সর্বশেষ

জোত্‍স্নাচ্ছ্বাসে কয়েকটি জীবনবোধ

পুবের দিগন্তের সামান্য উপরে যে চাঁদ চেয়ে থাকে
ছড়িয়ে ফ্রুকটোজ আলো প্রেমহীন ভূমিতে
জোত্‍স্নাচ্ছ্বাসের প্রবল চাপে ভাসিয়ে দেয় সে মানবিক পৃথিবী
এবং
প্রায়শই সমগ্র প্রাণীজগত্‍ ।

রাতেয় গভীরতায় ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক প্রখর হয়
নিঃশব্দে পিচঢালা সংস্কারহীন রাস্তায় বেকার যে যুবক চাঁদের আলোয় হাঁটে,
সন্ধ্যার আগেই যে প্রোষিতভর্তৃকার রাতের রান্না শেষ
ও যে তরুণী উনিশটি হেমন্ত পার করেও একটি প্রেমপত্র পায়নি
এমন চাঁদ বড় বিভ্রান্ত করে তাদের ;
বঞ্চিতকে প্রাকৃতিক লাঞ্ছিত করার কী সুনিপুণ প্রক্রিয়া !

আরো মধ্যরাতে জোত্‍স্নার প্লাবনে ঝকঝকে টিনের চালে অচেনা পাখির নাড়াচাড়া-
সৌখিন প্রেমের মাখামাখির পর বিয়ে হওয়া গোমড়ামুখো দম্পতি,পরস্পরের প্রতি বিতৃষ্ণা এখন উল্লেখযোগ্য
অস্থিতিশীল সেই ঘৃণ্য ব্যভিচারিণী,প্রতি রাতে যে স্বামীকে কৃত্রিম শিত্‍কারে প্রতারিত করে
ও পছন্দের মেয়ের সামনে তীব্রভাবে অপমানিত কিশোরকে
এই চাঁদ কাল্পনিক এক নেশায় ফেলে দেয়;
এদের কেউ বিষ খায় জেনে,কেউ বিষ হয় নিজে ।
পশ্চিম আকাশে বার্ধক্যে চলে যাওয়া চাঁদেরও অশিষ্টযৌবন-
যে বৃদ্ধের কয়েকটি পুত্র বেঁচে থেকেও ঘরের সংকুচিত জায়গায় থাকতে হয়
আর সারারাতা বিছানায় এপাশওপাশ করে ভাঙাকন্ঠে আযানের প্রতীক্ষা,
ছেলের উপস্থিতিতে যে মাকে পুত্রবধূ তার স্বামীর ভাত খাওয়ার খোটা দেয়
তার অপ্রকাশ্যে চোখ থেকে ঝরে পড়া প্রতিটি জল কণা,
লম্পটের লাম্পট্যের ফলে পিতাহীন সন্তানের সেই মা
রাতের শেষ প্রহরের এই চাঁদ এদের বিদ্রুপ করে ;

তারা ফিরে যেতে চায় জন্মসঙ্গমক্ষণে-যেন আর কোন প্রাণ না আসে এ ভুবনে ।
আর কোন চাঁদ যাতে এভাবে ভাবাতে না পারে
আর কোন জোত্‍স্না নোনা জল ঝরাতে ।
১৮ অক্টোবর, ২০১৩
পাঠ অনুভূতি