সর্বশেষ

আকাশের ৩ লাখ টাকার গাড়ি: চাই রাষ্ট্রীয় সহায়তা, উৎসাহ-প্রচারণা


নারায়নগঞ্জের আকাশ আহমেদ নামে একটি ছেলে মাত্র ৩ লাখ টাকা দিয়ে পরিবেশবান্ধব একটি গাড়ি বানিয়েছে। তার গাড়িটি ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে যা ভারতের টাটার চেয়েও উত্তম। এটি চার্জে চলবে বলে পরিবেশের জন্যও ভাল। গাড়ি তো বানিয়েছে বাবার কাছ থেকে ১০০/২০০ টাকা নিয়ে, কোন প্রকৌশলীর সহায়তা ছাড়া। শুধু তাই নয় নিজস্ব উদ্ভাবনী দিয়ে নিজেই গাড়ির কিছু যন্ত্র বিনির্মাণ করেছে। এই ছেলের উদ্যোগকে মরে যেতে দেয়া যাবেনা।

এদেশের প্রকৌশল ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত মেধাবীরা বিদেশে স্কলারশিপের জন্য ছোটে অধিকাংশ, দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতার ভাবনা কম দেখা যায় সেসব আত্নকেন্দ্রীকদের মধ্যে। অথচ রাষ্ট্রের বিপুল বিনিয়োগ এই জাতীয়তাবোধহীনদের পিছনে। এ বিনিয়োগ পায়না আকাশ আহমেদ বা তার মত এমন সাধারণ ছেলেরা। মিডিয়া কাভারেজও নাই। এটি দেখে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ভার্সিটির আত্মকেন্দ্রীকপাল ঈর্ষান্বিতও হতে পারে। তাদের আমাদের আমজনতার পরাজিত করতে হবে। এর আগে এদেশে পলিথিন পুড়িয়ে তেল তৈরি করা, পানি দিয়ে গাড়ি চালানো, জনির ট্রাফিক ভাবনা ইত্যাদিকে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। এবার যেন না হয়। আকাশের বাবা শুধু গাড়ি বাজারজাতকরণের অনুমতি চেয়েছে সরকারের কাছে। দেয়া হোক অনুমতি। সেই সঙ্গে সরকার বাজেটে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য যে ১০০ কোটি টাকা রেখেছে তা থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়ে আকাশ আহমেদের এই গাড়ি নিয়ে আরো গবেষণা, আরো কাজ করার সুযোগ দেয়া উচিত ছেলেটিকে। কারণ এই গাড়ি দাঁড়িয়ে গেলে রাষ্ট্র হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করবে, আবার গাড়ি আমদানিও কমবে। মান ভাল হলে সারা বিশ্বে রপ্তানি করেও কোটি টাকা বাংলাদেশ লাভ করবে। এই গাড়ি হতে পারে বাংলাদেশীদের অপরিহার্য সঙ্গী। এটাই হতে পারে আমাদের টয়োটা, বিএমডব্লিউ, সুজুকির প্রোটোটাইপ। এই গাড়িকে হারিয়ে যেতে দিয়েন না, প্রিয় নীতিনির্ধারকগণ। আকাশরাই বাংলাদেশের সন্তান, ওদের চিনতে ভুল করলে এক সময়ের স্বনির্ভর বাংলাদেশটা পরনির্ভরশীল হতেই থাকবে...!

কেউ কি আছেন আমার বন্ধু তালিকায় যিনি এই ছেলেটি ও তাঁর উদ্ভাবনের বিষয়টা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেবেন? এমন উদ্যোক্তার মূল্যায়ন কেবল তিনিই করতে পারেন যিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-আইওএমএফ ও পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের টাকায় বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ও জটিল পদ্মা সেতু করতে পারেন। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের স্বার্থে, লাল-সবুজ পতাকার বিশ্বজয়ের জন্য যে কোন উদোগ ও উদ্যোক্তাকে কিছুতেই অবহেলায়, অর্থাভাবে, পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে শেষ হতে দেয়া যাবেনা। কারণ একটি উদ্যোগ, একজন উদ্যোক্তা পুরো জাতির ভাগ্যকে বদলে দিতে পারে। আর এমন সফল গোটা শতেক উদ্যোক্তা ও উদ্যোগকে বাংলাদেশ দাঁড় করাতে পারলে মহান প্রতিপালকের ইচ্ছায় আবার প্রাচীন বঙ্গের ন্যায় সারাবিশ্বে বাংলাদেশ অনন্য হবে, সারা দুনিয়া বাংলাদেশে রুটি-রুজির জন্য ভিড়বে। এমন উন্নত ও ইতিবাচক সুদূরপ্রসারী ভাবনাই জাতীয়তাবোধ। আর এটাই সমৃদ্ধির মূলমন্ত্র। জয় হোক বাংলাদেশের, বাংলাদেশের প্রতিটি ইতিবাচক উদ্যোগের।
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments