সর্বশেষ

উত্তর কোরিয়া: বিপ্লবী কিম জং উন ও মজদুর


চলমান পৃথিবীর একমাত্র সমাজতান্ত্রিক দেশ উত্তর কোরিয়া। যদিও রাষ্ট্রীয় নাম ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া। বাংলা করলে দাঁড়ায় গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া। বাংলাদেশের বামরা কিম জং উনের পক্ষে কোনদিন দুইটা কথা বলেছে? একটা দেশকে কেবল পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থা ও পশ্চিমা জীবনধারন পদ্ধতি গ্রহণ না করার অপরাধে বছরের পর বছর অবরোধ দিয়ে দূর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ তার প্রতিবাদে কোন কমরেড কিছু বলেনা। আজ ১ মে। আপনি শ্রমিক দিবস পালন করবেন। কিন্তু তাতে উত্তর কোরিয়ার মেহনতি মানুষের কোন কথা থাকবেনা। আপনার মানদণ্ড যেহেতু আমেরিকা ও ইউরোপ নির্ধারণ করে দেয় তাই উত্তর কোরিয়ার কৃষক-শ্রমিক আপনার চিন্তায় স্থান পায়না। এ কি অন্যায় নয়? এ কি জুলুম নয়? উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকের পণ্যটি অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে সে পারছেনা। আপনাদের অবরোধের কারণে উত্তর কোরিয়ার কৃষক-শ্রমিক বঞ্চিত হচ্ছে দুনিয়ার প্রতিটি স্থানে বিচরণের সুযোগ থেকে। আর আপনারা সেই উত্তর কোরিয়ার উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখতে, তাকে সহায়তা না করে চুপ করে আছেন। খুব তৃপ্তি সহকারে পশ্চিমের মিডিয়ার শেখানো বুলিতে বলছেন ‘উত্তর কোরিয়া খারাপ। কি দরকার বোমা রাখার? কি দরকার মার্কিন প্রভুর বিরুদ্ধে কথা বলার? কি দরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী দেয়ার?’’

আমি এ কারণেই এদের বলি ক্যাপিটালিস্ট কমরেড। এরা কম্যুনিউজমের নামে মূলত ইউরোপ-আমেরিকার কথিত মডার্নিজমের শরবত খেয়েছে। তা না হলে আজ উত্তর কোরিয়ার কমরেডদের জন্য রাজপথে একটা মানববন্ধন হলেও হতে পারতো। কিন্তু তা হয়না। কারণ কমরেডদের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে বা করতে যাবে কিংবা কমরেড নিজে শেষ জীবনে কাটাবেন ঐ ‘পুঁজিবাদ নিপাত যাকের কোন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে’ অর্থাৎপুঁজিবাদের ভিত্তিভূমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপে। একজন বিপ্লবী কিম জং উনের সমর্থন করলে আমেরিকা ও ইউরোপের ভিসা বাতিল হতে পারে। উত্তর কোরিয়া একাই লড়ছে পৃথিবীর ভোগবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী মোড়লদের বিরুদ্ধে। এ লড়াই সত্য-মিথ্যার লড়াই। এ লড়াইয়ে কিম জং উন ও তাঁর বিপ্লবী জনতার জিততেই হবে। পৃথিবীতে সাম্যবাদের শেষ বাতিটি নিভিয়ে দিতে ওরা এক হয়েছে।
২।
পশ্চিমা CNN, BBC, FOX, AFP, REUTERS, AP এর প্রোপাগাণ্ডায় উত্তর কোরিয়াকে দেখানো হয় একটি গরীব রাষ্ট্র হিসেবে। সেখানে মানবাধিকার নাই, স্বাধীনতা নাই, কাজ নাই আরো কত নাই দিয়ে মিথ্যাচার করা হয়। নিজেদের ইউরোপে যে ঘৃণা চাষ হয়, নিজেদের আমেরিকায় যে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা করা হয়, নিজেদের প্যারিস-লন্ডণ-নিউইয়র্কে যে ফুটপাথে মানুষ না খেয়ে ঘুমা্য় সেই নিউজ দেয়না এরা। উত্তর কোরিয়ায় মনমতো সরকার নাই বলে সেখানে শুধু নেতিবাচকতা আর অভাব, কোন সুখ নাই। মিথ্যা এসব নাইয়ের যদি ৫% ও সত্য হতো তবে উত্তর কোরিয়ায় এখন দুর্ভিক্ষ থাকার কথা। কিন্তু সেখানে মানুষ শান্তিতে আছে। তাঁদের সর্বোচ্চ নেতা তাঁদের প্রতি ভালবাসার সম্পর্কের সেতু তৈরি করেছেন। রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষ উৎপাদনের সাথে জড়িত। নিজস্ব মিডিয়া রয়েছে, পৃথিবীর সুরম্য অনেক স্থাপত্যও রয়েছে, রাস্তাঘাট পাকা, সকলেই কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং নিজের দেশ ও মাটির প্রতি ভালবাসায় সিক্ত। আপনি শত্রু পক্ষের মিডিয়ার প্রোপাগাণ্ডায় বিশ্বাস করার আগে একটি বারও কি উত্তর কোরিয়ার মিডিয়ার কোন কথা শুনেছেন? উত্তর কোরিয়ার মানুষের কথা শুনেছেন?

আপনি নিশ্চত হলেন কিভাবে যে কিম জং উন যদি পারমাণবিক বোমা নিস্ক্রিয় করে তার পরিণতিও সাদ্দাম কিংবা গাদ্দাফির মতো হবেনা?
৩।
অনেক কথা বললাম। আসল কথা থেকে দূরে চলে গেছি। বলতে চাচ্ছি, প্রিয় কমরেডগণ, কবে বুঝবেন যে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর কোরিয়া হচ্ছে প্রলেতারিয়েত। কিম জং উন হচ্ছেন প্রলেতারিয়েতের নেতা। উত্তর কোরিয়া ও কিম জং উনের বিপদে তাঁর পাশে যদি না দাঁড়াতে পারেন, যদি মানববন্ধন করেও তাঁর প্রতি সমর্থন না দিতে পারেন তবে কিসের সমাজতান্ত্রিক আপনি? কিসের বিপ্লবী আপনি? কিসের কমিউনিস্ট আপনি?
আপনাদের নীতিচ্যূত পশ্চিমা মানদণ্ড দিয়ে বিপ্লবের সর্বশেষ দুর্গ এবং বিপ্লবীদের নেতা কিম জং উনকে পরিমাপ করে যে ফল পাবেন তা পদদলিত করে আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সাম্যের বিজয় নিশান উড়বে: পিয়ং ইয়ংয়ে, উত্তর কোরিয়ায়, কোরিয়া উপদ্বীপে।
জয় হোক উত্তর কোরিয়ার। জয় চাই। জয় হোক সত্যের।

আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক উত্তরের কোরিয়ায়; কিম জং উন ও তার বিপ্লবী জনগণের হাতে। মজদুর পুঁতে দিক উডতে থাকা বিজয় পতাকা পুঁজিবাদীদের বলদর্পী, অহংকারী বারুদে পূর্ণ বুকে...।
May 1, 2017 at 12:13am
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments