটা আসলে আমার মধ্যরাতের বিক্ষিপ্ত ভাবনা। আমার মনে হয়, আমাদের প্রাচ্যের বিচার ব্যবস্থা এমন ছিলনা। আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীর বিরুদ্ধে সাক্ষি আনা হতো, আলামত, প্রমাণ আনা হতো, সেটি দেখে ভুক্তভোগীর ক্ষতির পরিমাণের ভিত্তিতে শাস্তি দেয়া হতো।আক্রান্ত ব্যক্তি ক্ষমা করলে ক্ষমা পেয়ে যেত। সে কারণে ওকালতি নামের কোন পেশা আদি বাংলায় ছিলনা। এবং ওকালতি যখন আসে ব্রিটিশ আমলে এদেশে তখন একটি প্রবচন দাঁড়িয়ে যায়: যার নেই কোন গতি, সেই করে ওকালতি।আইন ও বিচারের প্রয়োজনে ওকালতি দরকার হতে পারে, ওকালতির প্রয়োজনে কখনোই আইন নয়।এই আইনী কাঠামো কিন্তু বঙ্গবন্ধু সংস্কার করতে চেয়েছিলেন। সে বিষয়ে অন্য কোনদিন আলাপ হবে।