আমরা কারা? কোথা থেকে এসেছি আমরা? কোথায় যাবো ফিরে?
এই তিনটি দর্শনের একেবারে প্রাথমিক স্তরের প্রশ্ন যার উত্তর একবিংশ শতাব্দির মানুষও বের করতে পারেনি। এই প্রশ্নের পরে যে প্রশ্নটি মানুষকে ভাবিয়েছে তা হচ্ছে ‘ভাগ্য’। ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত ? নাকি মানুষ নিজেই এর নির্মাতা? ইচ্ছার গুরুত্ত্ব কতটুকু ভাগ্য পরিবর্তনে? জীবন কি খেলা? কে কাকে নিয়ে খেলছে এখানে ?
চলচ্চিত্রের নাম Run Lola Run । জার্মান চলচ্চিত্র। ১৯৯৮ সালে এটি মুক্তি পায়। জার্মান ভাষায় নাম Lola Rennt। পরিচালক টম টিকভের (Tom Tykwer)। উপরে যে কথাগুলো বলেছি তা মূলত এই চলচ্চিত্র দেখে আসা অণু উপলব্ধি। ফিল্মটি লোলা নামের এক তরুণীর জীবনকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায় চরম উৎকন্ঠা নিয়ে।
চলচ্চিত্রের শুরুতেই কবি টিএস ইলিয়টের রহস্যময় একটি কথা লেখা আসে যার মর্মার্থ এমন যে, মানুষ রহস্যময় পৃথিবীতে অনুসন্ধান করা কখনোই বন্ধ করেনা এবং সর্বশেষ যেটা পায় তা হচ্ছে সেই আদিবিন্দুই অথচ তাই যেন নতুন মনে হয়। পরিচালক জীবনকে একটি ফুটবল মাঠ, গোল বল এবং খেলোয়াড়ের সমন্বয় হিসেবে দেখেছেন বলেই সাবেক জার্মান ফুটবলার, কোচ এবং নাৎসি সেনা সেপ হারবারগারের বিখ্যাত উক্তি After the Game is Before The Game দিয়ে ফিল্মে লোলার জীবনের ধাঁধাঁ, উত্তেজনা ও উৎকন্ঠার খেলা শুরু করেন।
লোলাঃ এক যোদ্ধা তরুণীকে দেখেছি
লোলা তার সঙ্গী ম্যানির টেলিফোন কল থেকে জানতে পারে যে, স্মাগলিং করতে গিয়ে লোলাকে সঠিক সময়ে না পেয়ে মানি এক লক্ষ ডয়েচেমার্ক (জার্মান মুদ্রা) ট্রেনে ফেলে এসেছে। সেটি একটি গৃহহীন ব্যক্তি নিয়ে নিয়েছে বলেই ম্যানির বিশ্বাস। এখন ২০ মিনিটের মধ্যে যদি ঐ টাকা গ্যাংস্টারের কাছে না দিতে পারে তবে ম্যানিকে খুন করবে ওরা। লোলা ছাড়া কেউ উদ্ধার করার নেই।
লোলা দৌড়ে তার বাবার ব্যাংকে চলে আসে। আসার পথে একাধিক মানুষের ভবিষ্যৎ দেখতে পায় লোলা। বাবাকে পরকীয়া করতে দেখে ফেলায় বাবা বিব্রত হয় এবং লোলা বিপুল পরিমাণ টাকা চাইলে তাকে অফিস থেকে বের করে দেয় বাবা। এবং এই কথা জানায় যে, লোলা আসলে অন্য কোন পুরুষের সন্তান। কোকিলের ডিম্ব। সেই সাথে লোলা ও তার মাকে তিনি ত্যাগ করে ঐ ভদ্রমহিলাকে বিয়ে করতে চান বলেও জানিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন লোলাকে।
পুরুষের অধৈর্য আচরণঃ
লোলা অনেকটা আঘাত পেয়ে প্রাণপণে দৌড়ে নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছাতে না পারায় ম্যানি পাশের শপিংমলে ঢুকে ডাকাতি করতে যায়। লোলার চিৎকার সে শুনতে পায়না। লোলা ভালবাসা মানুষের জন্য অপরাধে জড়িয়ে যায় এবং টাকা নিয়ে দুজনে পুলিশের তাড়া খেয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়ায়। হতাশ ম্যানি রাগে টাকার ব্যাগ আকাশে ছুঁড়ে দিলে পুলিশ আতঙ্কিত হয়ে গুলি ছোঁড়ে যা এসে লোলার বুকে লাগে।
লোলার উত্তরের আগেই অনেক প্রশ্ন রেখে শেষ হয় Run Lola Run।
***************************************************************************** রান লোলা রানের নন্দনতত্ত্বঃ
*কেন ভালবাসি আমরা? এটা কি সত্য?
চলচ্চিত্রটিতে কিছু বিশেষ বিষয় পেয়েছি যা বিস্মিত করেছে। যেমন একজন নারী লোলা এবং তার সংগ্রামের অভিনবত্ত্ব। লোলা তার প্রতি প্রেমিকের ভালবাসার নিশ্চয়তা চায়। সে ফ্যাক্ট জানতে চায় কেন সে-ই ভালবাসার যোগ্য কিংবা কেন ম্যানি হাজার নারীর মাঝে তাকে ভালবাসলো? সে কেন অনন্য? সে কি অনন্য? ম্যানি লোলাকে খুশী করতে বা নিজে সংশয়ী হয়ে লোলাকে ভালবাসার কথা প্রকাশ করে। লোলা জানতে চায়, তার আগে অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত হলে তাকেই কি ম্যানি একই কথা বলতোনা? এই প্রশ্নের জবাব ম্যানি দিতে পারেনি। আসলে এই প্রশ্নের জবাবের পিছনে মানুষ আজো ছুটছে। নয় কি?
* চিৎকার চিরকাল ভেঙে ফেলে সোস্যাল স্ট্রাকচার
ফিল্মটির দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাপার নজর কেড়েছে। সেটি হচ্ছে লোলার চিৎ্কার। লোলা যখনই নির্মম বাস্তবতা কিংবা তীব্র প্রতিবন্ধকতার সম্মুক্ষিণ হয়েছে তখনই সে চিত্কার করেছে। সে চিৎ্কার অভূতপূর্বে। তাতে লোলার পারিপার্শ্ব সন্ত্রস্ত্র হয়ে তার পথ ছেড়ে দিয়েছে। এটা দিয়ে নির্মাতা মনে হচ্ছে সমাজকে চ্যালেঞ্জ করাকে শৈল্পিকরূপে ফুটিয়েছেন। বিসৃঙ্খলা ছাড়া সমাজ পরিবর্তন করা যেন সম্ভব নয়। একজন নারী চিৎ্কার করলে তথা প্রতিবাদ করলে সে তার অধিকার তো পায়ই সেই সাথে বিনির্মাণ (Deconstruct) করে সামাজিক নীতি ও গ্রহণযোগ্যতা। লোলাকে তাই চরম বিপদে নিজের অস্তিত্ত্ব রক্ষায় সমাজের স্বাভাবিকতায় আঘাত করতে দেখা যায়। লোলা যেন আমার কাছে আবু ইসহাকের ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ উপন্যাসের চির সংগ্রামী জয়গুন।
সময় ও ধর্মকে আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টাঃ
ফিল্মটিতে সময়ের উপর গুরুত্ত্ব দেয়া হয়েছে। সামান্য এক সেকেন্ড সময়ও যে মানবজীবনকে কতট প্রভাবিত করতে পারে তা দেখা যায় লোলার ভয়ঙ্কর ২০ মিনিটের বিচিত্র ঘটনাসমূহ থেকে।
আর লোলার গির্জার নানদের চীরে দেীড়ের দৃশ্যায়নকে আমার মনে হয়েছে নারী প্রতি ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গীকে চ্যালেঞ্জ করার শিল্পসম্মত উপস্থাপনা।
দূর্বোধ্য কিছু কিছুঃ
চলচ্চিত্রের কিছু বিষয় বুঝতে পারিনি। ঠিক কিভাবে লোলা নতুন নতুন টাইমফেইজ তৈরি করছে বা সেখানে প্রবেশ করছে সেটির কোন উত্তর নেই। আবার পুরো চলচ্চিত্রে সকল চরিত্রই লোলার ভাবনার উপর নির্ভরশীল যেন। ব্যাপারটি এমন যে লোলা চাইলে পার্শ্বচরিত্র তিনটি পৃথক ভবিষ্যৎ তৈরি করেছ। এটা কিভাবে সম্ভব? নির্মাতা ঠিক কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বটি চলচ্চিত্রে দেখাতে চেয়েছেন সে বিষয়ে সংশয়ী হয়েছি। টাইম মেশিন, নাকি প্যারালাল ইউনিভার্স নাকি স্রডিঞ্জারের প্যানডোরা বক্স, নাকি হিউম্যান বিহেভিয়্যার এটা নিয়ে দর্শকের মাথায় ঘোরপাক খেতে পারে। তবে তত্ত্ব যাই হোক না কেন চলচ্চিত্রটি দেখে প্রায় এক ঘন্টা ১৩ মিনিট লোলার সাথে সাথে দেীড়িয়ে ভিন্ন রকম এক মজা পেয়েছি...। আপনিও পাবেন ,নিশ্চিত ।
রান লোলা রান দেখে সর্বশেষ উপলব্ধি, ‘ জীবনে বেঁচে থাকার অপর নাম দেীড় ’।
চলচ্চিত্র’র নাম: রান লোলা রান (ইংরেজিতে Run Lola Run এবং জার্মান ভাষায় Lola Rennt)
ভাষা: জার্মান
দেশ: জার্মানী
পরিচালক: টম টিকভের
মুক্তির তারিখ:১৯৯৮
চরিত্র: ফ্র্যাঙ্কা পতেন্তে (লোলা), মরিটজ্ ব্লেবিট্রিউ (ম্যানি)।
এই তিনটি দর্শনের একেবারে প্রাথমিক স্তরের প্রশ্ন যার উত্তর একবিংশ শতাব্দির মানুষও বের করতে পারেনি। এই প্রশ্নের পরে যে প্রশ্নটি মানুষকে ভাবিয়েছে তা হচ্ছে ‘ভাগ্য’। ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত ? নাকি মানুষ নিজেই এর নির্মাতা? ইচ্ছার গুরুত্ত্ব কতটুকু ভাগ্য পরিবর্তনে? জীবন কি খেলা? কে কাকে নিয়ে খেলছে এখানে ?
চলচ্চিত্রের নাম Run Lola Run । জার্মান চলচ্চিত্র। ১৯৯৮ সালে এটি মুক্তি পায়। জার্মান ভাষায় নাম Lola Rennt। পরিচালক টম টিকভের (Tom Tykwer)। উপরে যে কথাগুলো বলেছি তা মূলত এই চলচ্চিত্র দেখে আসা অণু উপলব্ধি। ফিল্মটি লোলা নামের এক তরুণীর জীবনকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায় চরম উৎকন্ঠা নিয়ে।
জীবনের রহস্যময়তাঃ
লোলাঃ এক যোদ্ধা তরুণীকে দেখেছি
লোলা তার সঙ্গী ম্যানির টেলিফোন কল থেকে জানতে পারে যে, স্মাগলিং করতে গিয়ে লোলাকে সঠিক সময়ে না পেয়ে মানি এক লক্ষ ডয়েচেমার্ক (জার্মান মুদ্রা) ট্রেনে ফেলে এসেছে। সেটি একটি গৃহহীন ব্যক্তি নিয়ে নিয়েছে বলেই ম্যানির বিশ্বাস। এখন ২০ মিনিটের মধ্যে যদি ঐ টাকা গ্যাংস্টারের কাছে না দিতে পারে তবে ম্যানিকে খুন করবে ওরা। লোলা ছাড়া কেউ উদ্ধার করার নেই।
লোলা দৌড়ে তার বাবার ব্যাংকে চলে আসে। আসার পথে একাধিক মানুষের ভবিষ্যৎ দেখতে পায় লোলা। বাবাকে পরকীয়া করতে দেখে ফেলায় বাবা বিব্রত হয় এবং লোলা বিপুল পরিমাণ টাকা চাইলে তাকে অফিস থেকে বের করে দেয় বাবা। এবং এই কথা জানায় যে, লোলা আসলে অন্য কোন পুরুষের সন্তান। কোকিলের ডিম্ব। সেই সাথে লোলা ও তার মাকে তিনি ত্যাগ করে ঐ ভদ্রমহিলাকে বিয়ে করতে চান বলেও জানিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন লোলাকে।
পুরুষের অধৈর্য আচরণঃ
রহস্যের শুরুঃ নতুন টাইমফেইজ
লোলা মুমূর্ষু অবস্থায় ম্যানির সাথে কাটানো ঘনিষ্ট সময়ের কথপোকথন স্মরণ করে। সে ম্যানিকে ছাড়তে চায়না অর্থাৎ মরতে চায়না বলে নতুন একটি টাইমলাইন তৈরি করে। ফের ম্যানির টেলিফোন করার পর থেকে শুরু হয় দৌড়। সময় সেই ২০ মিনিটই। এবার লোলা আত্মবিশ্বাসী। সরাসরি বাবার অফিসে গিয়ে বাবাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা নিয়ে ম্যানি ডাকাতি করতে যাওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সে পৌঁছে যায়। আনন্দে আত্মহারা ম্যানি যখন প্রেমিকার দিকে আসতে রাস্তা পার হতে যায় তখন ট্রাকের তলায় চাপা পড়ে সে। লোলার মাথায় যেন বাজ পড়ে এ দৃশ্য দেখে! দৌড়ে গিয়ে ম্যানির চোখের দিকে তাকিয়ে লোলা নতুন টাইমফেইজ তৈরি করে।
চূড়ান্ত টাইমফেইজঃ
আবারো শুরু হয় লোলার দৌড়। এবং এবার লোলা আরো দৃঢ় এবং আত্মপ্রত্যয়ী। ক্যাসিনোতে গিয়ে সে বিপুল পরিমাণ টাকা জেতে। এদিকে ম্যানিও টাকা নিয়ে পালানো গৃহহীন সেই লোকটাকে খুঁজে পায়। এই খুঁজে পাওয়ার সাথেও লোলার এক সাইকেল আরোহীর কথা এবং সাইকেল আরোহীর সাথে গৃহহীন লোকের দেখা হওয়ার মত কো-ইনসিডেন্স কাজ করে। লোলা যখন টাকা নিয়ে আসার পর ম্যানিকে দেখতে পায়না সে তখন সংশয়ী হয়। হঠাৎ্ ম্যানিকে হাসিমুখে প্রাইভেট কার থেকে বের হয়ে আসতে দেখে লোলা এগিয়ে যায়। কাছে আসার পর লোলা বুঝতে পারে জীবনের এই অংশে ম্যানির আর টাকার প্রয়োজন নেই। দুজনে হাঁটতে থাকে। আচমকা লোলার হাতের টাকার থলির দিকে কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ম্যানি প্রশ্ন করে, ব্যাগে কি আছে, লোলা?লোলার উত্তরের আগেই অনেক প্রশ্ন রেখে শেষ হয় Run Lola Run।
***************************************************************************** রান লোলা রানের নন্দনতত্ত্বঃ
চলচ্চিত্রটিতে কিছু বিশেষ বিষয় পেয়েছি যা বিস্মিত করেছে। যেমন একজন নারী লোলা এবং তার সংগ্রামের অভিনবত্ত্ব। লোলা তার প্রতি প্রেমিকের ভালবাসার নিশ্চয়তা চায়। সে ফ্যাক্ট জানতে চায় কেন সে-ই ভালবাসার যোগ্য কিংবা কেন ম্যানি হাজার নারীর মাঝে তাকে ভালবাসলো? সে কেন অনন্য? সে কি অনন্য? ম্যানি লোলাকে খুশী করতে বা নিজে সংশয়ী হয়ে লোলাকে ভালবাসার কথা প্রকাশ করে। লোলা জানতে চায়, তার আগে অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত হলে তাকেই কি ম্যানি একই কথা বলতোনা? এই প্রশ্নের জবাব ম্যানি দিতে পারেনি। আসলে এই প্রশ্নের জবাবের পিছনে মানুষ আজো ছুটছে। নয় কি?
* চিৎকার চিরকাল ভেঙে ফেলে সোস্যাল স্ট্রাকচার
ফিল্মটির দ্বিতীয় আরেকটি ব্যাপার নজর কেড়েছে। সেটি হচ্ছে লোলার চিৎ্কার। লোলা যখনই নির্মম বাস্তবতা কিংবা তীব্র প্রতিবন্ধকতার সম্মুক্ষিণ হয়েছে তখনই সে চিত্কার করেছে। সে চিৎ্কার অভূতপূর্বে। তাতে লোলার পারিপার্শ্ব সন্ত্রস্ত্র হয়ে তার পথ ছেড়ে দিয়েছে। এটা দিয়ে নির্মাতা মনে হচ্ছে সমাজকে চ্যালেঞ্জ করাকে শৈল্পিকরূপে ফুটিয়েছেন। বিসৃঙ্খলা ছাড়া সমাজ পরিবর্তন করা যেন সম্ভব নয়। একজন নারী চিৎ্কার করলে তথা প্রতিবাদ করলে সে তার অধিকার তো পায়ই সেই সাথে বিনির্মাণ (Deconstruct) করে সামাজিক নীতি ও গ্রহণযোগ্যতা। লোলাকে তাই চরম বিপদে নিজের অস্তিত্ত্ব রক্ষায় সমাজের স্বাভাবিকতায় আঘাত করতে দেখা যায়। লোলা যেন আমার কাছে আবু ইসহাকের ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ উপন্যাসের চির সংগ্রামী জয়গুন।
সময় ও ধর্মকে আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টাঃ
ফিল্মটিতে সময়ের উপর গুরুত্ত্ব দেয়া হয়েছে। সামান্য এক সেকেন্ড সময়ও যে মানবজীবনকে কতট প্রভাবিত করতে পারে তা দেখা যায় লোলার ভয়ঙ্কর ২০ মিনিটের বিচিত্র ঘটনাসমূহ থেকে।
আর লোলার গির্জার নানদের চীরে দেীড়ের দৃশ্যায়নকে আমার মনে হয়েছে নারী প্রতি ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গীকে চ্যালেঞ্জ করার শিল্পসম্মত উপস্থাপনা।
দূর্বোধ্য কিছু কিছুঃ
চলচ্চিত্রের কিছু বিষয় বুঝতে পারিনি। ঠিক কিভাবে লোলা নতুন নতুন টাইমফেইজ তৈরি করছে বা সেখানে প্রবেশ করছে সেটির কোন উত্তর নেই। আবার পুরো চলচ্চিত্রে সকল চরিত্রই লোলার ভাবনার উপর নির্ভরশীল যেন। ব্যাপারটি এমন যে লোলা চাইলে পার্শ্বচরিত্র তিনটি পৃথক ভবিষ্যৎ তৈরি করেছ। এটা কিভাবে সম্ভব? নির্মাতা ঠিক কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বটি চলচ্চিত্রে দেখাতে চেয়েছেন সে বিষয়ে সংশয়ী হয়েছি। টাইম মেশিন, নাকি প্যারালাল ইউনিভার্স নাকি স্রডিঞ্জারের প্যানডোরা বক্স, নাকি হিউম্যান বিহেভিয়্যার এটা নিয়ে দর্শকের মাথায় ঘোরপাক খেতে পারে। তবে তত্ত্ব যাই হোক না কেন চলচ্চিত্রটি দেখে প্রায় এক ঘন্টা ১৩ মিনিট লোলার সাথে সাথে দেীড়িয়ে ভিন্ন রকম এক মজা পেয়েছি...। আপনিও পাবেন ,নিশ্চিত ।
রান লোলা রান দেখে সর্বশেষ উপলব্ধি, ‘ জীবনে বেঁচে থাকার অপর নাম দেীড় ’।
এক নজরে রান লোলা রান
চলচ্চিত্র’র নাম: রান লোলা রান (ইংরেজিতে Run Lola Run এবং জার্মান ভাষায় Lola Rennt)
ভাষা: জার্মান
দেশ: জার্মানী
পরিচালক: টম টিকভের
মুক্তির তারিখ:১৯৯৮
চরিত্র: ফ্র্যাঙ্কা পতেন্তে (লোলা), মরিটজ্ ব্লেবিট্রিউ (ম্যানি)।