সর্বশেষ

কিম-ট্রাম্প বৈঠকের আসল কারণ কি ইরানে আক্রমণ?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও বিশিষ্ট ইহুদী সেবক ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বৈঠকের ভেতরে একটা গূঢ় কারণ রয়েছে বলে আমার ধারণা। এই কারণটি হচ্ছে, ১৯৭৯ সালের আদর্শবাদী ইরানে আক্রমণ। খুব শিগগিরই ইহুদীবাদী নেতানিয়াহুর ছক অনুযায়ী এবং মেয়ে ইভাঙ্কা ও জামাই ইহুদী কুশনারের পরামর্শে আমেরিকা পারমাণবিক বোমার মিথ্যা অজুহাতে ইরানে আক্রমণ করে 'ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান' কে ধ্বংস করে ইরাক-লিবিয়া-আফগানিস্তান মার্কা একটি পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানাতে চেষ্টা করবে যেন অবৈধ ইসরাঈলকে দুনিয়ার মানচিত্র থেকে মুছে দিতে চাওয়া কোন শক্ত রাষ্ট্র না থাকে।
২।
এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইরানের সাথে ওবামার করা চুক্তি থেকে সরে এসেছে ট্রাম্প। আক্রমণের রাষ্ট্রীয় আইনগত বাধা আর নেই। জাতিসংঘ নামের নপুংশক সংঘ এতে কিছু করতে পারবেনা। এখন তিনটি রাষ্ট্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি রাশিয়া, যার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বহুদিন ধরে তেল মেরে ট্রাম্প তার পক্ষে রাখতে চাচ্ছে। সর্বশেষ G-7 সম্মেলনে কানাডায় গিয়ে রাশিয়াকে ফের এ সংগঠনে আনার প্রস্তাবও দেয় ট্রাম্প, অথচ কানাডার সাথে চলছে তুমুল বাণিজ্য যুদ্ধ, সেদিকে ট্রাম্পের কোন খেয়ালই নেই। দ্বিতীয় বাধা এরদোয়ানের তুর্কি। সেখানে সিআইএ সমর্থিত অভ্যুত্থান তুর্কি গণঅভ্যুত্থানে মার খেয়েছে। এখন কুর্দি এসডিএফকে নিরস্ত্র করে তুর্কিকে পক্ষে আনার চেষ্টা করছে আমেরিকা। তবে জেরুজালেমে নিরীহ ফিলিস্তিনী মানুষ মারা তুর্কিকে ঠিকঠাক আমেরিকা অবৈধ ইসরাঈল ব্লকে পাওয়া যাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা নাই।
৩।
আর তৃতীয় পক্ষের নাম উত্তর কোরিয়া, যে দেশ সৃষ্টির পর থেকেই ফিলিস্তিনের পক্ষে রয়েছে এবং ইরানের অন্যতম মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত। সাম্যবাদী উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা আমেরিকাকে এক নম্বর শত্রু মনে করে। কিম জংকে তাই চুপ করাতেই সিংগাপুরের সেনতোসায় এই সম্মেলন। কারণ লড়াকু ইরানী জাতি ছেড়ে কথা বলবেনা আমেরিকা ও ইসরাঈলকে। দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ শুরু হতে পারে। কারণ অবৈধ ইসরাঈলের নকশানুযায়ী সিরিয়াকে দুর্বল করা যায়নি, লেবানন থেকে হিজবুল্লাহর প্রভাব কমেনি, ইয়েমেনে হুথিরা যুদ্ধ করছে এবং গাছায় ইরানের সাথে সুসম্পর্কিত হামাস এখনো বিপুল জনপ্রিয়। সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সকল সেনা ঘাঁটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। ঠিক এ কারণেই ইহুদীবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় আরেকটি ফ্রন্টে যুদ্ধাবস্থা জিইয়ে রাখতে চাচ্ছেনা। কারণ, এতে করে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করা ৩০ হাজারের অধিক মার্কিন সৈন্য পারমাণমিক শক্তিধর ও ইরানের মিত্র দেশ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় থেকে যায়। ঠিক এ কারণেই ট্রাম্প অপমানিত ও খাটো হয়েও সভাটি করতে রাজি হয়েছে।

এগুলো আমার একেবারে নিজস্ব ভাবনা। সত্য আসলে কি সেটি দেখতে আরো মাসখানেক অপেক্ষা করতে হতে পারে। এখানে মনে রাখা জরুরি, আগেই বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিন্তু সরবরাহ করেছে সৌদি আরবে। ইয়েমেন আক্রমণে সৌদিকে সমর্থন করেছে সন্ত্রাসী ইসরাঈল। সব ঠিকঠাক থাকলে এ বছরের শেষে বা ট্রাম্পের এই মেয়াদের শেষেই ইরানে আক্রমণ চালাতে পারে ইসরাঈল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। FOX, BBC, AFP, AP, Reuters, CNN, nytimes, haaretz, NDTV, প্রথম আলোতে শুরু হলো বলে ইরানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও বিশ্বের সবার জন্য 'ভয়াবহ হুমকি' হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংঘবদ্ধ প্রোপাগাণ্ডা! দেখবেন, আর কয় দিন পরই ইরানকে বানাবে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র...! এবং এই অজুহাতে একটি জাতির উপর অভিশপ্ত ইহুদী ও ইহুদীপন্থী শক্তি ঝাঁপিয়ে পড়বে! তবে ইতিহাস বলে, পারস্য তথা ইরানীদের কোন কালে পশ্চিমা কোন শক্তি পরাজিত করতে পারেনি। এবারও পারবেনা বলেই আমার বিশ্বাস। দেখা যাক কি হয় সামনে...!

পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments