গৌতম বুদ্ধ।পৃথিবীতে যে কয়জন মহামানব অহিংসার পরম বাণী প্রচার করেছেন তারমধ্যে গৌতম বুদ্ধ অন্যতম।তাঁর প্রচারিত জীবন ব্যবস্থার নাম বৌদ্ধ ধর্ম।সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছে শান্তিপ্রিয় মানসিকতার জন্য বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শ্রদ্ধার পাত্র।বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে বাংলাদেশ একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।ভুবনবিখ্যাত তিনটি মহাবিহারের একটি সোমপুর বিহার যেখানে জ্ঞান বিজ্ঞান ও মানবতার শিক্ষা দেয়া হতো।সোমপুর বিহার বাংলাদেশের নওগাঁও অবস্থিত।
বৌদ্ধদের শান্তি ও অহিংসার প্রতি আকর্ষণের কারণে এ ধর্ম শুরু থেকেই জননন্দিত।তবে মঙ্গলদের বর্বরতা,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানীদের নৃশংসতা,চীনের উইঘুরে সংখ্যালঘুদের উপর নির্মমতা,মায়ানমারের রাখাইন সন্ত্রাসী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক অত্যাচার গৌতম বুদ্ধের অনুসারী হিসেবে কলঙ্কের দৃষ্টান্ত।এরা গৌতম বুদ্ধের নামকে ব্যবহার করে অত্যাচার করছে। এ থেকে বুদ্ধ সম্পূর্ণ মুক্ত।এরা বুদ্ধের প্রকৃত অনুসারী নয়।
২।
পৃথিবীর কয়েকটি ভয়াবহ মহাযুদ্ধের একটি কলিঙ্গ যুদ্ধ।খ্রীস্টপূর্ব ২৭১ অব্দে বাংলার বিখ্যাত সম্রাট অশোক কলিঙ্গ তথা উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশ দখল করতে আক্রমণ করেন।সেই যুদ্ধে লাখ লাখ কলিঙ্গবাসীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কলিঙ্গকে বাংলার মৌর্য সাম্রাজ্যের আওতায় আনা হয়।এ যুদ্ধের রক্তারক্তি ও গণহত্যাযজ্ঞ দেখে সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন।সেই থেকে বাংলা হয় বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের কেন্দ্র।কলিঙ্গ যুদ্ধের রক্তপাতে সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ আদিকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্ম ও শান্তির সম্পর্ককে প্রমাণ করে।সেই সঙ্গে বৌদ্ধধর্মের ক্রমবিকাশ ও প্রচারে বাংলার অবদান চলে আসে।
৩।
বৈশাখী পূর্ণিমায় জন্ম হয় গৌতম বুদ্ধের।এদিন তিনি পরম জ্ঞান তথা বোধিজ্ঞান লাভ করেন।ইসলামী পরিভাষায় এটি নবুওয়াত প্রাপ্তির মত।আবার এই দিনেই সিদ্ধার্থ তথা গৌতম বুদ্ধ এ পৃথিবী ত্যাগ করেন।এক কথায় শুভজন্ম,বৌধিজ্ঞান ও মহাপ্রয়াণ দিবসের ত্রিমিলন এই বৈশাখী পূর্ণিমা।বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে এ দিনটি তাই পরম পূজনীয়।এদিনের অপর নাম বৌদ্ধপূর্ণিমা।
দিনটি উপলক্ষে সকল বৌদ্ধধর্মাবলম্বীকে জানাই শুভেচ্ছা।অহিংসা হোক আমাদের সকলের পরম ধর্ম।অহিংসাই পারে পৃথিবীকে শান্তির স্বর্গোদ্যান করতে
0 Comments