সর্বশেষ

জাবির ৩৭ তম আবর্তনের র‌্যাগ উত্‍সবের প্রথম সন্ধ্যা ও কিছু কথা

১.
প্রায় দুই ঘন্টা দেরিতে শুরু হলেও ৩৭ তম আবর্তনের চারদিনব্যাপী র্যাগ উত্‍সবের প্রথম দিন বেশ সফল।৩৭ এর কবিতা এবং মজনু ভাইয়ের নাটিকাটি ছিল অসাধারণ।
বিশেষ করে নাটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের তেলবাজি,তেলবাজির সঙ্গে নম্বর প্রাপ্তির সুসম্পর্ক, বটতলার বিল পরিশোধের সময় প্রেমিকার নিরবতাকে চোখে আঙুল দিয়ে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।মুক্তমঞ্চের দর্শকরা যেন চোখের সামনে এসব নির্মম বাস্তবতা দেখছিল,করতালি দিয়ে উত্‍সাহ দেওয়া তার প্রমাণ।
সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটায় র্যাগ রাজা অভি ভাইয়ের উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল এবং দর্শকদের তিনি একাই মাতিয়ে রেখেছেন।অপ্রিয় হলেও অভি ভাইয়ের পাশের জনৈকা উপস্থাপিকার প্রতি সম্মান রেখে বলছি,মুক্তমঞ্চের অনেক অনুষ্ঠান আপনার উপস্থাপনায় ভাল হয়েছে,আজ হয়নি ।আজকে একদম বাজে হয়েছে বলছিনা,কন্ঠের কাঠিন্য ও শব্দের অতিরঞ্জন বিরক্তির উদ্রেক করেছে।তবে অভি ভাইয়ের সরব ও প্রাঞ্জল উপস্থাপনা সেই ক্ষতি পুষিয়েছে।
পুরো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গানে নাচার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ।এক আপু সত্যি অস্বাভাবিক সুন্দর নেচেছে ও অভিনয় করেছে।
আগামী ২৭ তারিখ শাফিন এসে কাপাঁবে এই আশায় এই আয়োজনের জন্য ৩৭ তম আবর্তনের ভাই ও আপুদের ধন্যবাদ ।
অজস্র ধন্যবাদ আয়াজ ভাই,ইসহাক ভাই,দৃষ্টি আপু,এশা আপু প্রমুখসহ ৩৭ এর সকল ভাইকে।
***
কিছু অসঙ্গতি যা আশা করিনি
.....................
৩৭ তম আবর্তন মানে সোজা কথা ক্যাম্পাসের আকর্ষণ।তাদের অনুষ্ঠান হবে সবচেয়ে মানসম্মত।মুক্তমঞ্চে উপচেপড়া দর্শক এসেছিল তাই আজ।অথচ কার্যত আজ অনেকটা হতাশা ও কিছু ক্ষেত্রে বিরক্তি নিয়ে ফিরে গেছে দর্শকরা।কিন্তু কেন?আমার চোখে পড়া কিছু অসঙ্গতি এর কারণ হতে পারে।
১।কেন দুই থেকে আড়াই ঘন্টা দর্শকদের অনুষ্ঠানবিহীন মঞ্চের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে?উপাচার্য কাজে ব্যস্ত থাকলে তাঁর মৌখিক অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা যেতো।তারপর তিনি এলেই মঞ্চে উঠতেন,এতে অহেতুক দর্শকদের হয়রান করা লাগতোনা।
২।এত বড় একটা প্রোগ্রাম অথচ অনুষ্ঠানের জন্য উপস্থাপক ও উপস্থাপিকাকে আগে থেকেই প্রস্তুত করা হয়নি।একজন ঢাকা থেকে এসে Programme chronology না জেনেই উপস্থাপনা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।আরেকজন Rag king ।রাজা কেন উপস্থাপনায় আসবে এটাই বুঝলাম না।বড় ভাইদের মধ্যে কি আর কেউ ছিলনা?রাজার আভিজাত্য কি থাকা উচিত না?
৩। রনি ভাইয়ের একটি চমত্‍কার নাচের মধ্যে কেন মঞ্চের লাইট মঞ্চের নিচে এলো?মূলমঞ্চে একজন Perform করছে,সেটা নাচ এবং সেটা থেকে দৃষ্টি কেন সরিয়ে মঞ্চের নিচে নেওয়া হলো?যারা নিচে নেচেছে তারা আরেকটু সচেতন হলে উপরের মঞ্চের শিল্পীদের পরিশ্রমটা স্বার্থক হতো
৪।মঞ্চের যিনি লাইটের দায়িত্বে ছিলেন আজকের অনুষ্ঠানের যতটুকু অসাফল্য তার আট আনা এই ব্যক্তির উপর পড়ে।কি অদ্ভুত কথা,অনুষ্ঠানের কোন একটা সেগমেন্টে সঠিকভাবে আলো ফেলতে পারেনি ।এমনকি মঞ্চ থেকে চিল্লিয়ে বলছে অভিনেতারা,আলো কই?তারপর এসেছে আলো এবং হঠাত্‍ করে আলো নিভিয়ে না দিয়ে আবছা আলোও দেয়া যেতো যেটা দেওয়া হয়নি।
৫।পুরো অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় বড় ভাইদের পরিকল্পনাটা হয়তো সময়ের হেরফের হওয়ায় এলোমেলো হয়েছে।তবে উপস্থাপকদ্বয় ও যাদুকরের সঙ্গের দুজন তাদের কথা হ্রাস করলে হয়তো সাড়ে ১১ টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হতে পারতো ।
৬।মূল মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে গানের সময় নাচবে বড় ভাইয়েরা এটা স্বাভাবিক।তবে মঞ্চের উপরের বিভিন্ন জায়গায় এত লোকের অবস্থান মঞ্চের সৌন্দর্যকে নষ্ট করেছে।
৭।সমাজ অকল্যাণমন্ত্রী বিষয়ক নাটীকাটি ছিল দুঃখজনক।একটি ফান ম্যাগাজিন থেকে কাহিনী নিয়েও সংলাপ মনে ছিলনা অভিনেতার,দর্শকদের বোকা ভেবেছেন হয়তো তারা।হাস্যকর।
প্রিয় বড় ভাইয়েরা।আমরা জানি আপনাদের ব্যাচ সৃজনশীলদের মিলনমেলা।সেই আপনাদের কাছ থেকে এটি আশা করিনি।
আগামী ৩ দিনের অনুষ্ঠান হবে প্রাণকাড়া ও অভূতপূর্ব সুন্দর এই প্রত্যাশায় সাঁইত্রিশের র্যাগ উত্‍সবের সাফল্যের জন্য আবারো আন্তরিক শুভ কামনা রইলো।

২৬.০৯.২০১৪
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments