সর্বশেষ

সুপ্রীতি ধর গং, উইমেন চ্যাপ্টার, সংকীর্ণ প্রগতিশীলতা ও ইসলাম বিদ্বেষ: নেপথ্য মনস্তত্ত্ব


এই দেশে সুপ্রীতি ধর বা এদের মত যারা নারীবাদী বা সেকুলার বা প্রগতিশীল বা উইমেন চ্যাপ্টার দ্বারা মগজ ধোলাইকৃত নারী বা পুরুষ নামে পরিচিত এরা মোটামুটি সবাই আসলে ইসলাম নামের ধর্মের প্রতি বিদ্বেষী এবং আমার কাছে যে পরিমাণ পর্যবেক্ষণ ও নমুনা আছে তাতে এই সিদ্ধান্তকে আর সাধারণীকরণও বলা যাবেনা, এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। বিষয়টি আমি শিগগিরই গবেষণা নিবন্ধ হিসেবে প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। নানা ব্যস্ততায় দ্রুত প্রকাশ হচ্ছেনা। প্রগতিশীলতার নামে এরা মূলত একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী।   
তো কথায় আসি। এই সুপ্রীতি গংকে আপনি কখোনোই দেখবেন না, ইসলাম ভিন্ন অন্য ধর্মের রীতি, নীতি, পোশাক, সম্পত্তি ইত্যাদি নিয়ে জোরালোভাবে কথা বলতে। কারণ কী?
কারণ এদের জীবনের মানদণ্ড অধিকাংশ ক্ষেত্রে পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার আত্মকেন্দ্রীক ভোগবাদ দ্বারা প্রভাবিত, কিছু ক্ষেত্রে জি-বাংলা, জলসা বা বলিউডও প্রভাব রাখে। এই অপসংস্কৃতিময় জীবনধারায় নির্বিচার ব্যভিচার, লিভ টুগেদার, নিজের শরীরের যাচ্ছেতাই প্রদর্শন, মা বাবাকে রেখে নিজের জীবন নিয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার, সিংগেল মাদার, বৃদ্ধাশ্রম,  পর্ণগ্রাফি দেখা ও করার অধিকার, সংকীর্ণ ও উগ্র বর্ণবাদী নারীবাদ, মার্কিন আগ্রাসন ও সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন, ধর্ম ও নৈতিকতা বিরোধীতা, পরকীয়া, মদ-গাঁজা খাওয়া, সমকামীতা ইত্যাদি ক্ষতিকর, অসভ্য ও অস্বাভাবিক অনাচার-অজাচারকে "স্বাভাবিক জীবনাচার" হিসেবে বিনির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো নব্য উদারতাবাদ বা নিওলিবারেলিজম চর্চার ফসল। এতে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবোধকে সামষ্টিক ভাবনা থেকে পৃথক করা হয় এবং পশ্চিমের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়ে তাদের মানসিক দাসত্বকে সাদরে-আদরে গ্রহণ করা হয়। একটু সূক্ষ্মভাবে ভেবে দেখবেন, প্রাচ্য থেকে উঠে আসা ইসলামের সঙ্গে পশ্চিমের এই নিওলিবারেল বৈশিষ্ট্যগুলোর সরাসরি সংঘর্ষ। এই সাংঘর্ষিকতা পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও আধিপত্যের জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা।   এখান থেকেই সুপ্রীতি গংয়ের দ্বন্দ্বটা ইসলামের সঙ্গে শুরু হয়। কারণ ইসলাম যদি সমাজে বেশি বেশি চর্চিত হয় তাহলে সুপ্রীতির লিভ টুগেদার চলেনা, সমকামীতা চলেনা, সুদ চলেনা, পর্ণগ্রাফি চলেনা, মদ চলেনা, নারীর দেহনির্ভর মিডিয়া-মডেলিং-বাণিজ্য চলেনা, নির্লজ্জ পোশাক-আশাক চলেনা, নারীবাদী এঞ্জিও ব্যবসা-বাণিজ্য চলেনা, পরকীয়া করার সুযোগ থাকেনা, ইত্যাদি । 

তাই সুকৌশলে  ইসলাম নারীকে সর্বাধিক অধিকার দিলেও ইসলাম ও নারীর অধিকারকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করতে হয়। তাতে কী সুপ্রীতিরা সফল হয়? মোটেইনা। সুপ্রীতিরা যে পশ্চিমের সাংস্কৃতিক দাসদাসী সেখানে ইসলামের বিরুদ্ধে শত শত প্রোপাগাণ্ডা চালালেও ইসলামই সেখানে Fastest growing Religion। আর এখানে, সুপ্রীতিরা প্রাচ্যে তো ফুঁ দিলেই উড়ে যায়। দেখেন, দীর্ঘদিন ধরে পশ্চমের এজেণ্ডা নিয়ে এই সমাজে অনৈতিকতা প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েও কতগুলো ফেইম সিকার 'স্ট্যাটাস ল্যাখোক এসাইলাম প্রত্যাশী' লিভ টুগেদার ও পরকীয়াপন্থী তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া কোব অর্জন নেই এদের। সুপ্রীতির আছে। কারণ সে উইমেন চ্যাপ্টার বিক্রি করে জীবন ধারণ করে। কিন্তু দিন শেষ হলে এরা আশেপাশে বা সমাজে হাসির খোরাকই। ইতিবাচক কোন অবয়ব বা অবদান এই ভোগবাদী যৌনসর্বস্বদের নেই।

২।
সুপ্রীতি গংকে আপনি অশ্লীল পোশাক বা লিভ টুগেদারের মত এইডস-সহায়ক খারাপ জিনিস নিয়ে কিছু লিখতে দেখবেন না। কারণ তারা এতে অভ্যস্ত। সুপ্রীতির লিভ টুগেদারের পার্টনার বয়ফ্রেন্ড জনৈক সাহা দ্বারা সুপ্রীতির নিজ মেয়ে যৌন নিপীড়নের শিকার। তবে সে বিষয়ে সুপ্রীতির দৃঢ় অবস্থান ছিলনা। এমন কী উইমেন চ্যাপ্টারেরও না। মিডিয়া ও মুন্নী গংদেরও না। বাংলাদেশে #metoo টেকেনি কারণ এই সুপ্রীতি গং চায়নি। এটা হলে নিজেদের প্রত্যেকের থলের বিড়াল বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিল। কারণ এরা অধিকাংশ প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে পরকীয়া ব্যভিচার করে। অনেকে শরীরের বিনিময়ে ছোটখাটো সুবিধাও দেয়া নেয়া করে। কে কার স্বামী বা বয়ফ্রেন্ড বা আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে অনৈতিক সসম্পর্কে লিপ্ত তা প্রকাশ হোক এরা কেউ চায়নি। এগুলোকে এরা ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে চালায়। এদের মতে, নিজের দেহ যাকে খুশি, যতবার খুশি, যেকোন কারণে স্বেচ্ছায় দেয়া যায়। কেবল নিজের ইচ্ছার বাইরে না হলেই হলো! অথচ একাধিক প্রেম করা ও তার অধিকারের জন্য এরা বড়বড় কথা বললেও ইসলাম শর্তসাপেক্ষে ইনসাফ করার উদ্দেশ্যে কেন একাধিক বিয়ে রাখে তা নিয়ে এদের চিন্তার আবার শেষ নাই। 

তো এহেন জঘন্য মানসিকতার এই সুপ্রীতি নিজের বয়ফ্রেন্ড কর্তৃক তারই কন্যা যৌন হয়রানির শিকার হলে তা নিয়ে উচ্চবাচ্য বা মামলা মোকাদ্দমা বা উইমেন চ্যাপ্টারে পর্যাপ্ত লেখাও প্রকাশ করেনি। এই হলো হিপোক্রেসি। বাাংলায় বলে ভণ্ডামী, ধাপ্পাবাজি। সুপ্রীতি গং দেশ উদ্ধার করে দেয় আবার নিজেদের ঘরে নিপীড়ক পুষে। এরা নারী অধিকারের কথা বলে অথচ প্রায় প্রতিটি নারীবাদী নামের দ্বিচারিণী বা দ্বিচারী বা ভণ্ডের ঘরে কথিত"কাজের মেয়ে" থাকে। তাদের উপর এরা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালায়, তাদের পড়ালেখাও করায়না, বেতন-ভাতা না দিয়ে পেটেভাতে অমানবিক কাজ করায়। কখনো নারীবাদীদের বদমাশ স্বামী বা পুত্র বা কাছের কারো দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয় কাজের মেয়েটি। কখনো তাদের খুন্তি দিয়ে ছ্যাাঁকাও দেয়। কয়েক বছর আগে কৃৃৃষ্ণকলি নামের নারীবাদীর ঘরের কিশোরী কাজের মেয়েটি আত্মহত্যা করেছিল। পুলিিি এদের গ্রেফতার করে। কী অবস্থা সে মামলার? বছরখানেক আগে জান্নাতুন নাঈম প্রীতি নামের এক লিভ টুগেদারপন্থী ইতর এবং সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া হিপোক্রেট ইমতিয়াজ মাহমুদের পরকীয়া ও হোলি আর্টিজানে গিয়ে মেলামেশার খবর ফাঁস হয়। তো এরা দুজনেই কিন্তু নারীর অধিকার নিয়ে বকবক করে। আবার আরেক নারীর সংসার বা বিশ্বাস ভেঙে পরকীয়ার মত ঘৃণ্য অপকর্ম করে। এই জঘন্য নোংরাদের জন্য আমাদের করুণা করতেও লজ্জা লাগে! এরা বাঙালির হাজার বছরের পবিত্র জীবনধারার জন্য হুমকি বা থ্রেট।


৩।

সুপ্রীতির সর্বশেষ আপত্তি আমাদের বাংলাদেশের ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজার মেয়েকে হিজাব পরানোতে। এ নিয়ে তীর্যক মন্তব্যসহ নানা বাজে কথা সে লিখেছে। বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদে যাওয়া নিয়েও আপত্তিকর কথা লিখেছে। সেই পোস্ট সুপ্রীতি ইতর ধর ডিলিট বা অনলি মি করেছে নিজের ইসলাম বিদ্বেষী নোংরা মুখোশ খুলে যাবে আরেকবার এই আশঙ্কায়। তো মাশরাফি তার মেয়েকে হিজাব পরালে সুপ্রীতির কী সমস্যা? দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রিয় ব্যক্তি তার কন্যাকে শান্তি ও সুশৃঙ্খল জীবন ব্যবস্থায় আনতে দেখলে সমাজচ্যূত, পতিত, ব্যভিচারপন্থী পশ্চিমা অপসংস্কৃতির চাকরানী সুপ্রীতি ধরের অসভ্য গায়ে জ্বালা ধরে কেন? সুপ্রীতিরা বলতে চায়, এতে মৌলবাদীতার দীক্ষা দেয়া হয়। বাচ্চা বড় হয়ে তার পোশাক বা ধর্মকে বেছে নেবে। কেন হিজাব চাপিয়ে দেয়া হয়। সুপ্রীতিরা চায়, মাশরাফি তার মেয়েকে জিন্স আর টপস দিক যেভাবে সুপ্রীতি গং নিজেদের মেয়েদের পশ্চিমা সংস্কৃতির দাসী বানিয়েছে সেভাবে। তো প্রশ্ন হচ্ছে, হিজাব যদি বাচ্চা মেয়ের অনিচ্ছায় পরানো হয়, তবে জিন্স বা টপস বা পশ্চিমা বা ভারতীয় যেকোন পোশাকও তো শিশু কন্যার নিজের ইচ্ছায় পরানো হয়না। সেখানে আপত্তি নাই কেন? এখানেই নিওলিবারেল ভণ্ডদের ইসলাম বিদ্বেষী অসুস্থ রূপটি ধরা পড়ে যায়। তারা স্লিভলেস পরবে, নাভি বের করবে, পাতলা পোশাক পরবে, অর্ধনগ্ন হবে এবং এটিকে বলবে ব্যক্তিস্বাধীনতা অথচ কেউ যদি হিজাব বা বোরখা বা মার্জিত ভাবে কোন পোশাক পরে সেটি নারীর অধিকারের জন্য হুমকি! এই ধারণা সুপ্রীতি গংয়ের সংকীর্ণতাকে প্রকাশ করে। কারণ ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে বোঝায়, কোন অভিভাবক যদি তার সন্তানকে জিন্স বা বিকিনি পরাতে পারে, তবে অন্য কোন অভিভাবক তার সন্তানদের হিজাবও পরাতে পারে। কোন নারী বিকিনি, টপস, স্লিভলেস জামাকাপড় পরাকে যদি ব্যক্তিস্বাধীনতার আওতায় ফেলে তবে কোন নারী স্বেচ্ছায় হিজাব, বোরখা বা মার্জিত পোশাককেও ব্যক্তিস্বাধীনতার কারণে পরতে পারে। আপনি অন্যের পোশাক পরার সাংস্কৃতিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইলে সেইটাকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বা আধিপত্যবাদ বলে। একবার ভাবুন হে সুপ্রীতি গং, যে মেয়ে বা অভিভাবকদের উপর আপনি ও আপনারা নিজেদের পোশাক, বিশ্বাস ও জীবনধারা চাপিয়ে দিতে চান তারাও যদি একই মত ধারণ করে আপনাদের উপর অপেক্ষাকৃত কল্যাণকর তাদের মত, বিশ্বাস ও পোশাককে চাপিয়ে দিতে চায়। আপনারা বলবেন, এটা আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। তো আপনারা অন্যদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় নাক গলান কেন? এইভাবে ভণ্ডামী করে সমাজচ্যূত থেকে ইতরামী করা আর কতদিন?

৪।
উইমেন চ্যাপ্টার, 'নারী' ও সুপ্রীতি গংকে আপনি কোনকালে মার্কিন আগ্রাসন বিরোধী দেখেছেন? কখনো ভারতের মুসলিমদের বা দলিত হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে দেখেছেন? কখনো আফ্রিকার না খাওয়া নারীদের বেদনা নিয়ে চিন্তিত দেখেছেন, কাস্মীর, ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা, উত্তর কোরিয়ান, জিনজিয়াংয়ের নারীদের নিয়ে এদের ভাবনা আছে কোন? নাই। কারণ এরা যেখান থেকে নারীবাদ নকল করে সেই পশ্চিমেই মুসলিম নারীকে নারীবাদের আলোচনা থেকে স্বেচ্ছায় বাদ দিছে। এখানেই নারীবাদের ঘৃণ্য রাজনৈতিক অর্থনীতি সামনে আসে। এরা পশ্চিমা আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী এজেণ্ডার বাইরে আসতে পারেনা। তাই সৌদি আরবে রাহাব নামের মেয়ের গাঁজা খাওয়া ও যাচ্ছেতাই করার অধিকার নিয়ে এরা বিশ্ব কাঁপায় ; কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে যে ইরান বা উত্তর কোরিয়া, বা কিউবা বা ভেনিজুয়েলা বা রাশিয়ার নারীরাও দুর্ভোগের শিকার তা নিয়ে এদের ন্যূনতম মাথাব্যথা নাই। এইখানে এসে বিশ্বে চলমান এই নারীবাদ যে আদতে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের দোসর তার প্রমাণ হয়। 

এই নারীবাদী ইতরগুলো কোন দিনই পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেয়না (বরং তারানা হালিম বা মোস্তফা জব্বার পর্ণ সাইট বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে এরাই সবার আগে এর বিরোধীতা করে, সে সময়ে এদের টাইমলাইন চেক করলেই সত্যতা পাবেন), বরং নারীর জন্য অবমাননাকর এসব ঘৃণ্য পর্ণ দেখা ও তাতে পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য নারীর অভিনয় করাকে এরা ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে স্বীকৃতি দেয়। বিজ্ঞাপনে নারীদেহকে ব্যবহার নিয়ে এরা মুখে কুলুপ আঁটে। এখানেই পুঁজিবাদের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয় নারীবাদ ও তার ধ্বজাধারী সুপ্রীতি গং। আবার এরা যথেষ্ট বর্ণবাদী। গরীব নারীদের নিয়ে এদের ভাবনা নাই। তবে এদের বিক্রি করে এরা এনজিও-সেমিনার করে টাকা কামায়। এরা নারী অধিকারকে সমাজের উঁচু স্তরের ডিভোর্সি, বা একাধিক লিভ টুগেদার করা, অবাধ যৌনতায় বিশ্বাসী, পরকীয়াত আসক্ত গুটিকয়েক নারীর খায়েশ পূরণের হাতিয়ার করেছে। সমাজের শ্রমিক নারী, জাতিগত নিধনের শিকার নারী, আগ্রাসনের শিকার নারী, যুদ্ধের শিকার নারী নিয়ে এদের বয়ান নাই। কেবল কীভাবে একজন উচ্চবিত্ত নারীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছার প্রতিফলন করা যায় নারীবাদের ছত্রচ্ছায়ায় সেটাই এদের লক্ষ্য! আমি এদের নাম দিয়েছিলাম পুরুষতান্ত্রিক নারীবাদী। এরা মূলত আধিপত্যবাদী স্বার্থপর পুরুষদের নারী সংস্করণ। এরা দিনভর পুরুষদের গালি দিলেও রাতভর পুরুষ ছাড়া এদের চলেইনা। অথচ গরীব মেয়েটাকে আবার আঠারোর আগে বিয়ে করতে দেবেনা। নারীবাদী এদের  বা এদের ছেলেমেয়েদের ভণ্ড  আচরণ। 
 
৫। 
তাহলে সুপ্রীতি গংয়ের এই ভণ্ডামী কেন চলছে? এর কারণ বিশ্বায়নের ফলে পশ্চিমা সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদী এজেণ্ডা বাস্তবায়নের জন্য দেশে দেশে এই সব সংকীর্ণদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয় পশ্চিমারা। ইদানীং ভারত তার নিজস্ব আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠায় একই এজেণ্ডা হাতে নিয়েছে। তো পশ্চিমাদের পণ্যের বাজার সারা দুনিয়ার সবাইকে করতে একটি একক সংস্কৃতির পৃথিবী প্রয়োজন। কারণ সবার একই চাহিদা হলে পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি সহজ হয়ে যাবে। কসমেটিকস থেকে ইলেকট্রনিকস সব কিছুর জন্য চাই বাজার। এটাকেই তারা বিশ্বায়ন বিশ্বায়ন করে চালায়। আপ্নিও তা খান। অথচ সীমান্ত খুলে দেয়ার সময় বিশ্বায়নের বয়ানধারীরা মুখ বন্ধ করে রাখে। কারণ তারা চায় পণ্যের অবাধ প্রবাহ, মানুষের নয়। আর এই নারীবাদও পশ্চিমা পুঁজিবাদের গর্ভজাত পণ্য! এ পণ্যকে টিকিয়ে রাখে সুপ্রীতি গং, পশ্চিম থেকে ডিগ্রিধারী কিছু মাস্টার-মাস্টারনী এবং এদের দ্বারা মগজ ধোলাইকৃত একটি গোষ্ঠী।

 পশ্চিমারা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন দেশকে চাপ দিতে বা আগ্রাসন চালাতে বিভিন্ন এনজিও, নারীবাদী সংস্থা, পত্রিকা, পশ্চিমপন্থী বয়ান ইত্যাদির কাঁধে বন্দুক রাখে। সে কারণে হত দরিদ্র কোন শ্রমিককে ভিসা দেয়না ইয়োরোপ-আমেরিকা, কিন্তু ইসলাম নিয়ে গালিগালাজ করা ঘৃণাজীবী অকর্মাদের আদর করে নিয়ে যায়। এটাই আধুনিকতার শুভঙ্করের ফাঁকি। এই ফাঁকি ধরতে না পারলে আপনি সুপ্রীতি-সম্প্রীতির প্রভুদের এজেণ্ডা ধরতে পারবেন না। আমার আপনার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময়তাকে সুপ্রীতি-সম্প্রীতি গং হত্যা করে বা চাপিয়ে রেখে পশ্চিমা শিকড়হীনতাকে সমাজের সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাই এরা সম্মিলিতভাবে আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে অপপ্রচার করে। অথচ প্রাচীন বাংলাদেশের মানুষ সাদরে ইসলামকে নিজেদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে নেয়। ইসলামের সংস্কৃতি বাংলাদেশের বাঙ্গালী আত্মীকরণ করে। ঈদ, রোজা, ইফতার, ফিতরা, জুমআ, ওয়াজ, টুপি, লুঙ্গি, শাড়ি, হিজাব বাঙালির সংস্কৃতি। এমন কী প্রায় হাজার বছরের পুরোনো সংস্কৃতি, সুপ্রীতির প্রিয় মঙ্গল শোভাযাত্রার চেয়ে শত শত বছরের পুরোনো বাঙ্গালী মুসলমানের উৎসব, রীতিনীতি, পোশাক ও সামাজিক আচার। এই অপপ্রয়াস রুখে দিতে চোখ-কান খুলা রাখতে হবে। মনে রাখবেন, সংস্কৃতি একটি জাতির টিকে থাকার জ্বালানি। এই সংস্কৃতিকে উপড়ে ফেলার যেকোন ষড়যন্ত্রকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। সুপ্রীতি গংয়ের মত পশ্চিমা ও ভারতীয় সংস্কৃতির দালাল-দালালনী পুরুষতান্ত্রিক নারীবাদী কর্তৃক নানা ছদ্মবেশী মুখোশে ভীণদেশী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ঠিকাদারি করতে দেয়া যাবেনা। বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে তাদের নগ্ন, ভণ্ড, অসৎ, সাম্প্রদায়িক কুৎসিত মুখোশের উন্মোচন করতে হবে। চ্যালেঞ্জ করতে হবে। ওদের নিজস্ব জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেচনাবোধ নাই, সব পরধন, পরজ্ঞান। তাই আমরা জ্ঞান, যুক্তি, তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে প্রতিরোধের ডাক দিলে সুপ্রীতি গং নিক্ষিপ্ত হবে ইতিহাসের ভাগাড়ে। বেশি হলে পশ্চিমে গিয়ে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির আশ্রিত বা আশ্রিতা পরজীবি হয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বেড়াবে। এদের জীবন ইতরের জীবন। এটি মানুষের সমাজে গ্রহণযোগ্য করার নীল নকশা বাতিল হতে বেশিদিন লাগবেনা। কারণ :

"সত্য এলে মিথ্যা বাতিল হয়, কারণ মিথ্যাতো বাতিল হওয়ারই যোগ্য।"


চিন্তা করুন, সত্যকে ভালবাসুন। মিথ্যার শিকড় উপড়ে দিতে চিন্তা ও সত্যকে ভালবাসাই যথেষ্ট।


পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments