ইয়েমেন সীমান্তে যে সেীদি রাজপুত্র হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছে সেটিও খুন হতে পারে। খুনটা করেছে সালমান ইয়েমিন সীমান্তে যাতে যেকোনভাবে এ ব্যাপারে কখনো ধরা পড়ে গেলে হুথিদের উপর দোষ চাপানো যায়। গভর্নর পর্যায়ের যুবরাজ নিহত হলো আর সেীদি আরবের বর্তমান বাদশাহ ও তার ইসরাঈলী সেবক ছেলের কোন মাথাব্যথা নেই। কেন? অবৈধ ইসরাঈল ও ট্রাম্পের ইহুদীবাদী আমেরিকার দাস বর্তমান বাদশাহ সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান মূলত সৌদি আরবকে মধ্যপ্রাচ্যের রক্তাক্ত রাজনৈতিক মঞ্চে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে দেখতে চায়। সে কারণেই সৌদি আরবকে কথিত সেক্যুলার করার কথা এত বড় করে বলছে ওরা। একই সাথে ইরান ও তুরস্কের অনাকাঙ্খিত মৈত্রীতে চপেটাঘাত খাওয়া সৌদি আরব এখন মধ্যপ্রাচ্যের ঠাণ্ডা যুদ্ধে সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতিতে। কারণ এতদিন অবরোধ দিয়েও কাতারকে নমনীয় করতে পারেনি। বরং কাতারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের নয়া পরাশক্তি তুর্কি ও ইরান। আবার সৌদি আরবকে যুদ্ধে ঠেলে দিয়ে এ অঞ্চলের কর্তৃত্ব সংযুক্ত আরব আমিরাত নিতে চাচ্ছে কি না সে কথার কেউ নিশ্চয়তা দিচ্ছেনা। যেভাবে ইসরাঈল ব্যবহার করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে, সেভাবেই আরব আমিরাত সৈাদি আরবকে ব্যবহার করছে কি না কে জানে। অন্ততপক্ষে অর্থনৈতিক বিরোধ যে কাতারের সাথে তাকে কিন্তু সৌদি আরবের মাধ্যমে শায়েস্তা করার খেলায় সফল হয়েছে আরব আমিরাত। আসলে মধ্যপ্রাচ্য এত জটিল সমীকরণ নিয়ে আসে যা আসলে লিখে প্রকাশ করা সম্ভব হয়না। যেমন ধরুন, আরব আমিরার হুথি বিরোধী, তবে আলী আকবর সালেহীর সমর্থক। আলী আকবর সালেহর অনুগত সেনারা আবার হুথিদের সাথে এক হয়ে সৌদি আরব ও সৌদিপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
এদিকে ইয়েমে হুথি বিদ্রোহী ও আলী আকবর সালেহী বাহিনীর মধ্যে সৌদি বিরোধীতায় মতানৈক্য হওয়ায় ইয়েমেন যুদ্ধেও সৌদি আরবের পরাজয় হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই পরাজয়ের ধকলটি লেবানন ও ইরাকের দিকে দিয়ে আসতে চাচ্ছে সেীদি আরব। সেকারণেই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি সৌদি আরব এসে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই কোন কুপরিকল্পনার অংশ। কিছুদিন আগে সেীদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের গোপনে অবৈধ ইসরাঈল ভ্রমণের খবর বেরিয়েছিল। তারপরেই এসব চলছে। যখন ফিলিস্তিনে হামাস ও ফাতাহ এর মধ্যে সমঝোতা চলছে তখন গোপনে ইসরাঈলের সাথে আঁতাত করার ভাল কিছুর লক্ষণ না। অন্যদিকে মিশরের তেল আবিভের দাস ফাত্তাহ সিসি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি সেীদি আরব ও ইসরাঈলের সঙ্গে একসাথে কাজ করতে চান। কি কাজ তা কি কেউ ভেবেছেন? নিউ মিডিল ইস্ট অর্ডার তৈরি করতে চায় কি ওরা?
২।
ইহুদীবাদী ইসরাঈলের জন্য স্বাধীন কুর্দিস্তান খুব প্রয়োজনীয় ভেীগলিক অংশ। ইরাক থেকে কারকুক প্রভৃতি প্রদেশ নিয়ে স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠনের জায়োনিস্ট প্রজেক্টে সেীদি আরবের সমর্থন ছিল। সিরিয়ায় কুর্দি এসডিএফকেও সমর্থন করেছে সৌদি আরব। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য এর কঠিন রাজনৈতিক সমীকরণে তাতেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই সৌদি আরব। বরং দুদিন আগে সেীদি আরবের একটি বিমান বন্দরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।এ ইস্যুতে সেীদি আরব দোষারপ করছে সরাসরি ইরানকে যে ইরান না দিলে এত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র কোথায় পাবে হুথিরা। যদিও ইরান এ ব্যাপারে সব সময় বলে এসেছে তাদের সাথে হুথি যোদ্ধাদের যোগাযোগ নেই। তবে মজলুমের পাশে ইরান দাঁড়াতে চায় (তবে সিরিয়ার মজলুমের পাশে কিন্তু দাঁড়ায়নি। সিরিয়ায় সন্ত্রাসী আইএস, ইরান সমর্থনপুষ্ট বাশার সবাই মিলে কিন্তু মজলুম সিরিয়ানদের হত্যা করেছে , বাস্তুচ্যূত করেছে। সে কথা এখন না ই বললাম।)
ইহুদীবাদী ইসরাঈলের জন্য স্বাধীন কুর্দিস্তান খুব প্রয়োজনীয় ভেীগলিক অংশ। ইরাক থেকে কারকুক প্রভৃতি প্রদেশ নিয়ে স্বাধীন কুর্দিস্তান গঠনের জায়োনিস্ট প্রজেক্টে সেীদি আরবের সমর্থন ছিল। সিরিয়ায় কুর্দি এসডিএফকেও সমর্থন করেছে সৌদি আরব। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য এর কঠিন রাজনৈতিক সমীকরণে তাতেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই সৌদি আরব। বরং দুদিন আগে সেীদি আরবের একটি বিমান বন্দরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।এ ইস্যুতে সেীদি আরব দোষারপ করছে সরাসরি ইরানকে যে ইরান না দিলে এত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র কোথায় পাবে হুথিরা। যদিও ইরান এ ব্যাপারে সব সময় বলে এসেছে তাদের সাথে হুথি যোদ্ধাদের যোগাযোগ নেই। তবে মজলুমের পাশে ইরান দাঁড়াতে চায় (তবে সিরিয়ার মজলুমের পাশে কিন্তু দাঁড়ায়নি। সিরিয়ায় সন্ত্রাসী আইএস, ইরান সমর্থনপুষ্ট বাশার সবাই মিলে কিন্তু মজলুম সিরিয়ানদের হত্যা করেছে , বাস্তুচ্যূত করেছে। সে কথা এখন না ই বললাম।)
৩।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে তা আঁচ করতে পেরছিলাম যখন দেখলাম সৌদি বাদশা সালমান রাশিয়া সফর করলেন। এই সফরের কারণ ছিল ইরানের ব্যাপারে রাশিয়ার যে অন্ধ সমর্থন আছে তাকে কিছুটা হলেও হ্রাস করা। এর আগে ইহুদীবাদী ট্রাম্পের সাথে বিশাল অস্ত্র চুক্তি করে সেীদি আরব। এথেকে বোঝা গিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি আরব। সেটি অবশ্যই ইরানকে কেন্দ্র করে।
৪।
যে কোন ধরনের বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। মোহাম্মদ বিন সালমান সে কারণেই রাজপরিবারের অভ্যন্তরে তার ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার চেষ্টা করছেন। যে সকল রাজপরিবারের সদস্য বা সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার সম্ভাব্য বিরোধীতা করবে বা তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে তাদের তিনি আগে থেকেই সরিয়ে দিচ্ছেন। প্রভাবশালী ধনকুবের যুবরাজ আল ওয়ালিদকে গ্রেফতার তার একটি অংশ। এর আগেই বিন সালমান কয়েকটি প্রধান মন্ত্রণালয় তার হাতে নিয়েছেন। এটিকে বলা যায়, সালমানের ক্ষমতাকে সুসংহত করার একটি শুদ্ধি অভিযান। কারণ মোহাম্মদ বিন সালমান খুব সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করবেন। তিনি ইতোমধ্যেই হিজবুল্লাহর বক্তব্যর জের ধরে লেবানন সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এ জাতীয় কথা বলছেন। আবার গালফ নিউজ, আরব নিউজে দেখলাম , ইরানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধেরও হুঁশিয়ারী দিচ্ছেন। এসব ভাল কিছুর ইঙ্গিত না।
৫।
মধ্যপ্রাচ্য প্রাচ্যের এমন একটি অংশ যেটি চিরকাল পৃথিবীর সকল শক্তির দ্বন্দ্বের অন্যতম কেন্দ্র ছিল। প্রাকৃতিক সম্পদ ও ধর্মীয় কারণে এই জায়গাটির ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব যুগের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে, হ্রাস পায়নি। আর এটি নিয়ে নতুন করে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটেছে মূলত ১৯৪৮ সালে বিশ্বের বিষফোঁড়া অবৈধ ইসরাঈলের অবৈধ জন্ম হওয়ার পর। ২ নভেম্বর ১৯১৭ সালে যে অসভ্য ও অমানবিক বেলফোর ঘোষণা হয় তাই মূলত এই সৌদি আরবের শক্তির মূল উৎস। সে কারণেই জঘন্য বেলফোর ঘোষণার শতবর্ষপূর্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত নয়ারূপ ধারণ করেছে। এখন দেথতে হবে এটি কোন পর্যায়ে দাঁড়ায়। সেীদি আরবের সামনে এতদিন মধ্যপ্রাচ্যে একটি পরাশক্তি ছিল, খোমেনির ইরান। কিন্তু এখন আরো একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ দাঁড়িয়েছে । এর নাম তুরস্ক। সৌদি আরবের পাশেই কাতারে রয়েছে তুরস্কের বিশাল একটি সামরিক ঘাঁটি। এই ঘাঁটির কারণেই সৌদি আরব ইয়েমেনের মত কাতারে আগ্রাসন চালাতে সাহস করেনি। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে সরাসরি যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে কেবল এই তুর্কি সেনাবাহিনীরই। এবং এই তুর্কি সেই কামাইল্যার পশ্চিমাসেবক তুর্কি নয়।
এরদোয়ানের তুরস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সিরিয়া ও ইরাকে নিজস্ব স্বার্থে পররাষ্ট্রনীতি প্রয়োগ করে, এমনকি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে নিজের শক্ত অবস্থানের জানান দিয়েছে। ন্যাটো থেকে বেরিয়ে গেলে নিজের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় রাশিয়ার কাছ থেকে S-400 কেনার চুক্তি করেছে। বৈশ্বিক নেতা হিসেবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট নিজেকে প্রমাণ করেছেন। সে কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যদি যুদ্ধের দামামা ফের বাজেই, তাতে সৌদি আরবের বিজয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। মাঝখান থেকে ফের আরব-ইরানী-তুর্কি-কুর্দিদের রক্ত ঝরবে আর কি! আর এর আসল ফায়দা নেবে অসভ্য ও বর্বর ইহুদীরা। তারা ধীরে ধীরে বৃহত্তর ইসরাঈল গঠনের নীলনকশা বাস্তবায়নের কাছাকাছি চলে যাবে। আফসোস, মূর্খরা তা বুঝেও না বুঝার ভাণ ধরে ক্ষুদ্র স্বার্থে বৃহত্তর স্বার্থ জলাঞ্জলী দিচ্ছে। ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের দ্বন্দ্বের ফলে যে তারা ইহুদীদের দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি হচ্ছে ক্রোধ ও ক্ষমতার লোভে তা তারা ভুলেই গেছে!
0 Comments