...........................................
যে চোখে আঘাত করে দুর্ভেদ্য হৃদয়দুর্গে সে চোখ অমানবিক,
স্পষ্ট করে বললে সে চোখ অপার্থিব;সে চোখ সুমিষ্ট নীলবিষ নির্গমনকারী;প্রলয়ঙ্কারী;ঈশ্বরের স্বহস্তে প্রতিস্থাপিত-
সৃষ্টির সর্বনাশ ঘটাতে;অথবা কিঞ্চিত যে চোখের দৃষ্টিতে নিঃসঙ্গ মানব পৃথিবীর সব সঙ্গসুখ লাভ করে
সেই চোখ যে চোখ আঘাত করে দুর্ভেদ্য হৃদয়মূলে
'আপনি' না 'তুমি'!সংশয়ী করে কৈশোর পেরোনো নয়া যুবককে ।
সেই চোখ যে চোখে প্রতিনিয়ত বিস্ফোরণ হয়,
ধ্বংসাত্মক মায়ার তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশে
ধ্বসে যায় ব্যক্তি,স্বত্ত্বা,পশুত্ত্ব,মানবিকতা
তার দৃষ্টিসীমায় এলে পম্পেইয়ের মত হৃদয়নগর পুড়ে মিশে যায় জীবন নিয়ে
মৃত আত্মারা ছটফট করে,তবু মায়া কাটেনা
তীব্র আকর্ষণ মুগ্ধতায় আত্মহননের দিকে ধাবিত করে ঝাঁকঝাঁক আমিকে।
সেই চোখ নীল;বাঙলার আবহাওয়ায় ফ্রেয়ার আগমনী বীণ,
অনার্যের বুক চীরে তীর্যক নেত্রফলা হৃত্পিন্ড ফেঁড়ে বেরিয়ে যায় শেষ করে দিয়ে
শেষনিঃশ্বাসের ঠিক পূর্বমুহূর্তে সে চোখে তাকালে
বাঁচতে ইচ্ছে করে সে চোখের অধিকারিনীর সাথে;হাত ধরে,গাল ছুঁয়ে শতকের পর শতক জীবনে বা মরণে।
সেই চোখ বিভত্স অনুরণন,ভয়ঙ্কর ভালবাসার অদ্বিতীয় উত্স
অজস্র আকর্ষণের নির্মম কেন্দ্রবিন্দু,স্বীকার করি সেই চোখ শিকারী
যো আমি তীব্র অহংকারী,দাম্ভিক একাকীত্ত্বে খুব বিশ্বাসী
সেও সেই চোখ ছায়াপথ দুটির নেশার পাল্লায় পড়েছি
এখন আমি দেখি তার চোখ জুড়ে কখনো জান্নাতুল আদন কখনো বা ফিরদৌসের আভা
এখন আমি তার অনুসারী,তার চোখপাগল,সে আমার কাবা
আমি তার নীলচোখে বিশ্বাসী,সে নির্গত চক্ষুশক্তির উন্মাদ-সে আমারা আরাধ্য পরিসেবা।
সেই চোখ ফুটে থাকে বেশিফুলের মত নিষ্পাপ বেশে,
নিঃপলক প্রেমের বিকিরণে আহত আমার অবহেলিত যৌবন,ছুটন্ত কৈশর,ভাবুক বার্ধক্য
এখন আমি কখনো শঙ্কিত তার চোখ নিয়ে
স্বর্গের সুবাসে তার এক চোখ মনে হয় জাহিম
দগ্ধ করে আমাকে বারবার পুড়িয়ে;শরীরে না ছুঁয়েই তার চোখ উত্তাপ ছড়ায় সাকারের
আমি নির্বাহ হয়ে যাই;আমি নেত্রমুগ্ধ;আমি যেন দুষ্প্রাপ্য এক বিচ্ছুরণ প্রদীপ পেয়েছি
জ্বলে জ্বলে মধুর বেদনায় সিক্ত হয়ে ঘনঘন তার চোখ দেখি
সে আমার স্পর্শবিহীন জীবনের মেলেনা;অনরাগ,কল্পবিলাস,প্রবল উত্তেজনা।
সে মেয়ে আমার একমাত্র কাব্য,এই যে কত শত কবিতায় নীলনারী
কিংবা মায়ার পুতুল,কখনো পুষ্পমানবী হয়ে সে আসে নিউরনে
তারপর পাখা মেলে দেয় আবেশের ভেনাসের চোখে,সে আমার জীবনবোধের চেতনা তুলে দেয়
তারপর অজানার ঈশারায় সে সর্বগ্রাসী মানবরতি হয়
অর্চনা করি,সে আমার দেবি,পাওয়া বা হারানো দুটোতেই ভীষণ ভয়।
তার সে চোখ হত্যাকারী,নাগাসাকি ও হিরোশিমার মত ধ্বংস করে জীবনপ্রবাহ
বাঁকা বা সোজা,আড়চোখে,জ্যামিতিক বা আপেক্ষিক যেভাবেই সে তাকাক
তা প্রকম্পন তৈরি করে;টেনে নিয়ে আসে ভাবনায় মাংশল গাল দুটো তৃষ্ণার্ত ঠোঁটের কাছে
তার চোখের জ্বালাতনের প্রতিশোধ নিতে স্পর্শের প্লাবনে ভাসিয়ে দিই,
চেয়ে দেখি কাছ থেকে চোখের ভেতর,কি দুষ্প্রাপ্য!মহাজগতিক মোহাচ্ছন্নে মিশে যাই তার প্রতিটি কণায়
সে আমার দূর্লভ প্রেম,বয়সী কিশোরী,বেঁচে থাকি জ্বালায়।
তার চোখ আমার কাছে বাব আল জান্নাহ,বেহেশতার প্রবেশদ্বার
সে আমার সভ্যতা,সংষ্কৃতি,আমার উত্তরাধুনিক আলোচনা
কেবল তার চোখ দুটির জন্য,যে চোখ আমাকে নিয়ে গেছে তার তিলদর্শনে,তার হাসির বন্যায়
যে চোখ তাড়িয়ে আমাকে তার কাছে এনে ফেলেছে
বেঁচে থাকি সেই চোখে,মরে যাই সেই চোখে,ভালবাসি সেই দুঃস্বপ্নীল দুই চোখ
পাতা বুজে যাওয়া চোখজোড়ায় চুমু খাই,
প্রার্থনা চিরকাল আমার এ চোখ মিশে হোক হোক সেই চোখ
এই চাই,এই চাই,এই চাই-এই আমার ঝোঁক,ও আমার নীল, দিওনাকো শোক।
8.06.2014
8.06.2014
0 Comments