সাভারের আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর গ্রামেই সময়ের ভয়াবহ হত্যাকান্ড ঘটলো।এ পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ১৫৩টি(তথ্যসূত্র:প্রাইমখবর ডটকম)।
এ ঘটনাকে নেহায়েত একটি দুর্ঘটনা বলা অনুচিত।একই ঘটনা বারবার ঘটছে।কেন ঘটছে?পোশাক শিল্পে জড়িত শ্রমিকেরা কী মানুষ না?আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যাংকের ঋণের হাত থেকে বাঁচার জন্য পুঁজিবাদী হারামীদের এটা একটা নতুন খেলা ।
ভবন নির্মানের সময় উন্নতমানের তার,সকেট.মিটার ইত্যাদি ব্যবহার করলে ইচ্ছে করে হলেও আগুন লাগানোটা বেশ কষ্টের হতো।
মজদুরের দাম নেই এদেশে।প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীর শোকবার্তাই মৃতের পরিবারের সান্ত্বনা।
একটিবারের জন্য ঐ গ্রুপের মালিককে পুলিশ ডাকবেনা।
যদি 'দুর্ঘটনাকবলিত'কারখানার মালিকদের জবাবদিহিতার সুযোগ থাকতো তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটতোনা।
উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিসের কার্যাবলিও কেমন যেন গাছাড়া।বসুন্ধরায় আগুন লাগলে মিডিয়ার যে তোলপাড় সাভারের বেলায় তা দেখা গেলোনা।কারণ বসুন্ধরায় বার আছে,গায়ের দুর্গন্ধ পারফিউম মেখে ঢেকে রাখা আল্ট্রা মডার্ন নারী আছে।আশুলিয়ায় তার কিছুই নেই।জীর্ণশীর্ণ শরীরের গার্মেন্টসের মেয়েদের দোষ হচ্ছে ওদের পরিশ্রমের টাকায় আমরা কেএফসিতে খাচ্ছি,সেভেন আপ,কোকাকোলা,মাউনটেইন ডিউ ছাড়া হয়ইনা ।
রাতে আগুন লাগে!পাশেই বিশাল সেনাক্যাম্প।শত শত হেলিকপ্টার,সেনাবাহিনীর রয়েছে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন বাহিনী।প্রশাসনের তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার অভাবে অথবা ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি না করার কারণেই এতগুলো শ্রমিকদেবতার অকালমৃত্যু ঘটলো।
এ ঘটনার পরিসমাপ্তি আজই ঘটে যাবে।হয়ত মৃতদের পরিবার ২০ হাজার টাকার একটি চেক পাবে।সেই চেক নেওয়ার সময় প্রদানকারীর দিকে 'কৃতজ্ঞতার সাথে তাকিয়ে'ক্যামেরায় ধরা দিতে হবে।এরপর কেউ এইসব পরিবারের খোঁজ নেবেনা।পরিবারের প্রধান অথবা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিও কারো সন্তান,কারো স্ত্রী,কারো স্বামী,কারো ভাই অথবা বোন তা আমরা ভুলে যাই।
নাগরিক জীবনের কর্মচঞ্চলতা,স্বচ্ছলতার উত্স অনুসন্ধানে বরাবরের মতই ব্যর্থ আমরা।
0 Comments