সর্বশেষ

তুর্কিদের প্রতিবিপ্লবের কবিতা: জুলাই ১৫, তুমি মজলুমের দুয়ারে এসো


(উৎসর্গ জুলাই ১৫, ২০১৬ এর ইহুদীবাদী চক্রান্তের অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দেয়া ২৪৯ জন তুর্কি ও সমগ্র পৃথিবীর নিরীহ, শোষিত মানুষ)
গর্জে উঠেছিল মানুষের শক্তি, হৃদয়ের ভক্তি, রাস্তায়-ঘরে-চত্বরে-মোড়ে
আঙ্কারা-বসফরাস-ইস্তানবুলে
টুঁটি চেপে ধরেছিল জনতা উর্দির আড়ালে থাকা ইহুদীবাদকে, ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ট্যাংকের সামনে বুলেটপ্রুফ কলিজা নিয়ে(মিডিয়ার আড়ালে থাকা আরেক সেন্টমার্টিন দ্বীপ)
মুরাত-ইউসুফ-আলিয়া ও লক্ষ্য মাহির, তাজা রক্তে শেষ দুর্গটি রক্ষা করেছিল
পশ্চিমের পদতলে পতনের আগে
তুরস্কে, তুরস্কে, তুরস্কে।(ভিডিও: ওমর সানি বনাম মিশা ঝগড়া)
কি নির্মম, কি বর্বর রূপে তুরস্কের সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র মানুষের উপর
আমার মনে পড়ে ১৯৭১ সালের বাংলার কথা
আমার মনে পড়ে ১৯৭৫ সালের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির কথা
যেদিন নরপিশাচ ডালিম-রশিদ-বজলুল-তাহের-ফারুক ও অসভ্য মেজরেরা একজন জননেতা, একটি বাংলাদেশকে খুন করেছিল(প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিশোর ভ্যানচালক কি বলছে এসব? দেখুন)
ঠিক সেভাবে ঈজিয়ন ও কাস্পিয়ান তীরে আনাতোলিয়ার আধুনিক নায়ককে হত্যার নকশা দুইশ মানুষের রক্তপান করে ওজতুর্ক-হুদুতি-উগুরলু-বোজতাক ও গুলেনের মগজধোলাই খাওয়া সন্তানেরা
কিন্ত মারমারিস সেদিন ৩২ নম্বর বাড়ি হতে পারেনি জনতার স্রোতে, ওরা বুক পেতে দিয়েছিল পতাকার রক্ষার জন্য
ওরা মাথা উঁচু করে পথ রোধ করেছিল জলপাই রাঙা কাপুরুষদের বৃষ্টির মত গুলির পথে
আমরা কি পেরেছিলাম বুক পেতে দিতে ৭৫ এর ঘাতকের বুলেটের সামনে?
ফিরে আসি কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী স্বর্ণখণ্ডে
ফিরে আসি আনাতোলিয়ায়, ফিরে আসি মারমারা সাগরের পাশে, ফিরে আসি ঈজিয়নের তীরে
ফিরে আসি লাল টুকটুকে তুর্কি জাতির দেশে 
দেখেছিলাম, প্রোপাগাণ্ডা মেশিন-আরব ও ইউরোপ ও আমেরিকার সম্মিলিত আক্রমণ চালিয়েছে তুর্কি স্বাধীনতার উপর, তুর্কিদের আশা ও ভরসার উপর
কিন্তু জন্মেই যে জাতি যোদ্ধা হয়, কামাল পাশার বাচ্চাদের এবার তারা সফল হতে দিলোনা
ইতিহাস চেয়ে দেখলো এ যুগের পাশার তেল আবিভীয় সন্তানদের চপেটাঘাত, দেখলো তুর্কিরা সাঁজোয়া থেকে টেনে বের করছে (কাব্যনাট্য : বাংলাদেশ বাঙালি বাংলা!)
একেকটা বিশ্বাসঘাতককে, হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে রাস্তায় ঝরে পড়া সহস্র লাল পতাকার সন্তানের রক্তের উপর দিয়ে
ফজরের শুরুতে জনতার জোয়ারে বসফরাস ব্রিজের উপর সেনা চক্রান্ত নস্যাৎ হয়, বিমানবন্দরে খুন হয় গণতন্ত্র ছিনতাইকারীরা
তাকসিমের থেকে প্রতিটি প্রান্তরে আনাতোলিয়ার আধুনিক বীরদের আনন্দধ্বনি তীর হয়ে আঘাত করে
সিসি-সালমান-নেতানিয়াহু-ওবামা-ট্রাম্পের বুকে
দ্বিতীয় মোহাম্মদের উত্তরসূরী ওরা, ওরা কনস্তানতিপল বিধ্বস্ত করা বিপ্লবীদের সন্তান, ওরা বীর বিক্রমে ককেসাস থেকে আরব, ভারতবর্ষ থেকে ইউরোপ চষে বেড়িয়েছে (টেঁটা দিয়ে মাছ কোপানো)
এ পৃথিবীর সর্বশেষ সাম্রাজ্যটিও যাদের; তাদের ইতিহাস সবচেয়ে জীবন্ত, তাদের রক্ত সবচেয়ে টগবগে
আর চাইলেই ওদের পরাজিত করা যাবেনা জানিয়ে দিয়েছে তা ২০১৬ এর জুলাইয়ে।
ওরা ফের দাঁড়িয়ে গেলে সিরিয়া ও ইরাক ও ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে
আর চলবেনা বিভক্তির অপরাজনীতি ও হত্যালীলা
দ্যাখো, ঐ দ্যাখো, কিভাবে কাতারের পাশে দাঁড়িয়ে তুর্কিরা থামিয়ে দিয়েছে সৌদি রক্তভেলা
ওঁরা ঘুরে দাঁড়াবে, ওসমানের ছেলেরা, ফের পাঠাবে মাভি মারমারা- গাজায় ও সকল নিপীড়িতের দুয়ারে
পাতা উল্টে দেখ, তুর্কিদের জাগরণ হলে তা এ বিশ্বকে কাঁপায়, কাঁপিয়ে দেয় সকল অত্যাচারীর বিলাসী গদি
ইখতিয়ার-সুলাইমান-মুহম্মদ-এরদোয়ান আর ১৫ জুলাইয়ের বিপ্লবী জনতার সাথে সারা পৃথিবীর মজলুম কথা বলে যদি
তবে ভেঙে যাবে ওয়াল স্ট্রিট, ফেডারেল রিজার্ভ, কেনেসেট আরো কত কি
এ শুধু  তুর্কি জনতার উত্থান নয়, ও যে প্রাচ্যের পুনর্জাগরণ পশ্চিমের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে
এ যে শান্তির জয় অপশক্তি-পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী-কুচক্রী-ইহুদীবাদীর সাথে চলমান যুদ্ধে!
তাই জয় হোক মানুষের
জয় হোক মানুষের ইচ্ছার
সন্ত্রাসের পরাজয় হোক, জুলুম নিশ্চিহ্ণ হোক, শেষ দুর্গের পুনরুত্থান হোক
সব দখলদারিত্ব আর অবিচার আর খুন-ত্রাস-হত্যা-বিলাসীতার কবর হোক
১৫ জুলাইয়ের নিরস্ত্র স্বপ্নবাজদের প্রাণের জীবনী ছড়িয়ে যাক পৃথিবীর সকল প্রান্তে, সকল বৃন্তে
ষড়যন্ত্র ও উৎখাতের রক্তপাত মাড়িয়ে মানব ও মানবী রচনা করুক বেঁচে থাকার ইতিহাস
স্বাধীনতার ইতিহাস
সত্য ও সাহসের ইতিহাস
বারবার ব্যর্থ করে ধুলায় মিশিয়ে দিক ট্যাংকবাজদের, মুল্লুকলোভী দাসদের।
আজ সুদূর থেকে আমরা দেখি এক প্রতিরোধে দেয়াল,  সভ্যতায় অনবদ্য অবদান রাখা এ জাতির সংগ্রাম আমাদের প্রবলভাবে আশার স্রোতে ভাসায়
অস্ত্রের চেয়ে সততার জোর বেশি
গোলার চেয়ে পতাকার জোর বেশি
ষড়যন্ত্রের চেয়ে সাহসিতার শক্তি বেশি
মিথ্যার উপর সত্যের জয় হবেই।
আজ বিশ্বের আনাচে-কানাচে, যেখানেই গণস্বার্থ ক্ষুণ হচ্ছে, মানুষরূপীরা কেড়ে নিচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, যেখানে মজলুম বুক চাপড়ে কাঁদছে, সেই সব ভূমিতে
পনের জুলাই, দুই হাজার ষোল
যত বার ওরা চক্রান্ত করবে ততবার তুমি ফিরে এসো
শ্রমিকের কাঁধে, তরুনীর চোখে, যুবকের মুষ্টিতে, পিতার চিৎকারে, মায়ের অশ্রুতে।(বাংলাদেশ আর্মির টিভিসি: টাকা দিয়ে চাকরি চাইলে এটি দেখুন)

পাঠ অনুভূতি