সর্বশেষ

বাংলাদেশের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের অবদান

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বটবৃক্ষ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের আগেই এই দলের জন্ম। ১৯৪৯ সালের জুন মাসে সৃষ্টি হওয়া এই রাজনৈতিক মহীরূহ বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের আবির্ভাবে সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক  সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের গণপ্রজাতন্ত্রী রূপদানে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরলস শ্রম ও প্রত্যয় সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছে। 
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক-শ্রমিকের কথা ভেবে গণবান্ধব শাসনব্যবস্থা চালু করতে চেয়েছিলেন। এই রাষ্ট্রের ব্রিটিশদের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা থেকে ভোগবাদী শিক্ষাব্যবস্থা, আমলাতান্ত্রিক শোষণপন্থা, কৃষকবিমুখ অর্থনীতি, অনুৎপাদনশীল সামরিক বাহিনী, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রযন্ত্র, স্বাধীনতা বিরোধীদের সুবিধা, দুষ্টু রাজনীতি  ইত্যাদিকে চ্যালেঞ্জ করে ঢেলে সাজাতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ১৯৭২ এর সংবিধান ও তাঁর প্রণীত নীতিতে রাষ্ট্র পরিচালিত করতে পারলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য দারুন সম্ভাবনাপূর্ণ একটি বাংলাদেশ গড়ে ওঠে। সে কারণেই বাম-ডানের প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটি তাঁকে এ পৃথিবীতে থাকতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু যদি তাঁর নীতি বাস্তবায়ন করতে পারতেন তবে বাংলাদেশ আজ এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হয়।
স্বাধীনতা বিরোধী ও সামরিক স্বৈরাচারদের হাতে দীর্ঘদিন জিম্মি থাকার পর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সমস্ত সম্ভাবনা যখন মৃতপ্রায় তখন ১৯৯৬ সালে ২১ বছর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির হাতে ক্ষমতা ফিরে আসে। আবার এ রাষ্ট্রের উন্নয়নের চাকা ঘুরতে শুরু করে বঙ্গবন্ধুতনয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপামর জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করলে। ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রের রূপ বদলে যেতে শুরু করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতের পরশে। মাঝখানে বিদেশীদের কাছে দেশের সম্পদ তুলে দেয়ার কথা বলে ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির দোসর, এতিমের সম্পত্তি লোপাটকারী খালেদা গং। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশটাকে লুটেপুটে নিঃশেষ করে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। তারেক-কোকো-গিয়াসদের পার্সেন্টেজ খাওয়ার বেড়াজালে বাংলাদেশের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে পড়ে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় সাম্প্রদায়িক শক্তির উদ্ভব হয়, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের ভয়াল ছোবলে প্রিয় বাংলাদেশ আক্রান্ত হয়, অশ্লীলতা ও কাটপিস দিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করা হয়, মদ্যপ রাষ্ট্রপ্রধানের অনৈতিকতা জাতীয় জীবনে আরোপনের কালিমা লেপন করে, দুর্নীতিতে টানা ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এই পরিমাণ কলঙ্ক দিয়েও এই অপশক্তি থেমে থাকেনি। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করতে প্রশাসনের কয়েক স্তর পর্যন্ত নিজস্ব লোক রাখে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে নিজেদের দলকানা লোক রেখে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নীল নকশা স্থাপন করে। তার সুযোগে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন গং দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপর অন্যায়-মিথ্যাচার আরোপ করার সুযোগ পায়। নিজেদের গর্তে নিজেরাও পড়ে। তারপর বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী তরুণ-যুবকদের প্রতিরোধে সামরিক অপশাসনের অবসান হয়। নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। 
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শাসনামলের অর্জন
২০০৮ এর ডিসেম্বর থেকে টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬-২০০১ এর পর ২০০৮ -২০১৮ এর নির্বাচনে বিজয়ের পর চতুর্থ বারের মত প্রধানমন্ত্রীত্ব করছেন দেশরত্ন, মানবতার জননী, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, জার্মানির চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে গণিতান্ত্রিকভাবে দীর্ঘদিন সাফল্যের সঙ্গে শাসন করা রাষ্ট্রপ্রধানের তালিকায় উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকে শেখ হাসিনার নাম, আমাদের গর্ব শেখের বেটির নাম।
এখন ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানগুলো  সংক্ষেপে নিচে আলোচনা করা হলো।
১। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার
শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অবদান তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচারকার্য সম্পন্ন করেছেন। এই দেশে স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানসহ  স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি দীর্ঘ সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি বহাল রাখে। সেই অসভ্য খুনীদের সাক্ষি প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারের কাঠগড়ায় এনে ফাঁসির কাষ্ঠ পর্যন্ত নেয়া শেখের বেটির সবচেয়ে বড় সাফল্যগুলোর একটি। জাতিকে পিতা হত্যার কলঙ্ক  থেকে মুক্তি দেয়ায় শেখ হাসিনার এ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রইবে। আমাদের পূর্ণ স্বস্তি আসবে পালাতক  খুনী অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা সাফল্যের আলো দেখলে।
২। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা  ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হানি করে পাকিস্তানি নরপিচাশ সেনা ও তাদের এদেশীয় বর্বর দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী। জামায়াত ইসলাম নামের ঘৃণ্য রাজনৈতিক দল ধর্মের কাঁধে বন্দুক রেখে মানুষ হত্যায় নেতৃত্ব দেয়। এই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করেন শেখ হাসিনা। এ ট্রাইবুনাল রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযম, আল বদর বাহিনীর ক্যাডার মতিউর রহমান নিজামী, কাদের মোল্লা, বেয়াদব সাকা চৌধুরী  সাইদীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারের আওতায় আনা হয়। ফাঁসিতে ঝোলানো হয় নিজামী, সাকা, কাদের মোল্লাদের। যাবজ্জীবন হয় গো আযম আর সাঈদীর। বাংলার জমিনে এই রগকাটার প্রবর্তক , দুর্ধর্ষ স্বাধীনতা বিরোধীদের শিকড় ধরে টান দিয়ে যে এদের বিচার করা সম্ভব এ কথা শেখের বেটি বিচার করে ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে অনেকেই ভাবতেও পারেনি। আন্তর্জাতিক  অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচার এখনো চলমান।
৩। অর্থনৈতিক উন্নতি
দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ১৯০৯ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায়  দেড় লক্ষ টাকা। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে। এ স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে ২০৩০ এর মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ১০ থেকে ২৬ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বলে উঠে এসেছে। শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ২০৪১ এর মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করবেন। এ জন্য তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০ টি Exclusive Economic Zone(EEZ) স্থাপনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ভিশন ২০২১ এখন বাস্তব। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে সাত থেকে ৮ এর কাছাকাছি। দেশে বাড়ছে ব্যাপক পরিমাণ বিনিয়োগ। অর্থনীতিতে শিল্পের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ ফলনের কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাম্পার ফলন হচ্ছে।  
৪। সামাজিক কার্যক্রম
বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি দেয়া হচ্ছে পূর্ণ ৬ মাস। পিতামাতার ভরণপোষণের আইন করে নেত্রী সন্তানদের মা-বার প্রতি সামাজিক দায়িত্ব পালনকে বাধ্যতামূলক করেছেন। এখন কোন সন্তান তার পিতা-মাতার প্রতি অমর্যাদা করলে তারা আইনের আশ্রয় নিলে ঐ সন্তানকে আদালত শাস্তি দিতে পারবে। এভাবে বৃদ্ধ পুরুষ নারীদের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা৷ তিনি দুস্থ ও এতিমদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল  থেকে নিজে দান করতে এগিয়ে আসেন। প্রতিবন্ধীদের ভাতা নিশ্চিত করতে নেত্রী মাঠ পর্যায়ে তদারকি করেন।
৫। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান 
 প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যবই বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। পৃথিবীর খুব কম দেশে এত বিপুলসংখ্যক বই বিনামূল্যে সঠিক সময়ে প্রদান করা হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য প্রতিটি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লার্নিং নিশ্চিত করতে কম্পিউটার, প্রজেক্টর ও ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করেছেন। দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন নেত্রী শেখ হাসিনা। সর্বোপরি শিক্ষাকে উন্নত করার জন্য বাজেটে শিক্ষাখাতে অতীতের সকল সরকারের চেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। গবেষণায় রাষ্ট্রের বরাদ্দ বাড়ছে।   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইটি উপদেষ্টা ও সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এক্টি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,  আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রের উন্নতি করতে চাই। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আধুনিক শিক্ষার কোন বিকল্প নাই।

৬। পাওয়ার সেক্টর
বাগেরহাটের রামপালে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে যে যৌথ প্রকল্পের কাজ চলছে তা সম্পন্ন হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক বিপ্লব হবে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের  খুলনা বিভাগসহ আশেপাশের প্রতিটি জেলার কৃষি, শিল্প-বাণিজ্য বদলে যাবে। অন্যদিকে রাশিয়ার সহযোগিতায় গড়ে উঠা পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরো উত্তরবঙ্গের জন্য আশির্বাদ নিয়ে আসবে। চট্রগ্রাম ও এর আশেপাশের অঞ্চলের জন্য মাতারবাড়িতে জাপানের সহযোগিতায়  আরো এক্টি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বদলে যাবে বাংলাদেশ। এক নতুন বাংলাদেশের হাতছানি দেয়ার কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৭। পদ্মা ব্রিজ
কথিত রয়েছে কোন এক বিদেশী ই
উত্তাল ভয়ংকর পদ্মা নদী দেখে বলেছিলেন, 'পদ্মাকে আপনারা নদী বলছেন? এতো আস্তো একটা সাগর'।  এই উত্তাল পদ্মা নদীর বুকে মানুষের কল্যাণের জন্য সেতু করার দুঃসাহস বাংলাদেশের কোনো সরকার কখনো করেনি। যা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি তাই করেছেন শেখের বেটি। তিনি প্রমত্ত পদ্মার বুকে দেশের সবচেয়ে বড় ব্রিজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী অপশক্তি ও তাদের দেশীয় দালালেরা এই পদ্মা সেতু করতে বাধা প্রদান করতে কল্পিত অভিযোগ উঠিয়েছে। বিশ্বব্যাংক গং  পদ্মা সেতু অর্থ বরাদ্দ না দেয়ার কথা বলে। আমাদের জাতীয়তাবোধসম্পন্ন শেখের বেটি বলে দিলেন, দেশের মানুষের টাকা দিয়ে  সেতু করবো তবু কারো মিথ্যাচার ও অপবাদ মানবোনা। তার এই দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে দেশের তরুণ সমাজ খুশি হলো। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া হল। আমার উদ্যোগে  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে অর্থ তুলে দেয়া হল। নেত্রী জনগণের এই সমর্থন থেকে সাহস নিয়ে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু করতে প্রতিজ্ঞা করলেন। আজ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। পশ্চিমা শক্তির হুমকি ধামকি ও সুদের কারবারি ইউনিসদের ষড়যন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শেখের বেটি পদ্মা সেতুকে বাস্তব রূপ দান করেই ছেড়েছেন। এ সেতু হলে দেশের সবচেয়ে উর্বর দক্ষিণবঙ্গ আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে এবং দেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।      
৮। ডিজিটাল বাংলাদেশ
৪ জি (ফোর জি) বা চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট থেকে ৫ জেনারেশন ইন্টারনেটের পথে বাংলাদেশ। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদও এখন ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে। সকল নাগরিকের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে স্মার্টকার্ড যা দিয়ে ২১ টির বেশি রাষ্ট্রীয় সেবা প্রদান করা হবে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ চালু করা হয়েছে যেখানে কল করে যেকোনো নাগরিক পুলিশের সেবা পাচ্ছেন। ই-পাসপোর্ট  আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে সকল নাগরিককে, এতে নাগরিক  দুর্ভোগ  কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আরো বাড়ছে। আউটসোর্সিং করে তরুণরা লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শক্রমে সরকার প্রতিটি জেলায় আইটি সেল খুলে নাগরিকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের তথ্যপ্রাপ্তির   অধিকার অর্জন করে। দেশে শত শত অনলাইন নিউজপেপার, প্রায় অর্ধশতাধিক টেলিভিশন ও বেতার ইত্যাদি  চালু রয়েছে।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ আগের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিক স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করছে। দেশে মোবাইল ব্যাংকিং যেমন নগদ, বিকাশ ইত্যাদি চালু হওয়ায় প্রান্তিক দরিদ্র মানুষও ব্যাংকিং সেবার আওতায় চলে এসেছে।      
৯। জঙ্গীবাদ দমনে দারুন সফলতা
সারাবিশ্বে যখন আইএস সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম তখন বাংলাদেশ থেকে এ উগ্র মতাদর্শের উচ্ছেদ করেন শেখের বেটি। তিনি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তথ্য-প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ইত্যাদি প্রদান করে বাংলার মাটি থেকে সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করেন। ২০১৫ এর পর এদেশে জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চায়। তখন আন্তর্জাতিক চাপ ছিল বাংলাদেশে আইএস আছে এটি রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকার করতে।  কিন্তু অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকার এটি অস্বীকার করে সন্ত্রাসীদের নব্য জেএমবি বলে প্রকাশ করে। এতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও ন্যাটোর কোন আগ্রাসনের সুযোগ নষ্ট হয়। কারণ আইএস অজুহাতে বঙ্গোপসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিতে আমেরিকা  যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন থেকে পরিকল্পনা নিচ্ছিলো বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করছিলেন। তাই হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসীদের আক্রমণের সন্ত্রাসের গোঁড়া ধরে টান দেন শেখ হাসিনা। অতি অল্প সময়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঢাকার বিভিন্ন জায়গা, সিলেটের আতিয়া মহল, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গীদের খুঁঁজে বের করে। এত দ্রুত সময়ে বিশ্বের আর কোন দেশ সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় শেখ হাসিনা সরকারের সফলতা তাই বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে।
শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়া ও ভারতকে পাশে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই অব্যাহত রেখেছে।                   
১০। প্রবাসীদের জন্য ক্ষেত্র বৃদ্ধি 
বিভিন্ন দেশে জনবল যাচ্ছে। জাপানে প্রায় ৫ লক্ষ জনবল নেয়ার স্মারক সই হয়েছে। মালয়েশিয়া ও আরব দেশগুলোতে শেখ হাসিনার কূটনৈতিক তৎপরতায় জনবল রপ্তানি ফের শুরু হয়েছে। নতুন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনবল রপ্তানির ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
১১।    মানবতার জননী
মিয়ানমারের বর্বর সেনা ও ঘৃণাবাদী বৌদ্ধ ভীক্ষুরা যখন অসহায় রোহিঙ্গা জাতির উপর গণহত্যা চালায় তখন মানবতার সাদা পতাকা হাতে সীমান্ত খুলে ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় দিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বলেন, প্রয়োজনে আমরা অর্ধেক খেয়ে এই অসহায় জাতিকে খাওয়াবো তবু তাদের মৃত্যুর মুখে আমরা ছেড়ে দিতে পারিনা। তার বদান্যতায় মুগ্ধ হয়ে ব্রিটেনের চ্যানেল৪ তাকে মানবতার জননী বা মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি প্রদান করে।
১২। জিওপলিটক্যাল স্ট্রাটেজি
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর পর সবচেয়ে বিচক্ষণ নেত্রী। কারণ তিনি একই সঙ্গে ভারত ও চীন দুই দেশকেই কূটনৈতিকভাবে শান্ত রেখে দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছেন। অন্যদিকে রাশিয়ান ফেডারেশন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়কে তিনি কূটনৈতিক তৎপরতা দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ ইত্যাদি থেকে বিরত রেখেছেন। বঙ্গোপসাগরের পাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে ভৌগোলিক সুবিধা অর্জন করছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তিনি ভারতের কাছ থেকে যেমন অস্ত্র কিনেছেন তদ্রুপ চীনের কাছ থেকে নিয়েছেন সাবমেরিন, রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত অস্ত্র। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মারকিন আধিপত্যবলয় ভেঙ্গে দেয়ায় শেখ হাসিনার পলিসির ভূমিকা অনস্বীকার্য। 
১৩। যুব সমাজকে রক্ষায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান
শেখ হাসিনা সরকার 'চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে ' নীতি ধারান করে দেশের মাদক সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। রাতারাতি বদলে যায় দেশের পরিস্থিতি। ছোটবড় সব মাদক সন্ত্রাসী, কারবারি আইনের আওতায় আসে। যুব সমাজ রক্ষা পায় মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে।
১৪। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বুক থেকে দুর্নীতিকে উৎখাত করতে বদ্ধ পরিকর। তাই ২০১৮ এর ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই জনগণের প্রিয় আস্থার নেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ দেন। তার এ শুদ্ধি অভিযান দলমত নির্বিশেষে শুরু হয়েছে। 
১৫। অন্যান্য অবদান
শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে, ঢাকায় মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলছে,  নদী রক্ষায় নির্দেশ, বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ক্রীড়াক্ষেত্রে অনন্য অর্জন, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি, দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া, হরতালমুক্ত দেশ, কওমি মাদরাসাকে মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা, নারীর ক্ষমতায়ন, যুবশক্তিকে উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত করা, ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ইত্যাদি।

শেষ কথায় বলা যায়, এতো অল্প কথায়, অল্প পরিসরে শেখের বেটি, জননেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ সরকারের কার্যাবলি পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপন সম্ভব নয়। আমরা চাই, বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য উচ্চতায় উঠুক শেখ হাসিনার হাত ধরে।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয়তু শেখ হাসিনা।                                                                                  


                       
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments