সর্বশেষ

মুসলিম হিসেবে জার্মানদের বর্ণবাদ ও অসম্মানে কষ্ট পেয়ে অবসর নিলেন ওজিল


২০১৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী জার্মানি দলের মধ্যমণি মেসুত ওজিল সারা বিশ্বের কোটি দর্শককে হতবাক করে দিয়ে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। অবসরের কারণ হিসেবে ওজিল তাঁর প্রতি তুর্কি বংশোদ্ভূত মুসলমান অভিবাসী হিসেবে জার্মানদের বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গী ও অসম্মানকে বিবৃত করে টুইট করেন। ২৩ জুলাই হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন আর্সেনাল তারকা।

২৯ বছর বয়সী আক্রমণাত্মক মাঝমাঠের খেলোয়াড় ওজিল বলেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে মে মাসে একটি মিটিং ও ছবি তোলার কারণে ২০১৮ বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার সব দায় চাপানো হচ্ছে আমার উপর। ওজিল কষ্ট পেয়ে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়ে লেখেন, আমার প্রতি বর্ণবাদ ও অসম্মানের বর্তমান ঘটনাগুলোর পর আমি আর আন্তর্জাতিক ফুটবলে জার্মানির হয়ে মাঠে নামবোনা। 

‘জার্মান ফুটবল এসোসিয়েশন (ডিএফবি) এর কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের আচরণ আমাকে জার্মান ফুটবল দলের জার্সি আর না পরার ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ী করেছে’ বলেন ওজিল। ওজিল সরাসরি জার্মান ফুটবল এসোসিয়েশনের কোন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ না করে লেখেন, যারা বর্ণবাদ ধারণ করে তাদের দ্বৈত জন্মসূত্রের খেলোয়াড় রয়েছে এমন কোন জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়া উচিত নয়। 

জার্মান গণমাধ্যমগুলোর সংকীর্ণ আচরণের কারণে ব্যথিত ওজিল বলেন, জার্মানির গণমাধ্যমগুলো একের পর এক আমার দ্বৈত জন্মসূত্রের (তুর্কি ও র্জামান) দিকে আঙুল দিয়ে পুরো দলের ব্যর্থতার দায় আমার উপর চাপাতে চেষ্টা করে। 

‘এই সিদ্ধান্তটি নেয়া খুবই কঠিন, কারণ আমার সহকর্মীদের জন্য সবসময় আমি সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি।… কিন্তু যখন জার্মান ফুটবল সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আমার তুর্কি রক্তধারার কারণে আমাকে অসম্মান করে, স্বার্থপরের মত রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ডায় আমাকে ব্যবহার করে, তখন বলতে হয়, ব্যস! অনেক হয়েছে!’ বলেন জার্মানির হয়ে ৯২ ম্যাচ খেলা মেসুত ওজিল।

ওজিল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এভাবে, এজন্য (বর্ণবাদীতার শিকার হতে) নিশ্চয়ই আমি ফুটবল খেলিনা এবং আমি আর ফিরে যাবোনা (অবসর থেকে)। বর্ণবাদীতা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়, কখনোই না। 

গত মে মাসে তুরস্কের র্নিবাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে এরদোয়ানের সাথে ছবি তোলেন ওজিল ও ইলকে গুনদোগান। ওজিল বলেন, তুর্কি প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ না করলেও ওরা আমার মুসলিম ও তুর্কি রক্তধারার কারণে অসম্মান করতো।

এই জার্মানীসহ পশ্চিমা দেশগুলো আমাদের বর্ণবাদ ও মানবতার ছবক দেয় অথচ মেসুত ওজিলদের এরাই কষ্ট দেয়।
এদের এই দ্বিমুখী চরিত্রই পশ্চিমা সভ্যতা নামের অসভ্যতার নোংরামী ও ভণ্ডামীটা উন্মোচন করে।
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments