জাবিতে উচ্চস্বরে পটকাবাজি:অথিতী পাখী উধাও
জাবি প্রতিবেদক,প্রাইমখবর
জাহাঙ্গীরনগর,সাভার,ঢাকা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)কিছুদিন থেকে স্বল্পপরিসরে আসতে শুরু করা শীতকালীন অতিথী পাখীরা হঠাত্ করে আজ সকাল থেকেই উধাও হয়ে গেছে।গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় খেলার মাঠে পটকা ও আতশবাজি ফোটানোর কারণেই এটা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গতকাল ১৩ নভেম্ভর মঙ্গলবার ছিল সনাতনধর্মাবলম্বীদের দীপাবলী ও কালিপূজা উত্সব।এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রদীপ জ্বালানো হয়।তবে সন্ধ্যার একটু পরেই কেন্দ্রিয় খেলার মাঠে অস্বাভাবিক উচ্চস্বরে পটকা ফোটানো হয়।অতিথী পাখি আসার কারণে যেখানে সমগ্র ক্যাম্পাসে শব্দহ্রাসে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে প্রশাসন সেখানে হঠাত্ করে একের পর এক পটকাবাজি হতবাক করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসা পাখীগুলো।
এই ঘটনার বিরূপ ও ভয়াবহ প্রভাব দেখা যায় আজ বুধবার সকাল থেকেই।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের পুকুর থেকে সব অতিথী পাখি উধাও হয়ে যায়।এমনকি পরিবহন চত্ত্বরের পাশের লেকও ছিল পাখিশূন্য।এ ঘটনা ক্যাম্পাসের সকল শ্রেণীর মানুষকে হতাশ,বাকরুদ্ধ ও ক্ষুব্ধ করেছে।
প্রায় তিন বছর পর এই বছর জাবি ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ অতিথী পাখীরা আসতে শুরু করে।এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমগ্র ক্যাম্পাস পাখীদেয় অভয়াশ্রম করতে অনেক আগে থেকেই প্রচারণা শুরু করে।বিভিন্ন স্থানে কর্তৃপক্ষ হর্ন বাজানো,বিচরণ এমনকি উচ্চস্বরে কথা বলা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছে।সমগ্র ক্যাম্পাসে তিন মাস পর্যন্ত পটকা ও আতশবাজি ফোটানোর উপর কড়া নিষেধাজ্ঞ জারি করা হয়েছে।এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সনাতনধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীর পটকা ও আতশবাজি ফুটিয়ে ক্যাম্পাসের পাখীদের স্বাভাবিক বিচরণকে অনিশ্চিত করে দিয়েছে।পাখীরা আসবে কী না সে বিষয়ে আবারো সৃষ্টি হয়েছে অনাকাঙ্খিত অনিশ্চয়তা।
এদিকে পাখী না দেখতে পেয়ে ছাত্র ও দর্শনার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪১তম ব্যাচের ছাত্র সাগর বলেন,এটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা।নিষেধাজ্ঞা সত্বেও যারা আতশবাজি ফুটিয়েছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।ফাহিম ফয়সাল নামের এক পাখীপ্রেমিক বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ তিন বছর পর এই বছর পাখী আসায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।কিন্তু পটকাবাজরা পাখীকে থাকতে দিলোনা।আবিদ হোসেন নামের একজন দর্শনার্থী বলেন,কালকেও লাল শাপলার আশেপাশে পাখি দেখলাম।আজ আর নেই।
এ বিষয়ে প্রক্টর সোহেল আহমেদ বলেন,'গতকাল পটকা ফোটানোর শব্দ আমরাও শুনেছি।পটকা ফোটানোর শব্দ উপাচার্যও শুনেছেন।'যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই ধরণের কাজ করেছে তারা বিবেকহীন অসচেতনদের মত কাজ করেছে বলে মত দেন প্রক্টর।'ঘটনার পরপরই প্রক্টোরিয়াল বডি সেখানে যায়।উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ঘটনা অস্বীকার করে।তখন মাঠে থাকা টোকাইরা পটকা ফোটানোর ব্যাপারটা প্রকাশ করে দেয়'বলেন প্রক্টর সোহেল আহমেদ।এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন,উপাচার্য মহোদয় নিজে ঘটনায় হতবাক।আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআইআর
0 Comments