সর্বশেষ

বঙ্গভঙ্গ,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তাঁর নোবেল প্রাপ্তি

আমি জানিনা আমার আগে এই প্রশ্ন কেউ তুলেছে কি না।এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে ভাবা উচিত।এ বিষয়ে গবেষণা,আলোচনা হওয়া এখন সময়ের দাবি।
১৯০৫ সালে ঢাকাকে রাজধানী করে 'পূর্ববঙ্গ ও আসাম' নামে একটি আলাদা প্রদেশ গঠন করে উপনিবেশবাদী ব্রিটিশ।যদিও এই বিভক্তিতে বাংলাদেশ তার বিশাল ভূখন্ড হারায় তবে কলকাতার বাবুদের বৈষম্যের ফলে নিপীড়িত পূর্ববঙ্গ ও আসামের মানুষ এতে খুশী হয়।কিন্তু পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের ফসল খেয়ে জীবীকা নির্বাহ করা ইংরেজভক্ত কলকাতার ব্রাহ্মণ্যবাদীরা এই বঙ্গভঙ্গের কড়া বিরোধীতা করে।তারা এই ইস্যুতে গোঁড়ামী শুরু করে।শতশত বছর ইংরেজদের দাসত্ত্ব মেনে নেয়া কলকাতার বাবু,জমিদারশ্রেণী ও সুবিধাভোগী রাজনীতিকরা বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতা করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।১৭৫৭ সালের পর থেকে যারা ইংরেজদের দাসত্ত্ব অবলীলায় মেনে নিয়ে নানা সুবিধা নিয়েছে ১৯০৫ সালে তারাই ইংরেজদের ব্যাপারে মারমুখী হয়ে ওঠে।কারণ পূর্ববঙ্গের 'চাষাভূষারা' ঢাকাকে কেন্দ্র করে নিজের ভাগ্য নিজে গড়বে।কারণ এপারের জমিদারী হাতছাড়া হয়ে যাবে।কারণ বাংলাদেশের জনগণকে আর শোষণ করা যাবেনা।
২।
বঙ্গভঙ্গের কট্রর বিরোধীদের একজন ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।বঙ্গভঙ্গ রদের দাবিতে কলকাতার ব্রাহ্মণ্যবাদীরা ইংরেজদের উপর সশস্ত্র হামলা করে।১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের পর এতোটা বড় বিপদে ইংরেজরা আগে কখনো পড়েনি।এদিকে ঢাকায় বঙ্গভঙ্গের পক্ষের শক্তি মুসলিম লীগ গঠন করে ১৯০৬ সালে।তবে কলকতার বর্ণবাদী বাবুরা শুরু করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম।পরিস্থিতি এতোটাই জটিল হয়ে পড়ে যে ভারতে ইংরেজদের যেন পতন হয় হয়।
৩।
ব্রিটিশ অনুরাগী রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত খেপে ওঠেন।তার জমিদারি আছে কুষ্টিয়ায়,তা হাতছাড়া হয়ে যাবে।তিনি কুষ্টিয়ার বাউল গগণ হরকরার সুর নকল করে বঙ্গভঙ্গ বাতিল করতে গান রচনা করেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধীতা করেন।তরুনদের লেলিয়ে দেন বঙ্গভঙ্গ রদ করার জঙ্গী আন্দোলনে শরীক হতে।তারফলে ক্ষুদিরামের সৃষ্টি হয়।ক'জন জানি যে ক্ষুদিরাম বসু ১৯০৮ সালে এই পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরোধীতা করে ফাঁসিতে ঝুলেছিল?
৪।
পরিস্থিতি ইংরেজদের যখন অনুকূলে ছিলনা তখন রবীন্দ্রনাথসহ অন্যান্য গোঁড়া জমিদারদের অনুরোধে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।কিন্তু ইংরেজদের মনে ভয় ঢুকে যায়।১৯১১ সালে আমাদের সাধের বঙ্গভঙ্গ বাতিল করে আবার কলকাতার প্রজা করা হয়।এর ঠিক এক বছর পর ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পান।রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির সাথে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কেন এতদিন আলোচনা করা হলোনা?
৫।
রবী ঠাকুর কে নোবেল দিয়ে কি ইংরেজরা কলকাতার লোকদের সন্তুষ্ট করতে চেয়েছে?সশস্ত্র আন্দোলনকে গান ইত্যাদির মাধ্যমে রক্তপাতহীন করায় কি ব্রিটিশরা সন্তুষ্ট হয়েছিল?এসব ঝামেলা মুক্তির উপায় হিসেবেই কি নোবেল পুরষ্কার দিয়েছে?রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলির অনুবাদকেই কেন নোবেল দেয়া হলো?হঠাত্‍ করে কেন ইংরেজিতে অনুবাদের কথা ভাবলেন তিনি?
৬।
বঙ্গভঙ্গ রদ করায় পূর্ববঙ্গ ও আসাম গর্জে ওঠে।তাদের থামাতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশরা।কিন্তু এটারও ঘোর বিরোধীতা করেন এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরম পূজনীয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।তার এই ঘাড়ত্যাঁড়া অবস্থাকে নমনীয় করতেই কি তাকে নোবেল পুরষ্কার দেয় ব্রিটিশরা?
৭।
সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের স্বার্থরক্ষায় নোবেল পুরষ্কার দিয়ে নানা আইকন তৈরি করে।আমরা দেখেছি ড ইউনুসকে শান্তিতে নোবেল দিয়ে পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দল গঠনের মদদ দিয়েছে পশ্চিমারা।মালালা ইউসুফজাঈকে শান্তিতে নোবেল দিয়েছে।এমনকি যুদ্ধবাজ ওবামাও নোবেল পেয়েছে।তাহলে রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাপ্তির রহস্য কি?তার সামগ্রিক সাহিত্য জীবন ফেলে এক ইংরেজ কর্তৃক অনুবাদকৃত Song of offerins কে কেন মনোনিত করা হলো?
**********************
সাহিত্যিক হিসেবে রবীন্দ্রনাথ যতটুকু সম্মান প্রাপ্তির যোগ্য আমরা তাঁকে তা দিতে কার্পণ্য করিনা।কিন্তু তাঁকে 'বিশ্বকবি','কবিগুরু' ইত্যাদি পূজনীয় শব্দ বলার বিপক্ষের দলের লোক আমি।কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে অনেক পিছনের সারির কেউ।এ কথা ব্রাত্য রাইসুও বলেন।আর রবীন্দ্রনাথের নামে সাহিত্য চুরির অভিযোগ রয়েছে।গানের সুরে তো ধরাই পড়েছেন।সারাজীবন বুর্জোয়া শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্বকারী রবী ঠাকুরের সমগ্র রচনায় পূর্ববঙ্গের নিম্নবিত্ত একদমই স্থান পায়নি।(আহমদ শরীফ)
চলুন রবীন্দ্র পূজা বাদ দিয়ে ভদ্রলোকের নোবেল প্রাপ্তির রাজনৈতিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক এজেন্ডা সম্পর্কে গবেষণা করি।আর আমি আপনি না করি,ইতিহাস কিন্তু ঠিকই তার আসল রূপ প্রকাশ করবে।সেই অপেক্ষায়...
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments