সর্বশেষ

শিয়া মুসলামনদের কাফের বলে আইএস-আল কায়েদা খারেজীদের প্রেতাত্মা

আপনার আশেপাশে যারা শিয়াদের কাফের বলে এদের ব্যাপারে সাবধান হবেন। কেবল নবী মুহাম্মদ (স) ও তাঁর নিষ্পাপ পরিবারকে ভালবাসার অপরাধে কেউ কাফের হয়ে যেতে পারেনা। মহানবী (স) এর পুরো জীবনের কোথাও বা তাঁর কোনো সাহাবী (রা) তাঁদের শাসনামলে মুসলমান হওয়ার পর বা ঈমান আনার পর কোন সম্প্রদায়ের উপর সামষ্টিক তাকফির করেছেন এর কোনো ঐতিহাসিক বা দালিলিক প্রমাণ নাই। আরব ও ইরানীদের ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বই এখন শিয়া-সুন্নী নামে পরিচিত হচ্ছে। আবার, কারবালার ঘটনায় হোসাইন (রা)কে সপরিবারে জবাই করাকে সমর্থন করা বা সে সময়ে নীরবতা পালন করাদের উত্তরপুরুষই হচ্ছে শিয়াবিদ্বেষী! এরা নিজের মনমতো না হলে আপনাকেও কাফের বলবে এবং এরা সহজেই গোঁড়া জঙ্গীদের দ্বারা মগজ ধোলাই খেয়ে আপনার আমার রক্তপাতকে জায়েজ করে ফতোয়া দেবে!  আইএস আল কায়েদা সন্ত্রাসীরা শিয়া মুসলমানদের 'রাফেজী/আলাওতি' ট্যাগ দিয়ে তাদের কাফের বলে হত্যা করতো। সেই কট্টর ওহাবী-খারেজী-তাকফিরি বয়ান পাবেন ইরান ও শিয়াবিদ্বেষীদের মন্তব্যে। 
কাসেম কেন ইসরায়েলের দালাল আইএস-আলকায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করে দিলো এই কষ্ট এদের বড় একটা অংশের মনে। সেটি সরাসরি প্রকাশ করতে পারেনা বলে 'কুদস ব্রিগেড সুন্নীদের হত্যা করেছে' এই কথা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে এরা। অথচ কথিত সুন্নী ওহাবী সৌদি আরবের সেনাদের হাতে ইয়েমেনের জায়েদী মুসলিমদের (যাদের বিশ্বাস সুন্নীদের চেয়ে খাঁটি বলে অনেকেই বলেন) হত্যাযজ্ঞ নিয়ে এরা নীরব, সুন্নী পাকিস্তানের চীনের উইঘুর মুসলিমদের ব্যাপারে নির্লজ্জ নীরবতা নিয়ে এরা মুখে কুলুপ আঁটে। এরা কেন শিয়া ইরান ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ায় তা নিয়ে কথা বলবেনা। হ্যাঁ, ইরান উইঘুর-রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বার্থপরের মতো চীনের পাশে থেকেছে। সেটি জিওপলিট্যাক জটিলতা। এর জন্য অবশ্যই ইরানের নিন্দা আমরা করবো যেভাবে অন্যান্য সকলের করি। রেডিও তেহরান বা পার্স টুডের কিছু অন্ধ ইরানের পদলেহনকারীদের দালালীর দায় ইরানের সাধারণ মানুষের উপর দেয়া যাবেনা। সবার ভুল ত্রুটি আছে, যুদ্ধে নিরপরাধ মানুষ সে শিয়া-সুন্নী-খ্রীস্টান-ইয়াজিদি-হিন্দু-নাস্তিক যেই মরুক সেটিই অন্যায়। সবাই কম বেশি এই অন্যায়ে অভিযুক্ত।  কিন্তু কেবল ইরানের প্রতি পৃথক বিদ্বেষ পোষণ ও ইরানী বা শিয়াদেরকে কাফের বলে দানবায়ন করা মানবিক কাজ নয়। তা বিনামূল্যে ইসরায়েলী-সৌদী ফান্ডেড প্রোপাগাণ্ডা হবে। এই ইহুদীবাদী ওহাব-তাইমিয়া-সালমান-বাগদাদীর মানসিক সন্তানদের অন্ধত্ব-গোঁড়ামী থেকে ইসলাম ও ইসলামী বলয়কে মুক্ত করতে না পারলে ইসলামের উপর ইসলামবিদ্বেষীরা 'সন্ত্রাসবাদের' মিথ্যা অভিযোগ আনার সুযোগ পেয়ে যাবে। অথচ আমরা সবাই জানি, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই গোঁড়াদের ফতোয়া, অন্যকে কাফের বলার আদিখ্যেতা দেখলে ইসলামকে খুবই কঠোর ধর্ম মনে হবে। অথচ ইসলাম হচ্ছে, 'সহজ-সরল জীবনব্যবস্থা'। সেই উত্তম জীবনব্যবস্থাকে ফতোয়াবাজ তাকফিরি সংকীর্ণর দল প্রতিনিয়ত জটিল ও কঠিন হিসেবে উপস্থাপনের জঘন্য চেষ্টা করছে। এদেরকে যার যার জায়গা থেকে প্রতিহত করুন যুক্তি-উপাত্ত-তথ্য দিয়ে। কারণ এদের জানাশোনা খুবই কম। কয়েক শ বছর আগের কনটেক্সট-টা কী ছিল, বর্তমানে  বিশ্বাসের কী অবস্থা এসব না বিবেচনায় এনে এরা কে কী ফতোয়া দিয়েছিল তাই দিয়ে মানুষকে বা সম্প্রদায়কে কাফের ঘোষণা দেয় অথচ কোরআন বা হাদিসে যা কোথাও নাই। এই মূর্খদের হাত থেকে ইসলামকে, শান্তিকে সুরক্ষা করো, প্রভু।
আপনি শান্তির পক্ষে থাকলে, আপনার পরিচয় হবে প্রভুর নিকট আত্মসমর্পণকারী শান্তিকামী হিসেবে, শিয়া-সুন্নী হিসেবে নয়। পশ্চিমা ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী আগ্রাসীদের ধ্বংসাত্মক গুলি-বোমাটি আপনাকে হত্যার সময় আপনি শিয়া না সুন্নী, বারো ইমামিয়া না জায়েদী, হানাফি না হাম্বলি তা পরীক্ষা করে দেখেনা। এই স্বাভাবিক বোধটুকু ফিরে না আসা পর্যন্ত মজলুম মুসলমানদের মুক্তি নাই...যদিও তেলনির্ভর পৃথিবীর জ্বালানীর ও সম্পদের (প্রাকৃতিক বা মানব যা হোক) উৎস তারা!
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments