সর্বশেষ

যে ৫ কারণে হিলারি ক্লিনটন হবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর কয়েক সপ্তাহ পরে। কে হচ্ছেন এই পরের প্রেসিডেন্ট তা পুরো বিশ্বের জন্যই গুরুত্ত্বপূর্ণ। এর কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্বর , অসভ্য ও অমানবিক পলিসি । এরপরেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বর্ণবাদী ও খুনী মানসিকতার রিপাবলিকান কুক্লাক্সক্লানপন্থীরা ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে । তো ধরা যাচ্ছে নভেম্বরের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে । কিন্তু নানা কারণে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী, সাবেক ফার্স্ট লেডি ও বর্তমান সেক্রেটারী অফ দ্যা স্টেট হিলারী ক্লিনটনের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া জরুরি । এটা শুধু আমেরিকানদের জন্য জরুরী না , এটি সমগ্র পৃথিবীর মানুষের নিরাপত্তার জন্য জরুরী । নিচে আমার বিবেচনায় আসা প্রধান পাঁচটি কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করলাম ।
১। ট্রাম্প কট্রর ভোগবাদী , মুনাফালোভী পুঁজিবাদী । হিলারী সমাজবাদী।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরোদস্তুর একজন ভোগবাদী আত্মকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী। চরম পুঁজিবাদী।সামষ্টিক উন্নয়ন ও গণমুখী কর্মের চেয়ে ট্রাম্প বরং মাত্র এক শতাংশ ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে মনোযোগি হবে। ইতোমধ্যেই ট্রাম্প ধনীদের উপর হিলারীর ইশতেহারে থাকা অতিরিক্ত ট্যাক্সের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। লোন নিয়ে ফেরত না দেয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে জীবনের চেয়ে টাকা বেশি দামী । তাই টাকার জন্যই সে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলবে । 
রেসলিং মঞ্চে দুই নারীর সাথে ভোগবাদী, মানসিকভাবে অসুস্থ ট্রাম্প ।
টাকার জন্যই আমেরিকাকে সুদখোর ইহুদী ব্যবসায়ীদের পূণ্যভূমি বানাবে । এই কদিন আগে যখন ট্রাম্প রেসংলিং মঞ্চে উঠতো তখন তার পিছনে যে গানটি বাঁচতো তা হচ্ছে “Money Money Money” । ডলার পূজারি এই ভোগবাদী ট্রাম্পের কাছে সারা বিশ্বটিই হবে পুঁজি, এমন কি মানুষের প্রাণও ।

অন্যদিকে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় বড় হলেও হিলারীর এবারের নির্বাচনী প্রচারণাটি গণমুখী এবং সমাজতান্ত্রিক । হিলারী যেন নিম্নবিত্তের মুখপাত্র, হিলারী প্রলেতারিয়েতের প্রতিনিধি । এই সাধারণের জন্যই হিলারীকে প্রয়োজন । আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে বলা যায় বারাক ওবামার মতই আরেকজন মানবতাবাদী প্রেসিডেন্ট পাওয়া যেতে পারে । ‍যারা হিলারীকে সিরিয়া ও ইরাক যুদ্ধের জন্য অভিযুক্ত করেন তাদের জানা নেই যে, এই অনন্ত যুদ্ধে সূচনা করে গেছে ট্রাম্পের গুরু ও জায়োনিস্ট ইসরাঈলের দাস রিপাবলিকান  জর্জ ডব্লিউ বুশ।

২। ট্রাম্প বর্ণবাদী মানববিদ্বেষী , হিলারী মানবতাবাদী

ট্রাম্প মানসিকভাবে অসুস্থ । তার কাছে আমেরিকায় বাস করা কৃষ্ণাঙ্গরা কুত্‍সিত , হিস্পানিকরা নাকবোঁচা , মেক্সিকানরা মাদকের সন্তান , আরব ও মুসলমানরা সন্ত্রাসী এবং নারীরা 'শূকর'! এমন অসুস্থ ও বাজে মানুষ যদি পুঁজিবাদী পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের কর্ণধার হয় তবে তা আমেরিকাকে বিপজ্জনক রাষ্ট্রে পরিণত করবে ।

বিপরীতে হিলারী ক্লিনটন পূর্বের সব ইমেজকে ছাড়িয়ে গেছেন একজন সত্যিকার অভিভাবক হিসেবে। হতে পারে হিলারী পূর্বে অনেক বিতর্কিত পলিসি নিয়েছেন ।
কিন্তু সেটি ট্রাম্পের মত অযোগ্য, অথর্ব ও অসভ্যর চেয়ে তাকে মন্দ হিসেবে প্রমাণ করেনা । ট্রাম্পের ঘৃণা চাষের বিপরীতে হিলারী যেন আমেরিকার ভাল মনের মানুষদের সন্তানের দুঃখে কাতর একজন মা । হিলারী আরব , মুসলিম , এশিয়ান , হিস্পানিক , মেক্সিকান , আফ্রিকান , ল্যাটিনো সকলের জন্য আমেরিকার দ্বার খুলে উদারতার পরিচয় দিতে চান ।
মেক্সিকানরা প্রকৃত আমেরিকান ভূখন্ডের আদিবাসীদের রক্তধরা
আর ট্রাম্প তাদের সকলকে ঘাড় ধরে আমেরিকা থেকে বের করে দিতে চায় । আচ্ছা ,আমেরিকার আদিবাসীরা যেমন নেভাদার আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানরা যদি ট্রাম্পকে বহিরাগত বলে বের করে দিতে চায়?


 


৩। হিলারী নারীবান্ধব মানুষ , ট্রাম্প নারীবিরোধী ক্যাপিট্যালিস্ট
 
ট্রাম্প ক্ষমতায় এলেই গর্ভপাতকে নিষিদ্ধ করবে বলে হুমকি দিচ্ছে । অথচ যৌনস্বাধীনতায় বিশ্বাসী আমেরিকায় ট্রাম্পের মত লম্পটদের প্ররোচনায় কিংবা অন্য যেকোন পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্খিতভাবে গর্ভপাতের প্রয়োজন হতে পারে । 
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমেরিকান নারীদের বিক্ষোভ মিছিল
নারীকে “শূকর” বলে উল্লাস করা ধাড়ি শূকরমানব ট্রাম্প তা বোঝেনা । সেটি হিলারী বোঝেন । তিনি নারীর পাশে থাকার কথা দিয়েছেন। একারণে সারা দেশের নারীদের অধিকাংশই হিলারীকে চাচ্ছেন ক্ষমতায়।
 
আবার নারী পুরুষ সমানাধীকারের বয়ান ছড়ানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনো কোন নারী প্রেসিডেন্ট আজ পর্যন্ত হয়নি । হিলারী যদি নারীদের আবেগকে ও নারী জাতিয়তাবাদকে জাগাতে পারে তবে তার নির্বাচনে জয় সময় মাত্র।

শরণার্থীদের বন্ধু হিলারী


হিলারী সিরিয়া , ইরাক , আফগানিস্তান, লিবিয়ার যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত শরণার্থীদের আমেরিকায় আশ্রয় দিতে চেয়েছেন । 
কসোভোর শরণার্থীদের সাথে ৯০ এর দশকে হিলারী
এটিও তাঁকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা ও আবশ্যকতায় অনেক এগিয়ে রেখেছে । যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে যুদ্ধ লাগিয়ে সেখানে অশান্তি তৈরি করেছে আমেরিকা ও ইউরোপ , সেহেতু সেখানকার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়া আমেরিকা ও ইউরোপের নৈতিক দায়বদ্ধতা ।

 



৪। আজ ট্রাম্পের টার্গেট ইসলাম ও মুসলিম , কাল হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-নাস্তিক । ট্রাম্পের আমেরিকা হবে ইহুদীবাদিদের । হিলারীর আমেরিকা মানুষের

ট্রাম্প চরম ইহুদীবাদী এবং মুসলিম বিদ্বেষী । এমনকি অর্থোডক্ত খ্রীস্টানদেরও ইহুদীবাদীরা ঘৃণা করে । সত্যি বলতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান শিবিরটাই পরমত,পরধর্ম , পরবিশ্বাসে অশ্রদ্ধাশীল। এবং প্রতিটি রিপাবলিকানই অবৈধ ইসরাঈল ও জায়োনিজমের সেবা দাস। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খুনী রুজভেল্ট থেকে ২০০১ এর খুনী বুশ এরা সকলেই রিপাবলিকান যুদ্ধবাজ। জায়োনিস্ট রথচাইল্ড পরিবারও রিপাবলিকানদের প্রতি সিমপ্যাথেটিক । ট্রাম্পও তার বিকল্প না। এশিয়ান ও চীনাদের প্রতি ঘৃণা তাদের । আরবদের প্রতি ঘৃণা তাদের। ফিলিস্তিনের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশীদের প্রতিও ঘৃণা ইহুদীপন্থীদের ।

এরমধ্যে ট্রাম্প কেবল সরাসরি মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা জানিয়েছে । এটা দেখে বহু আমেরিকান ও আমেরিকার বাইরের অনেকে ট্রাম্পকে সাপোর্ট করছে । 
ট্রাম্পঃঘৃণা-জিঘাংসা-বর্ণবাদ যার চোখেমুখে
কিন্তু তারা বুঝতে পারছেনা আজ যে ট্রাম্প মুসলমানদের ঘৃণা করছে কাল সেই ঘৃণা তার দিকেও যেতে পারে । কারণ ট্রাম্প একই সাথে “ ইহুদীবাদী ও শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ত্ব  (Zionism & White Supremacy)” তত্ত্বের মেীলবাদী বিশ্বাসী ।

জার্মান সেই কবি Martin Niemöller (১৮৯২–১৯৮৪) এর ভাষায় , প্রথমে ওরা সোস্যালিস্টদের জন্য এসেছিল, আমি চুপ করে ছিলাম কারণ, আমি সোস্যালিস্ট ছিলাম না ।... শেষে যখন আমার জন্য আসে কেউ কথা বলার ছিলনা ।

আজ মুসলিম ,কাল হিন্দু ,তারপর বৌদ্ধ ,তারপর খ্রীস্টান এবং সর্বশেষ নাস্তিক । ট্রাম্পের সাইকোপ্যাথিক আমেরিকায় শুধু জায়োনিস্ট ও ইহুদীরাই থাকবে। তাই Republican Hindu Coalition এর ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইনডিয়ান আমেরিকানরা যতই ট্রাম্পের পক্ষে দাঁড়াক না কেন তারা নিজেদের বিপদের খাল খনন করছেন । কু ক্লাক্স ক্লানের জঙ্গীবাদীতা সম্পর্কে অজ্ঞতাই তাদের ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে উত্‍সাহ যোগাচ্ছে। এ ঘোরে গুঁড়েবালি পড়লো বলে ।

অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটন নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র ও পৃথিবী জুড়ে ঘৃণার বাষ্প অপেক্ষাকৃত কম হবে । সেটাই মানবতার জন্য প্রয়োজন । তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম হিলারীও মন্দ । তবে জেনে রাখুন , হিলারী ঐ মন্দের মধ্যে অনেক ভালো । ট্রাম্পের পরে কোন মন্দ আর ‍দুনিয়াতে নেই, থাকতে পারেনা। প্রকাশ্যে মানুষকে ঘৃণা করার কথা ছড়িয়ে কিভাবে সে জাতিসংঘের সদরদপ্তর থাকা দেশের প্রেসিডেন্ট হবে?

৫। হিলারী ক্লিনটন হবেন প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্প হবেন প্রথম নারীবিদ্বেষী, কট্রর ঘৃণার ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ । এই দেশ বিশ্বব্যাপী নারীদের ক্ষমতায়নের বয়ানের জন্য বিখ্যাত । কিন্তু আজ পর্যন্ত সেখানে কোন নারী প্রেসিডেন্ট হয়নি । এই প্রথম একজন নারী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ক্ষমতায় যাওয়ার কাছাকাছি । আমেরিকানরা জাতিগতভাবে নতুনত্ত্বকে স্বাগত জানায় । সেই হিসেব হিলারীর জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল । আবার পুরো আমেরিকার মধ্যে যদি ৩০ শতাংশ নারীও হিলারীকে ভোট দেয় তবে নারীকে ঘৃণা করা ট্রাম্প বিপুল ব্যবধানে পরাজিত হবে এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু বাস্তবে কি তাই হবে? 
নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের অসভ্য উক্তি!
হবেনা , কারণ ট্রাম্প রিপাবলিকান হস্তি । জন্মগতভাবে রিপাবলিকান পরিবারে জন্ম নেয়া নারী ট্রাম্পকেই বেছে নেবে । এটা নারীর জন্য কলঙ্কজনক ব্যাপার হলেও ।
তবে আশার কথা হচ্ছে, আমেরিকান পররাষ্ট্রনীতি যতই আগ্রাসী হোক সেখানে উদারতবাদ এখনো ভাল রকম চর্চা হয় । আমেরিকা একমাত্র সুপার পাওয়ার যারা জাতীয়ভাবে বহুমাত্রিক রক্তের মিশ্রণে জন্ম নেয়া প্রজন্ম দিয়ে একটি নতুন আমেরিকান জাতীয়তাবাদ তৈরি করেছে । সেখানে সেকারণে দেখা যায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকান, ইনডিয়ান/আরব/এশিয়ান/আফ্রিকান/হিস্পানিক/মেক্সিকান / ল্যাটিন/জার্মান প্রভৃতি আমেরিকান । এই নয়া পরিচয় স্বত্ত্বা দিয়ে এক অঘোষিত সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। 
হিলারীর হাসিমুখ
আর এই বহুমাত্রিকতাকে গ্রহণ করার জন্যই আফ্রিকান আমেরিকান বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ।
 
 সেই গ্রহণযোগ্যতার ধারাবাহিকতা যদি ৫০ শতাংশ আমেরিকানও ধারণ করে থাকে তবে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারী ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট এবং প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিবেন হিলারী ডিয়ানে রডহ্যাম ক্লিনটন ।

 

 




                             
 আমেরিকান নির্বাচন সম্পর্কে কিছু অজানা কথা
ক। ইলেকটোরাল কলেজ

আমেরিকার নির্বাচনে সরাসরি প্রেসিডেন্টকে সরামরি জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত করা হয়না । ৫৩৮ টি ইলোকটরাল কলেজ আছে । সেই কলেজের মধ্যে সর্বাধিক ২৭০ টি কলেজের সমর্থন যে পায় সে হয় প্রেসিডেন্ট । তবে পপুলার ভোটের গুরুত্ত্ব রয়েছে । 
এখন পর্যন্ত পপুলার ভোটের মতই ইলেকটোরালেও এগিয়ে রয়েছেন গাধা প্রতীকের ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন
পপুলার ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি স্টেট তার ইলেকটোরাল কলেজ নির্বাচিত করে থাকে । তাই যখন দেখা যায় আমেরিকানরা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছে তখন আসলে তারা মূলত তাদের স্টেটের ইলেকটোরাল কলেজকে ভোট দিচ্ছে ।

ইলকটোরাল কলেজের সাথে সাধারণত পপুলার ভোটের সামঞ্জস্য থাকে । শুধুমাত্র ২০০০ সালে পপুলার ভোটে পরাজিত জর্জ ডব্লিউ বুশ ইলোকটরাল কলেজে ২৭১ টি ভোট পেয়ে আল গোরকে পরাজিত করেন । আর আরেকটি কথা । একটি স্টেটে যে পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিজয়ী হন সেই স্টেটের সমগ্র ইলোকটোরাল কলেজ ঐ পার্টির হয়ে যাবে । ইলেকটোরাল কলেজের জন্য পার্টি নিজেদের যোগ্য প্রার্থী দিয়ে থাকে । এ নিয়ে পরে বিস্তারিত একটি নিবন্ধ লিখবো ।

খ। আমেরিকান নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব

এই প্রথম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র তার অভ্যন্তরের নির্বাচনে ভিন্ন কোন দেশের প্রভাবের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করছে । সেটি হচ্ছে রাশিয়া । ডেমোক্রেটিকদের অভিযোগ রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় অার্থিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সমর্থন দিচ্ছে চিরশত্রু রাশিয়ার পুতিন প্রশাসন । 
রাশিয়ার প্রোপাগান্ডা মিডিয়া RT তে উইকিলিক্স ও হিলারী
রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত প্রোপাগান্ডা মিডিয়া আর টি বা রাশিয়া টুডেতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসা করে সংবাদ প্রচার করা হয় । একই সাথে হিলারীর সমালোচনা করা হয় । হিলারীকে বলা হয় চীনপন্থী । এ ধরনের কথাবার্তা সাধারণত বাংলাদেশের নির্বাচনে হয় । এখন তা পৌঁছে গেছে আমেরিকা পর্যন্ত।

আমার মনে হয়, জুলিয়ান এসেইঞ্জ কিংবা স্নোডেন প্রভৃতি হুইসেল ব্লয়ারদের রাশিয়াই দীর্ঘদিন ধরে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এমন অবস্থায় এনেছে । এমনকি রাশিয়ান হ্যাকাররা হিলারী ক্লিনটনের ইমেইল কেলেঙ্কারীর জন্য দায়ি বলে অভিযোগ উঠেছে । চিরকাল অন্য দেশের অভ্যন্তরে নাক গলানো আমেরিকার এখন কেমন লাগছে নিজেদের ঘরে রাশিয়ার নাসিকা গলানো দেখতে? এরা যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাক গলায় তখন আমাদেরও খারাপ লাগে । শরাফত করিম আয়নার মত আমেরিকারে বলতে চাই, এখন বোঝা গেলো ব্যাপারটা?
গ। যে-ই আসুক আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি একই থাকবে

সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি প্রায় অপরিবর্তনীয়ই থাকে । যেটুকু হবে তাও অনেক ধাপ পেরিয়ে । নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে ক্ষমতার সুষম বণ্টনের কারণে প্রেসিডেন্ট চাইলেই যা ইচ্ছে করতে পারবেনা । তাই ট্রাম্প বা হিলারীর পরেও আমেরিকায় অনেক কিছু করার থাকে ।

                                                      শেষকথা

এখন দেখা যাক নির্বাচনে কে বিজয়ী হয় । এবারের নির্বাচনে যে প্রার্থীই বিজয়ী হোক তা বিশ্বে একটি নয়া প্যারাডাইমের সৃষ্টি করবে । সেটি সামলে নিতে বিশ্বকে ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হতে পারে । তো দেখা যাক কি হয় নভেম্বরের মঙ্গলবারে । 
হিলারী যেন মানুষ ও মানবতার প্রার্থী
আমেরিকা ও দুনিয়ার জন্য মঙ্গল না অমঙ্গল আসে সেটি ঐ মঙ্গলবারই নির্ধারণ করে দেবে
নিঃন্দেহে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখানে অমঙ্গল এবং হিলারী ক্লিনটন মঙ্গল  
                                                       আমরা মঙ্গলেরই বিজয় কামনা করি
পাঠ অনুভূতি