সর্বশেষ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ঃ স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল এক সবুজ শিক্ষালয়


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চির সবুজ ক্যাম্পাসের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বছরের বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থাকেসংবাদপত্র টেলিভিশনে জাহাঙ্গীরনগরকে অনেক সময় নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় অসংখ্য কীর্তি ইতিহাস মেধাবী শিক্ষার্থী, স্বর্গসম প্রকৃতি এবং প্রতিভাবান শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি পরিবার গঠন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখানে এমন ১৯টি বিষয় তুলে ধরা হলো যা ইতিবাচক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে উপস্থিত করে

দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়এখানে সর্ব মোট ১৫ টি আবাসিক হল রয়েছেএরমধ্যে ছেলেদের জন্য টি এবং মেয়েদের জন্য টি হল । 
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক
প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসিক সুবিধা দিয়ে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটা সময় ছিল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে যেকটি আসন খালি হতো সেই কয়টি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো তবে তবে বিগত কয়েক বছর ধরে অনিয়ন্ত্রিত শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর কারণে সীমিত পর্যায়ের আসন সংকট দেখা যাচ্ছে। আল বেরুনী, শহীদ সালাম বরকত, মওলানা ভাসানী হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল কয়েকটি ছাত্র হলের নাম। শেখ হাসিনা হল, খালেদা জিয়া হল, প্রীতিলতা, জাহানারা ইমাম প্রভৃতি কয়েকটি ছাত্রী হলের নাম।

২। প্রাকৃতিক সেীন্দর্যর লীলাভূমি
শীতকালীন পাখির জন্য জাবির দেশব্যাপী পরিচিতি রয়েছে
 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় প্রাকৃতিক সেীন্দর্য ও ভূস্বর্গের লীলাভূমি। এখানের চিরসবুজ প্রকৃতিতে রয়েছে দেশী বিদেশী কয়েক প্রজাতীর বৃক্ষ এরমধ্যে আম, কাঁঠাল, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া, বহেরা, সেগুন, পলাশ, ছাতিম প্রভৃতি বৃক্ষের পাশাপাশি কয়েকশ ফুলগাছও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দিয়ে ঢুকতেই ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় বাহারী ফুল এছাড়া প্রতিটি হল অনুষদের মধ্যে গোলাপ, গাদা, হাসনাহেনার চাষ করে মালিরা রয়েছে জাপানী ফুলগাছও।
 
প্রজাপতি পাখি মেলা
বাংলাদেশের সর্ববৃহত্এবং বিশ্বের অন্যতম বড় প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সর্বাধুনি প্রাকৃতিক বাটারফ্লাই গার্ডেনপ্রজাপতি মেলা দেখতে প্রতি বছর ডিসেম্বরে জাহাঙ্গীরনগরে দেশের নানাপ্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেদেশের প্রজাপতি গবেষণার প্রবাদপুরুষ অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন প্রজাপতি মেলার আহবায়ক
 
প্রজাপতি মেলার আহবায়ক অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন।
প্রজাপতি মেলার মত করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় পাখি মেলাপ্রতি বছর শীতের সময় মেলার আয়োজন করা হয়শীতের পাখি দেখতে দেশের গণমান্য থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষ ক্যাম্পাসে পাখি দেখতে আসেপা খি মেলা প্রজাপতি মেলা জাবিকে দেশের মধ্যে অদ্বিতীয় করে তুলেছে

 ৪এশিয়ার বৃহত্তম গবেষণা কেন্দ্র 
 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো একটি আকর্ষণ হচ্ছে ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এটিই কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত এশিয়ার সর্ববৃহত্গবেষণা কেন্দ্র  
ড ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
গবেষণা কেন্দ্রে দেশের প্রতিভাবান গবেষকরা অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে গবেষণা কার্য সম্পাদনা করে থাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াত জীবন সঙ্গী ওয়াজেদ মিয়ার নামে এটির নামকরণ করা হয়েছে



পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাকেন্দ্র
বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিত্সাকেন্দ্র রয়েছে দেশের স্বনামধন্য মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাসকৃত চিকিত্সকরা এখানে ২৪ ঘন্টা সেবা প্রদান করেন তবে অনেক সময় ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আন্তরিকতার ঘাটতির অভিযোগ এনে থাকেন শিক্ষার্থীরাআবার চিকিৎসাকেন্দ্রে ঔষধও অনেক সময় পাওয়া যায়না। এম্বুলেনে্সেরও্র অভাব রয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে থাকেন।

দেশের একমাত্র নারী উপাচার্য
অধ্যাপক ড ফারজানা ইসলাম
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের একমাত্র নারী উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকফারজানা ইসলাম উপাচার্য প্যানেল থেকে নির্বাচিত নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপককে রাষ্ট্রপতি আচার্য আব্দুল হামিদ নিয়োগ প্রদান করেন ২০১৪ সালের ২ মার্চ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর সফলভাবে দায়িত্ত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি
 

গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ত্ব
প্রয়াত কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদী ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
 দেশের গণমাধ্যম জগতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীদের অবস্থান সুদৃঢ় প্রয়াত হুমায়ূন ফরিদী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন বর্তমান সময়ের শক্তিমান অভিনেতা সুভাশিষ ভৌমিক, শহীদুজ্জামান সেলিম, জাকিয়া বারি মম, ফারুখ আহমেদ, সজল, মনপুরার মিলি,সুমাইয়া শিমু, নৃত্যশিল্পী শিবলী প্রমুখ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এছাড়া স্বণামধন্য চিত্রনাট্যকর শুভাষিস সিনহা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। দেশের নাটকের ইতিহাসের কিংবদন্তি নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা

যৌন নিপীড়ন সেল
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র জাহাঙ্গীরনগরেই নারীর নিরাপত্তার জন্য যৌন নিপীড়ন সেল রয়েছে এই সেলে অভিযোগ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীরা বিচার পেয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি নারীর যৌন হয়রানী শীর্ষক কেইসগুলো সরাসরি উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে থাকা এই নিপীড়ন সেলে পাঠিয়ে থাকেন। তারপর তথ্য , প্রমাণ ও সাক্ষীদের যাচাই বাছাই ও শনানীর পর সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। ২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখে নারী নিপীড়নের অভিযোগে নিপীড়কদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

সাংষ্কৃতিক রাজধানী
 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় বাংলাদেশের সাংষ্কৃতিক রাজধানীবাংলাদেশের সংষ্কৃতি রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। 
পহেলা বৈশাখে জাবিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা
বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক সক্রিয় সাংষ্কৃতিক সংগঠন রয়েছেএর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, বিতর্ক সংগঠন জেইউডিও, আনন্দন, নৃত্য সংগঠন কালবৈশাখী, জলসিঁড়ি, সুস্বর, ধ্বনি উল্লেখযোগ্য একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়েই বছরে দুইবার নাট্যপার্বণ অনুষ্ঠিত হয়এছাড়া হিম উত্সব, পাখি প্রজাপতি মেলা, বসন্তবরণ পয়লা বৈশাখ বিপুল উত্সাহ উদ্দীপনায় পালিত হয়

১০ চত্ত্বর ভাস্কর্যের বিশ্ববিদ্যালয়
 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চত্ত্বর ভাস্কর্য রয়েছে এসব ভাস্কর্য বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতেই সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে দেখা যাবে অমর একুশে । 
অমর একুশে , জাবি
স্বাধীনতাযুদ্ধের ত্যাগ সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এটাতেএকটু এগিয়েই একটু ভিন্ন ধাঁচের এক বৃহত্শহীদ মিনার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় গ্রন্থাগারের সামনে রয়েছে ভাস্কর্য সংশপ্তক এক প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধাকে এখানে দেখানো হয়েছে নতুন কলা ভবনের পাশেই মুরাদ চত্ত্বরবটতলা যেতে চোখে পড়বে কবির সরণীবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি রয়েছেএছাড়া যাদের নামে হল তাঁদের সবার পাথরে খোদাইকৃত প্রতিকৃতি রয়েছেরয়েছে মুন্নী জুবায়ের সরণীপুরাতন কলা ভবনের সামনে রয়েছে মাটির তৈরি  মৃমঞ্চ
  
১১ বৈচিত্রময় নাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন কেউ বাইরে থেকে আসে তখন এখানকার স্থানগুলোর বিচিত্র নামে অনেকেই বিমুগ্ধ হন , আবার অনেকেই হন বিস্মিতএখানে রয়েছে টারজান পয়েন্ট মনে হতে পারে জঙ্গল কিন্তু এখানে চা ফুচকা পাওয়া যায় একসময় চায়ের দোকানদার মেহেরের নামে পরিচিত ছিল মেহের চত্ত্বর জাহাঙ্গীরনগরে রয়েছে সুইজারল্যান্ডঅবাক হচ্ছেন? মওলানা ভাসানী হলের পাশের কুয়াশাঘেরা শীতল অঞ্চলকে বলা হয় সুইজারল্যান্ড 
সপ্তম ছায়ামঞ্চ
এখানে লন্ডন ব্রিজও রয়েছেপরিবহন চত্ত্বরের পাশে আছে সুপারিতলা আল বেরুনী হলের পাশের লেকের নাম রঙপুকুরতার সামনেই পিঠাচত্ত্বরপিঠাচত্ত্বরে পিঠা ছাড়াও পাওয়া যায় সবজির চপ,পিঁয়াজু,বার্গার চাএখানে রয়েছে বৃন্দাবন। 
সুইমিংপুলের পাশের লেকের অপরপাশে রয়েছে মনপুরা দ্বীপএছাড়াও নতুন কলা ভবনের সামনের আড্ডা দেয়ার জায়গার নাম মহুয়াতলা , রয়েছে সপ্তম ছায়ামঞ্চ, পুরাতন কলা ভবনে রয়েছে হিজলতলা

১২দেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনার
দেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনারটি অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে
দেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনারটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত ৭১ ফুট উচ্চতার এই শহীদ মিনারটির সম্পূর্ণ কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নিনতুন কলা ভবনের সামনেই এর অবস্থান৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনকে সব অর্জনের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে তৈরি শহীদ মিনারের ভিত্তিমঞ্চের ব্যাস রাখা হয়েছে ৫২ ফুট এবং ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শহীদদের জানিয়ে ভিত্তিমঞ্চ থেকে উন্মুক্ত আকাশগামী তিনটি স্তম্ভের উচ্চতা রাখা হয়েছে ৭১ ফুট ঊর্ধ্বগামী প্রতিটি স্তম্ভের রয়েছে পৃথক পৃথক বিশেষ তাৎপর্য এর মধ্যে প্রথমটি 'বাংলা ভাষা- সাহিত্য-সংস্কৃতি', দ্বিতীয়টি 'মাটি-মানুষ, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, আন্দোলন-সংগ্রাম' এবং তৃতীয়টি 'স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি, মুক্তি গণতান্ত্রিক চেতনার' প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে শূন্যের দিকে উন্মুক্ত এই স্তম্ভগুলো আমাদের মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্বাধীন হতে শেখায় এবং আমাদের অসীমের দিকে গন্তব্যকে নির্দেশ করে শহীদ মিনারে ভিত্তিমঞ্চে ব্যবহার করা হয়েছে আটটি সিঁড়ি, যেগুলো হচ্ছে আমাদের দেশ- বিভাগোত্তর জাতীয় জীবনের স্বাধীনতা-অভিমুখী নানা আন্দোলনে তাৎপর্যমণ্ডিত আটটি বছর অর্থাৎ ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ ১৯৭১-এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং এসব আন্দোলনের ধারাবাহিকতার প্রতীক  সিঁড়ি থেকে আরেকটু দূর পর্যন্ত শহীদ মিনারের চার পাশে ইট বিছিয়ে তৈরি করা হয়েছে গোল চক্কর শহীদ মিনার তৈরিতে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি ইট লাল এই লাল হচ্ছে বিভিন্ন সংগ্রামের সময় ঝরেপড়া রক্তের প্রতীক প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে তৈরি অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর অনন্য এই শহীদ মিনারের নকশা করেছেন খ্যাতনামা স্থপতি রবিউল হোসাইন শহীদ মিনারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০০৪ সালের নভেম্বর এরপর ২০০৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ মিনারটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান

 ১৩বটতলার খাবার
 জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দর্শণার্থীদের কাছে পছন্দের জায়গা যেসব কারণে তারমধ্যে একটি হচ্ছে বটতলা এখানে খাবারের সমাহার রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সব ধরনের খাবার অত্যন্ত অল্প দামে এখানে পাওয়া যায়  
বটতলার বিচিত্র রকম খাবার
এখানে টাকি মাছ, রুইমাছ, শ্যুঁটকিসহ শত প্রকারের ভর্তা পাওয়া যায় বটতলার খাবারের মানও চমকার। বটতল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্যের সমাহার।



১৪সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ
দেশের সবচেয়ে বড় খোলা মঞ্চের নাম সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চমঞ্চনাটক উপভোগ করার জন্য মুক্তমঞ্চের চেয়ে উত্তম জায়গা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আছে কি না সন্দেহ
সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ
এক সঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার দর্শক মুক্তমঞ্চে নাটক দেখতে পারে নাটক ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন অনুষ্ঠান মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়





১৫ দেশের বৃহত্তম হল
বাংলাদেশের বৃহত্তম হল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিতবিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলকে এশিয়ার বৃহত্তম হলও বলা হয়  
মীর মশাররফ হোসেন হলের একাংশ
এই হলটিকে উপর থেকে দেখলে একটি প্রজাপতির মত দেখা যায় বর্তমানে হলটিতে প্রায় ৩০০০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন




 ১৬ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে অকৃত্রিম সম্পর্ক বিরাজমান আবাসিক হওয়ার কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে পরস্পরের মুখ একদম পরিচিতএকারণে আনন্দ,বেদনা, প্রাপ্তি উল্লাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিক্ষকদের যৌথ অবস্থান দেড়জুড়ে একটি দৃষ্টান্ত। 

১৭সাহিত্যজগত্
বাংলাদেশের বর্তমান সাহিত্য জগতের নেতৃত্ত্বে রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা আধুনিক বাংলা কবিতার কিংবদন্তি কবি অধ্যাপক খালেদ হোসাইন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করছেন । 
কবি খালেদ োসাইন জাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষ
এছাড়াও কবি শামীম সিদ্দিকী, কবি শামীম রেজা,কবি শোয়াইব জিবরান, কবি রিলকি রশীদ, কবি অনিরুদ্ধ কাহালি সাহিত্যজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র জেমকন সাহিত্য পুরষ্কার পাওয়া গল্পকার মেহেদি হাসান জাহাঙ্গীরনগরের ৩৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ভাষা বিশারদ হায়াত মামুদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন








১৮ মাশরাফি মুশফিকুর রহিমের বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের অন্যতম ভিত্তি জাতীয় ক্রিকেট দলএই ক্রিকেট দলের দুই জীবন্ত কিংবদন্তি মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং মুশফিকুর রহিম দুইজনই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বিপুল জনপ্রিয় নন্দিত অধিনায়ক এই দুই কাপ্তানই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাশরাফি বিন মর্তুজা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৩৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী তবে তিনি ইনজুরি অন্যান্য কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি আর আরেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী  
উপাচার্য এর কাছ থেকে সনদ নিচ্ছেন জাবি শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম
তিনি বিভাগ থেকে স্নাতক স্নাতকোত্তরে কৃতিত্ত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেনএখন বিভাগেই তিনি উচ্চতর গবেষণায় নিয়োজিত দুই কিংবদন্তি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব এরা ছাড়াও জাতীয় দলে খেলা ও বিপিএলের সুপারস্টার লিমন, এ দলের ক্রিকেটার রিয়েল, দেশের সেরা সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর, জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ওপেনার শারমিন আক্তার সুপ্তাও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত

১৯। জাবির ও একজন কিংবদ্তি অধ্যাপক ড. শরীফ
এনামুল কবির স্যার 

রসায়নের বিশ্বমানের শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির স্যারকে বলা হয় ধুনিক জাহাঙ্গীরনগরের রূপকার। তিনি সবচেয়ে বেশি ছাত্রবান্ধব উপাচার্য। তাঁর সময়ে বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জাবি সেশন জটকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে। তিনি একাডেমিক দিক দিয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। শরীফ স্যার বর্তমানে জাবির এলামনাএসোসিয়েশনের আহবায়ক এবং বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সদস্য হিসেবে কর্মরত। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
২০ জাহাঙ্গীরনগর বাংলাদেশ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। ১৯৭০ সালে যদিও এটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়। তবে ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারিকে জাবির প্রতিষ্ঠা দিবস ধরা হয় হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বাংলাদেশের জন্ম একই সঙ্গে প্রতি বছর যততম স্বাধীনতা অথবা বিজয় দিবস পালিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও তত তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে বাংলাদেশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বড় হয় এক সাথে, মানবতার কল্যাণের নিমিত্তে


সমাপনী
উপরের ছোট্র উনিশটি আলোচনায় জাহাঙ্গীরনগরকে ফুটিয়ে তোলার এক কঠিন চেষ্টা করা হয়েছে এখানেআশা করি এই ইতিবাচক বিষয়গুলো জাহাঙ্গীরনগরকে আরো পরিচিত ও প্রসিদ্ধ রে তুলবে এমন সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়াতে আসলে যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুক্ষণের জন্য চলে যেতে পারেন স্বর্গীয় পরিবেশে সময় সুযোগ করে ঢাকা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরের সাভারে অবস্থিত প্রায় সাতশ একরের এই ছোট্র পৃথিবীতে পরিবার সঙ্গী-সাথী নিয়ে বেড়াতে আসতে ভুল করবেননা আশা করি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েয় পক্ষ থেকে আপনাকে অগ্রীম শুভেচ্ছা
পাঠ অনুভূতি