পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি ভোগবাদী, পুরুষতান্ত্রিক, অমানবিক এবং নারীর অবমাননাকে সমর্থন করার শামিল।মানবিক দাবি হচ্ছে, এ পৃথিবী থেকে পতিতাবৃত্তি নামের অভিশাপকে দূর করে তাদের কর্মসংস্থানের বিকল্প ব্যাবস্থা করা। পতিতালয়গুলো ধীরে ধীরে বন্ধ করতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন সেখানে থাকা দুঃখিনী নারীদের এই নষ্ট সমাজের মধ্যে এনে কাজ দেয়া যাতে সে তার পরিবার চালাতে পারে। এই সমাজের ফ্রয়েডের বাচ্চাদের মত ওরা মজামাস্তি করতে এই ঘৃণ্য কর্ম বেছে নেয়না।
ওরা জীবীকার তাগিদে এই পথে যায়, কোন পুরুষ নামের জানোয়ার হয়তো শত শত জানোয়ারের জন্য ওকে বিক্রি করে দিয়ে যায়। আর অধিকাংশ হতভাগিনী জন্ম নেয় ঐ আলয়ে। এর দায় এই পুঁজিবাদী সমাজের। এখানে অনৈতিক চাহিদা পূরণে ব্যস্ত যারা আনন্দে তারা খুব বৈধভাবেই হাসে খেলে, ঘোরে, সম্মান পায় আমাদের কাছে। আর পেটের দায়ে ওরা এসবে যুক্ত হয়ে অসম্মানিত হয়। অথচ আমরা সবাই মিলে সামাজিক উদ্যোগ নিয়ে পতিতালয়গুলোকে মানুষের বসবাসের জন্য উপযোগী করতে পারি। ওখানে জন্ম নেয়া শিশুদের কথা ভেবে হলেও আমাদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। রাতে পতিতালয়ে গিয়ে সকালে ফতোয়া দেয়া এই সমাজের সাথে নারীবাদীদের পার্থক্য থাকেনা যদিনা এই পতিতালয় ব্যবস্থার পতন তারা না চায়। মানবতার জন্য এমন খারাপ অবস্থা আর কখনো আসেনা যখন একটি শিশু জন্ম নিয়ে দেখে সে এমন কোথাও জন্ম নিয়েছে যেখানে চিরকাল সে বন্দি থাকবে খারাপ পুরুষ নামের পশুদের হাতে !
আধুনিক বলে পরিচিত আমরা কিভাবে এই বর্বর বিষয়টি জিইয়ে রেখেছি? কেন প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আমরা অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছি? আমাদের আশেপাশে শরীর দেখিয়ে বা বিকিয়ে খ্যাতি, অর্থ বা ক্ষমতা যারা অর্জন করছে তারা যদি এই সমাজে মাথা উঁচু করে থেকেও সমালোচিত না হয় তবে কেবল বাবা-মা-সন্তানের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে যে অনিচ্ছায় এই পথে আসে সে কেন ‘বেশ্যা’’ গালি শুনবে?
সুতরাং, পতিতাবৃত্তি শব্দটিকে যাদুঘরে পাঠাতে আমাদের সবার ভাবতে হবে। স্রষ্টার কাছে এই মানুষগুলোকে পতিতাবৃত্তির মত খারাপ কাজ থেকে বিরত করে মানবাধিকার ফিরিয়ে না দেয়ার জন্য সামষ্টিক জেরার সম্মুখিন আমরা সকলেই কি হবোনা?