সর্বশেষ

কাসেম বিন আবুবাকার, সেক্যুলার ক্রন্দন ও সাহিত্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি





এই দেশের এই কালের কোন হম্বিতম্বি করা সাহিত্যিক নাই যার বিষয়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ফরাসী সংবাদ সংস্থা AFP সংবাদ করেছে। ব্যতিক্রম এই কাসেম বিন আবুবাকার। ব্রিটেনের প্রভাবশালী Daily mail তাঁকে নিয়ে স্টোরি কাভার করেছে। আরব বিশ্বের প্রভাবশালী Arabnews এবং পাকিস্তানী Dawn, এমন কি ভারতের এশিয়ান এইজেও কাসেমেরসরব বিচরণ! গতকাল ২৬ এপ্রিল এই তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। এই ঘটনা দেশের সেক্যুলার সাহিত্যাঙ্গনকে বড়সড় একটা ঝাঁকি দিয়েছে। ইজ্জত যায় যায় সেক্যুলার সাহিত্যিকদের! না আনিসুল, না ইমদাদুল, না হেলাল হাফিজ, না আল মাহমুদ, না গুণ, না জাফর ইকবাল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জায়গা পেলো! কোথাকার কোন কাসেম বিন আবুবাকার! মাথায় টুপি পর, পাঞ্জাবী পরা গ্লামারহীন এক বুড়ো লেখক! কোথাকার কোন 'ফুটন্ত গোলাপ'! যারে নিয়ে প্রথম আলেঅ কোন স্পেশাল কাভারেজ করেনি, যারে কোন কালে গুটিকয়েক সেক্যুলারদের দখলে থাকা সাহিত্য সম্মেলনে ডাকা হয়নি কোন পুরস্কার দেয়া হয়নি। শেষে কি না বাংলাদেশের সাহিত্যের প্রতিনিধি হলো এই কাসেম বিন আবুবাকার!  হে প্রকৃতি এও দেখতে হলো? সেক্যুলাররা এক যোগে কলিকাতারভাশায় কচ্চে, ছ্যাঁ ছ্যাঁ! আজ্ঞে, বঙ্গ সাহিত্যের জাত বুঝি গেলো! কোতায় যাই, কার কাচে কতা বোলি গো! মরিয়া যাচি্‌চ হায় হায় রে!’(ইভটিজিং নিয়ে এই প্রথম ছোটদের ৫ মিনিটের শর্টফিল্ম দেখতে ক্লিক করুন: অসাধারণ)

আমার মতে, কাসেম বিন আবুবাকারকে পশ্চিমা গণমাধ্যমে হঠাত্নিয়ে আসাটা এতোটা সহজ ব্যাপার নয়। এর পিছনে সুদূরপ্রসারী পশ্চিমা এজেন্ডা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কাসেম বিন আবুবাকারকে খুঁজে বের করে এভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলা সাহিত্যের প্রতিনিধি করলে তার ভূরাজনৈতিক গুরুত্ত্ব আলোচনায় আনা যেতে পারে। তাহলে কি কারণে সাম্রাজ্যবাদী ফ্রান্সের News Agency (AFP) তে কাসেম বিন আবুবাকার এলো? তিনটি কারণে। এগুলো হলো:

১। বাংলাদেশের মানুষের মনস্তত্ত্বকে বৈশ্বিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে নিয়ে আসা এতদিন বাংলাদেশ পশ্চিমের কাছে একটি মডারেট মুসলিম ভাবমূর্তির দেশ ছিল। পশ্চিমা মিডিয়া এই ভাবমূর্তিকে ডিকনস্ট্রাক্ট করে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে কট্রর ইসলামী মূল্যবোধস্পন্ন প্রমাণ করতে চায়। এর সাহিত্যিক সংস্করণ কাসেম বিন আবুবাকারের জনপ্রিয়তা। এর দ্বারা বোঝাতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিমা স্টাইলের জীবনযাত্রা রোমান্টিকতাকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরেছে। সে কারণে বাংলাদেশ ‘ সন্ত্রাসবাদের প্রসারণের জন্য উপযুক্ত’ স্থান হতে পারে। তাই বাংলাদেশকে War on Terror প্রকল্পে আনতে হবে। 
অথচ কাসেমের উপন্যাসে এদেশের নিম্নবিত্তের উঠে আসার কথা ওরা বলেনি, বলবেনা। ইসলাম যে  সাংস্কৃতিক জীবনযাত্রাকেও ধারণ করে, মুসলমানরাও যে সাহিত্য করে, তারাও যে ভালবাসে, চুমু খায়, প্রেম করে, ছ্যাকা খায়, বিচ্ছেদের গান গায় সেই কথা পশ্চিম স্বীকার করেনা। তাদের মানসিকতা শার্লি হেবদোর মতোই যে, ‘মুসলমানরা বেরসিক’, তারা উপন্যাস লেখেও না, পড়েও না। কি অস্বচ্ছ ধারনা তাদের একটি জাতির ব্যাপারে!










২। কাসেম বিন আবুবাকারকে স্পেশাল কাভারেজ দেয়ার কারণ হতে পারে বাংলাদেশের সাহিত্যের ধারাবাহিকতার একটি উপস্থাপন দেখাতে। (কাব্যনাট্য দেখতে চান?এখানে দেখুন) সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাসেম বিন আবুবাকারের অন্যতম পাঠক শ্রেণী হেফাজতে ইসলামের সাথে বৈঠক করেছেন। কওমী মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তর সমমানের ঘোষণা দিয়েছেন। এটি বাংলাদেশে সংখ্যায় হাতেগোনা সেক্যুলার গোষ্ঠী ভাল চোখে দেখেনি। তারা দেশেইসলামীকরণ’ হচ্ছে এই মিথ্যাচার প্রচার করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর অযৌক্তিক নিন্দা করে চলেছে। এতে প্রভাবিত হতে পারেন AFP এর সংবাদদাতা। তিনি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যে গুটিকয়েকের ওয়েস্টার্ন সেক্যুলারদের বয়ান খায়না সেটি দেখাতে সাহিত্যকে বেছে নিয়েছেন। দেখেন, অখ্যাত কাসেম বিন আবুবাকারের বই যেখানে বিক্রি হয় লাখ কপি সেখানে সেক্যুলার লেখকেরা সর্বসাকুল্যে বই ছাপায় ৩০০ কপি থেকে গড় সর্বোচ্চ ১০০০ কপি। এই জন্য পশ্চিমা গণমাধ্যম অহেতুক পাণ্ডিত্য জাহির করা সেক্যুলার সাহিত্যিকদের গণবিচ্ছেদকে দেখাতে কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করে। পশ্চিমা Propaganda এর জালে পা দিয়ে নির্বোধ অহংকারী সেক্যুলাররা নিজেদের সাহিত্যিক মানের সাথে কাসেমের সাহিত্যের যাচাই শুরু করে দেয়। কি দুঃখজনক হাস্যকর প্রতিক্রিয়াশীল প্রগতিশীলতা ধারন করে বাংলাদেশের সেক্যুলার সাহিত্যিক, তাত্ত্বিক, সাংবাদিক এক্টিভিস্ট!

৩। তৃতীয় কারণ কাসেম বিন আবুবাকারের সংবাদ মূল্য (News Value) (বাংলাদেশের সর্বকালের সকল প্রশ্ন ফাঁস ও সমাধান দেখুন এখানে) আমরা পশ্চিমা শিক্ষা নেয়া কথিত শিক্ষার্থীরা কাসেমকে স্বীকার করি আর না করি তাতে কাসেমের সাহিত্যমূল্য শেষ হয়না। কাসেম দেশের সাম্প্রতিক ফেনোমেনা নয়। তাঁর লেখালেখি ১৯৭০ সালের থেকে। সে নিম্নবিত্তের লেখক। মূলধারার পশ্চিমা ধাঁচের লেখকরা যেখানে ৩০০ বা ৪০০ কপি বই ছাপিয়ে শখানেক বিক্রির অভাবে বই বাড়ি নিয়ে আসেন তখন কাসেমের বই সংস্করণের পর সংস্করণ চলতে থাকে। বিক্রি হয় লাখ লাখ কপি। কারণ কাসেম বাঙালি মুসলমানের লেখক। তার লেখা পশ্চিম বা কলকাতার অনুকরণে নয়। তাঁর কাহিনী বাংলাদেশের, তাঁর চরিত্র বাংলাদেশের, তাঁর চরিত্রের ধর্ম বাঙালির, তাঁর শব্দ এই মাটির, তাঁর বর্ণনা আমাদের চারপাশ। সুতরাং সেক্যুলার পশ্চিমখোরদের ছুড়ে ফেলে বাঙালি মুসলমান নিরবে বেছে নিয়েছে কাসেম বিন আবুবাকারকে। এটিই তাঁকে সংবাদমূল্য দিয়েছে। উপরের ১ ও ২ এ দুটি কারণ আমার অনুমিত। কিন্তু এই ৩ নম্বর কারণটি একটি Evidence এবং আমার মনে হয় কাসেম বিন আবুবাকার আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন। অন্ততপক্ষে ধণাঢ্য আরব দেশের থেকে ঘোষিত হতে পারে। নিঃসন্দেহে কাসেমের লেখার মান বিষয়ে যতোটা না বই না পড়া সেক্যুলাররা অপপ্রচার করছে তার চেয়ে অনেক উন্নত যুগোপযোগী। কাসেম তাই দেশের একচোখা গণমাধ্যমকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে বিদেশে জ্বলজ্জল করছে। আর দেশে জ্বলেপুড়ে মরছে বাঙালি বিরোধী ইউটোপিয়ান সেক্যুলারপাল।

কাসেম বিন আবুবাকারে আঁতে যাদের ঘাঁ লেগেছে

এই ঘাঁ লেগেছে যাদের তারা দেশের সাহিত্যাঙ্গনকে পশ্চিমের দাস যারা বানিয়েছিল তাদের পাঠক ভক্ত। এই দলে আছে পশ্চিমাকরণ প্রকল্প Modernism কে যারা Communism হিসেবে গুলিয়ে ফেলেছে সেই পুঁজিবাদী কমরেডপালও। কাসেমের দোষ কি তাদের কাছে? (Click Here to WATCH বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফুলকুচি দিয়ে মাছ কোপানো| | কোচ দিয়ে মাছ ধরা |)

ক) প্রথম দোষ, সমালোচকরা কাসেম বিন আবুবাকারের লেখা এরা পড়েনি আচ্ছা, একজন লেখকের লেখা আপনি পড়েননি এই দোষ লেখকের হবে কেন? এটা তো পাঠকের সীমাবদ্ধতা।'ভাল লিখলে পরিচিত আসতো। পড়তাম।'এই বাজে কথা বলে এরা না পড়ে সমালোচনা করার নোংরা প্রবণতাকে জাস্টিফাইড করে। এদের জ্ঞান তো পশ্চিমা প্রভুরা ঠিক করে দেয়। তাই নোবেল প্রাপ্তির আগে মার্কেজ থেকে রবী ঠাকুর যে সকলের পাঠ্য হয়নি এই সত্য এরা ভুলে যায়। এমন কি হুমায়ূন আজাদ বা আহমদ শরীফও অনেকে পড়েনি এবং তাদের না পড়ার কুযুক্তিতে এরা যাচ্ছেতাই মানের লেখক হয়ে যায়। সত্যি বলতে, সেক্যুলার পশ্চিম এবং ভারতীয় বলয়ের মিডিয়ার সমর্থন ছাড়াই কাসেম বিন আবু বাকার যেভাবে সেক্যুলার সাহিত্যিকদের পরাজিত করেছে (গুণে, মানে, কাহিনীতে, চরিত্রে এবং ব্যবসায়) সেই চপেটাঘাত সহজে হজম করতে পারছেনা এরা। ব্যাপারনা, ২০১৮ এর বই মেলায় সর্বাধিক বিক্রিত বই হওয়ার পর কাসেমের পিছনে মিডিয়ার দৌড়ঝাঁপ দেখার অপেক্ষায় থাকেন। কাসেম আসছে ফুটন্ত গোলাপ হাতে... 
খ) কাসেম বিন আবু বাকারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিযোগ, তাঁর লেখায় যৌনতা রয়েছে এটাকে কোন কোন গোঁয়ার গোবিন্দ আবার 'চোরা যৌনতা' বলে। আচ্ছা, যৌনতা থাকলে সমস্যা কোথায়? সাহিত্যে যৌনতা নাই এমন কোন সাহিত্যিক আছে দুনিয়ায়? নাকি সাহিত্যে যৌনতা আনার একচেটিয়ে অধিকার হুমায়ূন আজাদ, আহমদ ছফা, তসলিমা নাসরিন, আল মাহমুদ আর সৈয়দ শামসুল হকের? আবুবাকার কিংবা তার পাঠকদের কি জৈবিক চাহিদা নাই? তাদের রুচির বাইরে গিয়ে কেন হুমায়ূন আজাদের 'সব কিছু ভেঙে পড়ে' পড়ে তাদের সাহিত্যিক জৈব কামনা মেটাতে হবে? কেন বাকারের 'ফুটন্ত গোলাপ' বা মিতুলের 'বোরখা পরা সেই মেয়েটি' পরে তারা জৈবতৃপ্তি নেবেনা? এই অযৌক্তিক জ্ঞান সমালোচনার নির্বুদ্ধিতাই এদেশের সেক্যুলারদের সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতাড়িত করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন লেখেন ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি’ তখন কি চুপা যেীনতা না চোরা যেীনতা হয় , হে কাসেমকে কটাক্ষকারী? ’আহমদ ছফার 'অর্ধেক মানবী অর্ধেক ঈশ্বরী' কিংবা নির্মলেন্দু গুণের রসালো কাব্য, হুমায়ূন আহমেদের চুপা যৌনাবেদন এবং তসলিমার প্রকাশ্য শোয়াশুয়িতা যদি সাহিত্য হয় তবে কাসেম বিন আবু বাকারের সাহিত্যে বাসর রাতের কথপোকথন কিংবা প্রেমিক প্রেমিকার চুম্বণ আলিঙ্গনে সমস্যা কোথায়?(CLICK HERE TO WATCH বিষের জ্বালায় কাতর আঁখি আলমগীর)

আমি ভাবতাম, সেক্যুলার পশ্চিমা সংস্কৃতির ধারকরা যৌন স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এখন মনে হচ্ছে, এরা নিজেদের অবাধ যৌনতা ছাড়া আর কারো যৌনতাকেও সহ্য করেনা। পশ্চিম পূজারি আজাদ বর্গীয় শব্দ দিয়ে চটি লিখলে তা সাহিত্যিক মর্যাদা পাবে, কিন্তু কাসেম বিন আবু বাকার সাহিত্যে যৌনতা আনলে তা চটি হবে, এই যদি হয় সাহিত্য সমালোচনার অবস্থান তবে তো সাহিত্য কাসেমরা দখল করবেই। এই স্যেকুলার বলয় এতই ঠুনকো যে মিডিয়ার সহায়তা ছাড়াই কাসেম একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। সেখানে গিয়ে পশ্চিমা স্যেকুলারগিরি চলেনা। সেটি প্রাচ্যের সাহিত্যসাম্রাজ্য।

গ) কাসেম বিন আবু বকরের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ, তাঁর লেখার সাহিত্য মান নাই এই অভিযোগটার ভিত্তি নাই। কারণ সাহিত্যমান নির্ধারণের ঠিকাদারী কাউকে দেয়া হয়নি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার এত দিন এই ঠিকাদারী ভোগ করে আসছিল স্যেকুলার সাহিত্যিক, বুর্জোয়া মিডিয়া এবং পুরস্কার দেয়া সংগঠন। আর একে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতো পাঠ্যপুস্তক। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে, সাহিত্যে পাঠক একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার পাঠক যত বেশি তত বেশি আপনি পৌঁছালেন। আপনার লেখা প্রাঞ্জল হলেই তা পাঠক পড়বে। কাসেম বিন আবু বাকার এই মাটির সেই অংশের জীবনধারা, প্রেম, পরিণয়, পরিণতি, দ্বন্দ্ব, হাসি, গান ভালবাসা তুলে ধরেছেন যে অংশকে এত দিন ধরে মূলধারা অবহেলা বঞ্চনার মধ্যে রেখেছে। (সেন্টমার্টিন দ্বীপের মিডিয়ায় না আসা আড়ালের জীবনধারার ভিডিও এখানে ক্লিক করে দেখুন) শ্রেণীদ্বন্দ্বের হিসেবে অংশের নাম নিম্নবিত্ত। এই নিম্নবিত্তের জীবন ফুটিয়েছেন কাসেম বিন আবুবাকার। তাঁর সাহিত্যকর্মকে স্বীকৃতি আপনাকে দিতেই হবে। এই যে হঠাত্করে আপনি তাঁকে নাকচ করতে হলেও স্ট্যাটাস লিখছেন, ব্লগ পোস্ট করছেন, কমেন্ট করছেন, তর্ক করছেন, কলাম লিখছেন এটিই কাসেম বিন আবুবাকারের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির শুরু। আপনাদের মিডিয়ার পাদপ্রদীপ ছাড়াই সে এত দূর এসেছে। এবার আপনাদের মিডিয়ার কান ধরে কাসেম বিন আবু বাকার তার পিছ পিছ ঘোরাবে। গরীবের শক্তি ভয়ানক! গরীবের নায়কের জয়যাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবেনা। কাসেম বিন আবু বাকারও আপনাদের পশ্চিমা স্যেকুলারিজম এলিটিজমের বুকে উঠে প্রাচ্যের বিজয় নিশান উড়াবে, উড়াবেই। 
কাসেম বিন আবুবাকার এই নামটির রাজনৈতিক অর্থনীতি খুঁজতে হবে। চাই কাসেম বিন আবুবাকার নিয়ে অধ্যয়ন হোক। গঠনমূলক সমালোচনা চলুক। তাঁকে নাচক করতে হলেও তাঁকে পাঠ করুন। তাঁর লেখার মনস্তাত্ত্বিক উপাদান খুঁজে বের করতে হবে। কি জন্য তিনি দেশের একটি বিশাল অংশের কাছে এতোটা জনপ্রিয় তা খুঁজে বের করতে হবে। দেখতে হবে, বছরের পর বছর ধরে দেশের সাহিত্য, শিল্প, চলচ্চিত্র সংগীতাঙ্গনে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঝা রয়েছে কি না। সামনে আনতে হবে আমাদের প্রাচ্য বনাম তাদের পশ্চিমের চিরন্তন দ্বন্দ্বকে।

তবে এটাও মনে রাখতে হবে, পশ্চিমারা Agenda Set করে নিজেদের স্বার্থে। কাসেন বিন আবুবাকারকে ব্যবহার করে ওদের কোন দূরভীসন্ধি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ সাহিত্যকে আমি আপনি কোন গুরুত্ত্ব না দিলেও ওরা নিজেদের প্রয়োজনেই পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ টিকিয়ে রাখতে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার , ম্যান বুকার ইত্যাদি দিয়ে থাকে। আবুবাকারকে এতোটা সহজে তাই পাঠ করা যাবেনা। বিশ্ব মিডিয়াকে কনট্রোল করে এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি। (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যান চালক ইমাম হোসেনকে কি বলেছিলেন শুনুন ইমামের নিজের মুখে)এর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী এএফপি কাসেম বিন আবুবাকারকে কেন বেছে নিয়েছে সেটি বিচক্ষণতা দিয়ে বের করতে হবে। মানুষের আবেগকে রাজনৈতিক এজেণ্ডায় পরিণত করতে পারে পশ্চিম। কাসেম বিন আবুবাকারকে দিয়ে বাংলাদেশের সমগ্র পাঠক সমাজকে বিচার করবে পশ্চিম যেটি সত্য নয়। সত্য হচ্ছে পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত নয় বা অর্ধ শিক্ষিত এমন মানুষেরা কাসেমের পাঠক। তারা পুরো বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেনা। সুতরাং এএফপি বা সিএনএন বা ডেইলি মেইল বা আরব নিউজ যে সংবাদ করেছে তাকে উড়িয়ে দেয়া যাবেনা। কাসেম বিন আবুবাকারের ভক্তদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তাদের চলতে দিতে হবে। তাদের পশ্চিমাদের গুটি হতে উস্কানী দেয়া যাবেনা।

দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গীতে কাসেমের বই বিক্রি বেড়ে যাওয়া মানে প্রেম আবেগের ব্যাপ্তি বেড়ে যাওয়া। কাসেমের বই বিক্রি বেড়ে যাওয়া মানে ভীণদেশী নসীম হিযাযী বা নজিম হিকমতের চাহিদা কমে যাওয়া। কাসেমের বই বিক্রি মানে দেশীয় পাঠকের টিকে থাকা। কাসেমের বই বিক্রি হওয়া মানে তাঁর পাঠকদের মধ্যে নরমপন্থা তথা প্রেম আবেগ প্রবেশ করা। কাসেম বিন আবু বাকার বাংলাদেশের সন্তান। তাঁকে অবহেলা, ঘৃণা কিংবা নাকচ করবেন না। তাঁর সঙ্গে বুদ্ধিবৃত্তিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন, অপপ্রচার ও ঘৃণা বন্ধ করুন। (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি, কফিন ও পৈতৃক নিবাসের ভিডিওটি এখানে)এই দেশের একটা সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রিয় লেখক কাসেম বিন আবু বাকারের প্রতি শ্রদ্ধাপোষণ করুন। তিনি তাদের শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে প্রভাবশালীদের একজন। মিডিয়ার সাহায্য ছাড়া আপনারা কয়জন সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন? কাসেম বিন আবু বাকার পেয়েছেন। বাংলাদেশের সাহিত্যে আপনি আমি চাই বা না চাই কাসেম বিন আবু বাকারের একটি শক্ত জায়গা তৈরি হয়েছে। (CLICK HERE TO WATCH THE RAGGING SITUATION IN JAHANGIRNAGAR UNIVERSITY)  সেই জায়গাটি এতই শক্ত যে রক্ত দিয়ে পাঠকেরা তাঁর কাছে চিঠি লেখে। নিম্নবিত্ত সমাজের ডিফোকাসড অংশের এই ভালবাসার মহানায়ককে উপেক্ষা করার দুঃসাহস আমাদের-আপনাদেরই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলবে। আর আমাদের পশ্চিমা মানদণ্ডকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ফুটন্ত গোলাপেরা ফুটেই যাবে...আড়ালে নয়, প্রকাশ্যে।

পাঠ অনুভূতি