সর্বশেষ

শুনতে কী পাও, ফেলানী বলছি ?

লেহেঙ্গা, জিন্স, স্কার্ট অথবা নাভি বের করে ফিনফিনে পাতলা শাড়ি পরে নয়,
পায়ে আলতা মেখে,সস্তা মোটা শাড়ি পরে বউ সাজার প্রবল বাসনা ছিল আমার ।
আমি ফেলানী ।
নিত্য দখলকৃত নিজভূমে কাজে যেতাম আমি,
কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে কাপুরুষের নির্মমতা মাঝে মাঝে আমাকে আহত করতো।
মায়ের মুখে এক মুঠো ভাত তুলে দিতে তবু আমি বেড়া ডিঙাতাম,
সেদিনো গিয়েছিলাম কাজে।
আমি আর ফিরে আসিনি,
ঘন্টার পর ঘন্টা কাঁটাতারে ঝুলেছি আমি ....
শরীরে এত মেদ ছিলনা যে এক নদী রক্ত ধারণ করবো,
না খাওয়া দেহের সব রক্ত জানোয়ার বিএসএফের বুলেট শুষে নিল,
আমি ঝুলে রইলাম কাঁটাতারে ....
আমার বিয়ের পিঁড়িতে বসা হয়নি,
আমি এখনো জানিনা সে সন্ধ্যায় মা কিছু খেয়েছে কী না,
জানিনা আমার মৃত্যু কতটুকু কাঁপিয়েছিল খুনীদের আত্মা !!
জানিনা আমার মৃত্যুতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অপসারণ করা হয়েছিল কী না ।
আমি জানিনা, তা জানিনা ।
আমারো একটা স্বপ্ন ছিল
বাসর রাতে লজ্জায় মাথা নামিয়ে রাখার।
সেই স্বপ্ন বিএসএফের সহ্য হয়না,
ফেলানীর স্বপ্ন ভেঙে দিতেই ওর অবৈধ জন্ম,
ফেলানীর রক্ত ঝরাতেই ওর হাতে অস্ত্র
ফেলানীরা ওদের ত্রাস,
ফেলানীদের স্বপ্ন দেখতে হয়না .....
স্বপ্ন দেখবে ক্যাটরিনা,সানি লিওন, কারিনা, পাওলিরা ...
আর বিএসএফের নাম শুনে প্রশংসায় আত্মহারা হারামজাদারা ।

বিএসএফের রক্তের সঙ্গে ফেলানীর স্বপ্ন বিপরীতার্থক ।
বেঁচে থাকাটা নিরর্থক কাঁটাতারের বেড়াটা ডিঙানোতেই সীমাবদ্ধ নয়!
ভারতমাতার বুক একদিন খালি হবেই !
এই আমি, এই ফেলানী
ফিরে আসবোই আমার হত্যার বদলা নিতে ।
ততক্ষণ পর্যন্ত বিএসএফের প্রতি এক খাবলা কফ সমৃদ্ধ থুথু দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারিনা ......
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments