সর্বশেষ

প্রথম আলোর এ কেমন অনৈতিক সাংবাদিকতা?


৩১ জুলাই, ২০১৭ তে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে রাজধানী ঢাকার একটি শিশু ধর্ষণের সংবাদ লিড নিউজ হিসেবে প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদের ফিচার ইমেজ হিসেবে ব্যবহার করা হয় পিশাচ কর্তৃক ধর্ষিতা সেই শিশুটির ছবিকে। এটা চরম বাজে একটি কাজ হয়েছে। পৃথিবীর কোন সাংবাদিকতার এথিকসে এভাবে ধর্ষিত শিশুটির ছবিটি উপস্থাপনের অনুমতি দেয়? প্রায় ৬ বছর সাংবাদিকতা বিভাগে পড়েছি, এডিটরিয়াল পলিসি সম্পর্কে জেনেছি, কিন্তু ধর্ষিতা শিশুটির ছবি এভাবে ব্যবহার ঠিক কি কারণে করতে হবে তা জানিনি। এমন তো নয় ঐ শিশুটির ছবি ছাড়া সংবাদটি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে! তবে কেন? এটা প্রথম আলোর দায়িত্বশীলতার বরখেলাপ। এমন সাংবাদিকতা কেবল জাতির জন্য লজ্জার কারণ, হতাশার উপলক্ষ তৈরি করে, কোন ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনেনা।


‘খাবারের লোভ দেখিয়ে শিশুটি ধর্ষণ’ শীর্ষক যে সংবাদ, তা কোন বস্তুনিষ্ঠ, সুস্থ সাংবাদিকতা হয়নি। কারণ বাচ্চা শিশুটি ও তার মায়ের ছবি পত্রিকায় কেন প্রকাশ করা হলো? তারা তো সামাজিকভাবে হেয় হতে পারেন। এই শিশুটি যদি উচ্চবিত্ত পরিবারের হতো তবে কি তার ছবি দেয়া হতো? হতোনা। শিশুটি নিম্নবিত্ত পরিবারের। গরীবের সন্তান। ভোগবাদীদের কর্তৃক ‘উচ্চবিত্ত স্বার্থ সংরক্ষণকারী সাংবাদিকতার’ নৈতিকতা চর্চায় গরীবের ইজ্জতকে স্বীকার করা হয়না, বনানীতে ধর্ষিতা মধ্যবিত্ত’র তাও স্বীকার করা হয়। এথিক্স একে বলেনা। শ্রেণী বিভাজন তৈরি করে যে সাংবাদিকতা করা হয় তা মানবতার জন্য কল্যাণকর কিছু আনবেনা। এথিক্স চর্চায় গরীব-দুঃখির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, গোপনীয়তার অধিকারকে সংযুক্ত না করা হলে সাংবাদিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সংবেদনশীলতা কেবল উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত নারী ও শিশুর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবেন, আর নিম্নবিত্ত গরীব. যারা এদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি তারা কি দেশে ভেসে আসছে নাকি?

পাঠ অনুভূতি