সর্বশেষ

আসল সেমেটিক জাতি ফিলিস্তিনের আরবরা, ইহুদীরা এন্টি-সেমেটিক || ইহুদীবাদ ও খ্রিস্টান || Christian Zionism Bangla

ইহুদীরা প্রকৃত সেমেটিক জাতি নয়, আরবরাই প্রকৃত সিমাইট। ইউরোপ থেকে বিতাড়িত ধান্ধাবাজ জায়নবাদী ইহুদীরা সিমাইট জাতির ধারেকাছেও নেই
~~~
'সিমাইট জাতির দুইটি প্রতিনিধি এখন বর্তমান--আরব ও ইহুদী। এদের মধ্যে আরবরাই তাদের (সেমেটিক জাতিসত্তার) জাতির দৈহিক বৈশিষ্ট্য ও মানসিক গতিভঙ্গী অধিকতর রূপে রক্ষা করে এসেছে। তাদের ভাষা সিমাইট ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে সাহিত্যের দিক দিয়ে সর্বকনিষ্ঠ। তবে এ ভাষায় সিমাইট ভাষার শব্দরূপসহ অন্যান্য বৈশিষ্ট্য অধিক দেখা যায়। 

ইউরোপ ও আমেরিকায় সিমাইট বলতে ইহুদীদের বোঝায়। কিন্তু তাদের দেহের সেমিটিক বৈশিষ্ট্য (উন্নত নাসিকা, কালো চুল ইত্যাদি) আদতে মোটেই সেমিটিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ঐ বৈশিষ্ট্যগুলিই প্রমাণ করে যে, ইহুদীরা খাঁটি সিমাইট নয়। স্পষ্টই বোঝা যায় যে, সেকালে হিট্রাইট-হুররিয়ান ও হিব্রুদের মধ্যে যে বিয়ে-শাদি হয়েছিল এ বৈশিষ্ট্যগুলো তারই অবদান।

দেহ, মন, সমাজ ও ভাষার দিক দিয়ে আরবদেশীয় আরব--বিশেষ করে বেদুঈনরাই সেমিটিক গোষ্ঠীর সবচেয়ে খাঁটি প্রতিনিধি। এর কারণ তারা বাকি দুনিয়া হতে বিচ্ছিন্নভাবে মরুর বৈচিত্র‍্যহীন জীবন যাপন করে।

[পৃষ্ঠা ৫, আরব জাতির ইতিকথা, ফিলিপ কে হিট্টি, অনুবাদ ইব্রাহিম খাঁ, ১৯৯৫]

অবৈধ ইসরায়লের ইহুদীরা যে একটা ডাহা মিথ্যা প্রচার করে বেড়ায় যে তারা খাঁটি সেমিটিক রক্তধারার তার প্রমাণ এই গ্রন্থটি। দেখবেন, হলিউডের অনেক প্রপাগান্ডা চলচ্চিত্রে এন্টি-সেমেটিক হিসেবে আরব ও বাকি বিশ্বের মুসলমানদের দেখানো হয়। অথচ প্রকৃতপক্ষে প্রকৃত সেমেটিকদের বিরোধীতা করে ইহুদীরাই এন্টি সেমেটিক হিসেবে অগগ্রন্য ভূমিকা পালন করছে। উল্লেখ্য, সেমেটিক হচ্ছে পৃথিবীর কয়েকটি আদি জাতি বা মানবগোষ্ঠীর একটি যারা মানবসভ্যতার সূচনায় অবদান রেখেছে।
আরেকটি তথ্য হচ্ছে ব্যবিলনীয় ও মেসোপটেমীয় সভ্যতার রূপকার সেমেটিক জাতি। সেমেটিকদের এক অংশের নাম আমোরাইত। এদের একটি উপজাতি ক্যানানাইত।ক্যানানাইতরা ছিল প্রখর বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন জাতি। গ্রীকরা ক্যানানাইতদের বলতো ফিনিশিয়ান।আর মানবসভ্যতায় ক্যানানাইত বা ফিনিশীয়দের অবিস্মরণীয় অবদান বর্ণমালার উদ্ভব ও প্রচলন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে খ্রীস্টান শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের হাতে ধোলাই খেয়ে বিতাড়িত ইহুদীরা যখন জায়গা পাচ্ছিলোনা তখন সেমেটিক আরবরা নিজেদের জায়গায় একটু স্থান দিলো। সেই উড়ে এসে জুড়ে বসা ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী রক্তধারার ভণ্ড সিমাইটরা কিছুদিন যেতেই প্রকৃত সিমাইট তথা আরব মুসলমান, নাসারা ও ইহুদীদের উচ্ছেদ করে নিজেদের আধিপত্য ও জুলুমের উপনিবেশ গড়ে তুললো। যে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে গণহত্যাসহ গলাধাক্কা খেলো 'ইহুদীসত্তার জন্য' তারাই নতুন প্রতিষ্ঠিত ইহুদী বিষবৃক্ষের রক্ষক হলো। ইউরোপীয়দের ইহুদীবিদ্বেষ এর কাফফারা দেয়া লাগছে প্রকৃত সিমাইট জাতি আরব ফিলিস্তিনীদের। মানবতার সঙ্গে এর চেয়ে প্রতারণা, ধোঁকাবাজি ও নিষ্ঠুরতা আর একটিও কেউ দেখাতে পারবেনা।
ঈসা (আ) কে শূলে চড়ানোর দায়ে ইহুদীদের খ্রীস্টানরা জন্মগতভাবে ঘৃণা বা অপছন্দ করতো। এমনকি রোমানরাও ইহুদীদের দেখতে পারতোনা। অন্যদিকে মুসলিমরা যেহেতু বিশ্বাস করে যে, ঈসা (আ)কে আল্লাহ আসমানে তুলে নিয়েছেন সেহেতু তারা বনি ইসরায়েলের নিমকহারাম খাসলত সম্পর্কে জ্ঞাত হলেও ঢালাও ঘৃণাপোষণ করতোনা। বরং আহলে কিতাব হিসেবে খ্রিস্টানদের পাশাপাশি ইহুদি মেয়েদের বিয়ে করা জায়েজ। 
তারমানে ইহুদীদের মূসা (আ) এর মৃত্যুর পর যে এই যে ধাওয়া খাওয়া এটা করেছে মূলত খ্রীস্টানরা। কারণ, ইহুদীরা ঈশা (আ) কে ভণ্ড নবী হিসেবে বিশ্বাস করে। প্রতিটি ক্রুসেডার ইহুদিদের বিতাড়িত করেছে আল কুদস বা জেরুজালেম থেকে। যখনই মুসলিমরা আল আকসা আয়ত্বে নিয়েছে সে সময়ই কেবল ইহুদীরা এখানে আসার অনুমতি পেয়েছে। সর্বশেষ সালাউদ্দিনও জেরুজালেম থেকে ক্রুসেডার খ্রীস্টানদের বিতাড়িত করে মুসলিম, খ্রীস্টান ও ইহুদীদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেন। এমনকি উসমানীয় তুর্কিদের সময়েও তিনটি ধর্মের অধিবাসীরাই এখানে শান্তিতে বসবাস করেছে।
তো সেমেটিক ভূখণ্ডের সেই ইহুদীরা বা পৌত্তলিকরা কই গেলো সব? অবশ্যই হাজারো ইহুদি ইসলাম ও খ্রীস্ট ধর্মও গ্রহণ করেছে। সে কারণেই আরব ভূখণ্ডে ইহুদী সংখ্যায় কম ছিলো। তাদের মুসলিমরা তাড়িয়ে দেয়নি যেভাবে খ্রীস্টানরা করেছে। ইতিহাসে একবারই ইহুদী একটি গোত্রের ব্যাপারে কঠোর হয়েছিলো মুসলমানরা। সেটিও যুদ্ধাবস্থায় বিশ্বাসঘাতকতার কারণে। 

মুহাম্মদ (স) কে সত্য নবী হিসেবে চিহ্নিত করতে খ্রীস্টান পাদ্রিদের পাশাপাশি ইহুদি রাবাইরাও ভুল করেনি। কিন্তু তাদের যে জাত্যাভিমান যে শেষ নবী আসবে তাদের মধ্যে থেকে এটা না হওয়ায় ইসমাঈলের বংশধারার মুহাম্মদ (স) কে তারা মানতে পারেনি। অথচ আজকের ইহুদীরা যেভাবে ইব্রাহিম (আ)কে সম্মান করে তারচেয়ে অধিক করে মুহাম্মদ স এর জাতি৷ তারা সমগ্র মুসলিম জাতির পিতা মানে ইব্রাহিম (আ)কে। 

আজ ইউরোপ ও আমেরিকায় খ্রীস্টানদের মধ্যে নতুন একটি শাখা হয়েছে৷ খ্রীস্টান ইহুদীবাদী। Christian Zionist। নানা নামে এরা ইহুদীবাদী অবৈধ রাষ্ট্রটিকে সহায়তা করে। এদের পলিটিকাল আশ্রয় দেয় অধিকাংশ রিপাবলিকান ও কিছু ডেমোক্রেটিক সিনেটর। আছে AIPAC ও নানা লবি গ্রুপ। এরা নিজেদের ধর্মীয় ব্রান্ডিং করেছে ইভ্যাঞ্জেলিক্যাল খ্রিস্টান (Evangelical Christian) নামে। এরা ও অন্যান্য ইহুদীবাদী খ্রীস্টানরা সংঘবদ্ধ হয় Christian United For Israel (CUFI) ইত্যাদি সংগঠনের ছায়াতলে। এ ব্যাপারে খ্রিস্টান পাদ্রী, পোপ কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। সবাই যেন সুদখোর রক্তখেকো জায়নবাদের কাছে চিন্তা, বিবেক ও মাথা বিক্রি করে দিয়েছে। যেন এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা খ্রীস্টধর্মের কাছে!
অথচ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে খ্রীস্টানরা তাদের নবী হত্যার দায়ে  ইহুদীদের অপছন্দ করে এসেছে, এখনো অল্পসংখ্যক তা করে। কিন্তু বেশিরভাগ কেন ইহুদীপ্রেমী হয়ে উঠলো। যে মুসলমান খ্রিস্টানদের ঈশা (আ) কে মুহাম্মদ (স) এর পরেই সম্মান করে এবং প্রতিটি মুসলমান সেই ঈশা (আ) এর প্রতীক্ষায়ই অপেক্ষায় আছে-- খ্রিস্টানদের মতই যে মুসলমানরা পৃথিবীতে ইনসাফ ও সাম্যের জন্য ঈসা মসীহ (আ) এর অপেক্ষায় সেই মুসলমানদের ঘৃণা করে খ্রিস্টানরা কেন ইহুদীদের প্রতি প্রেমী হয়ে উঠলো---যে ইহুদীরা তাদের নিজস্ব মসীহ এর অপেক্ষায় আছে যাকে খ্রিস্টান ও মুসলমানরা বলছে 'দাজ্জাল বা এন্টি-ক্রাইস্ট'? এই ডিলেমা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে একাডেমিক, থিওলজিকাল ডিসকোর্স নেই৷ এটি নিয়ে আমার কাজ করার ইচ্ছে আছে৷ আসলে সময় করে উঠতে পারিনা।
ইভাঞ্জেলিক্যাল খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে মসীহ আসবে। এটা ইহুদীরা তাদের বুঝিয়েছে। এখন এই ইহুদী মসীহ আর খ্রীস্টান মসীহ যে এক নয় সেটা ইহুদীরা ভালো করেই জানে। এ কারণেই ওরা ইসরায়েলকে ওনলি 'জিউশ কান্ট্রি' করে, দে ইভেন ডোন্ট বিলিভ দ্যা ক্রিশ্চিয়ানস। কারণ, ওরা End Time Prophecy নিয়ে বেশ ভালো রকম পড়াশোনা করে৷ ওরা জানে ঈশা ইবনে মরিয়াম এলে অবধারিতভাবে মুসলিম আর খ্রিস্টানদের মধ্যে যৌথ বাহিনী তৈরি হবে আল আকসা বা আল কুদসকে মুক্ত করতে৷ হারানো ইহুদী গোত্রেরই একটি যারা ধর্মান্তরিত হয়েছে তারাও ঈশা আ এর সঙ্গে এসে জেরুজালেম উদ্ধার করে জলপাই গাছের সঙ্গে ঘোড়া বাঁধবে এটা জেনেই ওরা ফিলিস্তিনের জলপাই গাছগুলোও জ্বালিয়ে দেয় কী না---সে প্রশ্নও তোলা উচিত। 
যে কথায় ছিলাম, সিমাইট জাতি। গোটা ইউরোপ ও আমেরিকায় এন্টি জায়োনিজমকে 'এন্টি সিমাইট' নামের এই অস্ত্রে রূপান্তরিত করতে সমর্থ হয়েছে অবৈধ ইসরায়েল। এ কাজে তাদের সহায়তা করেছে একাডেমিশিয়ান, মিডিয়া ও ইহুদবাদী খ্রিস্টান রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী প্রমুখ। এদের 'এন্টি সিমাইট' হেইট ক্যাম্পেইনের জন্য ব্যবহৃত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হলোকাস্ট গালগল্প যেটিকে একজন ইহুদী তাত্ত্বিক নরম্যান ফিংকেলস্টেইন বলেছে ইহুদীবাদী লোপাটকারীদের ব্যবসার ইউনিক সেলিং প্রোপোজিশন (Unique Selling  Proposition-USP)।  তিনি ইহুদীদের ফেইক কান্না ও হলোকাস্ট ব্যবসা নিয়ে বই লিখেছেন 'Holocaust Industry' যেটিতে দেখিয়েছেন কীভাবে অতিরঞ্জিত করা হয় সংখ্যা, ঘটনা ইত্যাদিকে। আর এই অতিরঞ্জনের প্রোপাগাণ্ডার শিকার অধিকাংশ ইউরোপীয় আমেরিকান খ্রিস্টান। 

এসব কারণে জায়নিজমকে পরাজিত করতে হলে সবার আগে এই সিমাটি জাতিসত্তার আসল ইতিহাস তুলে ধরতে হবে৷ প্রকৃত সিমাইট জাতির বিরোধীতা করে, তাদের হত্যা করে, তাদের ভূখণ্ড দখল করে কোথাকার কোন শিকড়হীন ভণ্ডের দল সেমেটিক জাতিসত্তার ঠিকাদারি হয়েছে৷ এই একচেটিয়া ঠিকাদারিকে চ্যালেঞ্জ করে এদের গালগল্পকে উন্মোচন করে গলাধাক্কা দিয়ে এদের চুরি, বাটিপারি, খুন ও দস্যুবৃত্তিসম্পন্ন নষ্ট, দুষিত, অবৈধ রাষ্ট্রকে বিতাড়িত করে ফিলিস্তিন মুক্ত করে মানবতার শান্তির পতাকা উড়াতে হবে। এটাই সমাধান। আর ইনিয়ে বিনিয়ে ত্যাঁনা কাপড় পেঁচিয়ে যা বলা হয় তার অধিকাংশই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে ইহুদীবাদীদের জঘন্য দীর্ঘমেয়াদি দখলদারত্বের ঘৃণ্য এজেন্ডার সপক্ষে কাজ করে। 

ভিভা ফালেসস্তিন
ফিলিস্তিন মুক্তি পাক
জায়নবাদ নিপাত যাক
অবৈধ ইসরায়েল ধসে যাক
মানবতা মুক্তি পাক।

#VivaPalestina 
#FreePalestine 
#SaveGaza 
#BangladeshWithPalestine 
#StandAgainstIsraeliAgression
#zionismisapartheid 
#IDFTerror
#SavePalestinians 
#backoffisrael
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments