ভোরের আকাশের রক্তিম সূর্যটা দেখিনি বহুদিন,
দেখিনি আমার ছোট্র বাচ্চার হাতে টুকটুকে লাল বেলুন...
বাড়ির পাশের জলপাই খেতে ডাকতে দেখিনা লাল একটি মোরগ...আমি তবুও লাল দেখেছি
রক্তের ফোয়ারা আমার হাতে,জীবন সৃষ্টির পরেই আমি মৃত্যু দেখেছি।
আকাশে ধ্বংসের বীণা বাজছে,
অগণিত বোমায় বিক্ষত আমার হৃদয় দেখেছে
স্কুল ফেরত ছেলেটির ছিঁড়েভুড়ে যাওয়া দুটি পা!
গাজার প্রান্তে একদা কত গোল করেছে এই পাদুটো,হয়ত
কয়কশবার সে বল জড়িয়েছে জালে......
কতকাল না ঘুমানো রক্তলাল চোখে আমি দেখেছি
সদ্যমৃত চারবছরের শিশুটিকে...
তাঁর কপাল ফেঁড়ে বুলেট বেরিয়ে গেছে,মুখে হাসি!!
কোনদিন তার মা আর বলবেনা,
যেওনা ওদিকে তুমি,সাঁজোয়ার দখলদারেরা তোমার হাসি সহ্য করবেনা!!
যে বৃদ্ধা রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসতেই বলতো,
ওহে,কে যাও?তুমি নিশ্চয়ই মাজিদের বন্ধু...
এখন আর সে ডাকবেনা,তাঁর কন্ঠ আজ স্তব্ধ!
ড্রোনের আঘাতে ধসে যাও বাড়িতে চাপা পড়েছে সে।
যে ছেলেটি একটি খেলনা ৪৭ নিয়ে বলতো,
'৪৮ এর ক্যান্সার আমি তাড়িয়ে দেব'
সে আর ভিভে প্যালেস্টাইন বলবেনা উচ্চস্বরে...
স্প্রিন্টার তার বুক ঝাঁঝরা করেছে,তবু সে ছাড়েনি পতাকাটি!
শত শত মৃতের হাসিমুখ আমাকে বুঝিয়েছে,বাঁচতে হলে রক্ত দিতে হবে...
উড়ন্ত ড্রোনের আঘাত,ট্যাংকের গোলা,রাইফেলের গুলি সব কিছু আসবে
আমার রক্ত নিতে,
কত মৃত মুখ আমাকে তা বলেছে!
আমি তাও গাজা ছাড়িনি...
ওরা মরেছে,
মাতৃভূমিতে,পিতার বিচরণালয়ে তবু
ওরা রক্ত দিতে বারণ করেনি!
কোনদিন অবৈধ অত্যাচারীর শেষ দেখার আশায় এখনো রাত জাগি,
রক্তের প্লাবন সৃষ্টি করি,
ছিন্ন হয়ে ভিন্ন হয়ে যায় আমার প্রত্যঙ্গ...তবু জানি
আমি গাজার ফিলিস্তিনি ।।
[গাজার একটি শরনার্থী হাসপাতালের ডাক্তার মাজিদের ভাষায় আমি]
0 Comments