কুলাতে ধান উড়ায় সেই বধূ , দুষ্টু বাতাস মাথার কাপড় ফেলে দেয়
বাঁশপাতা উড়ে পড়ে, ছেলেপেলের চ্যাঁচামেচি
শাশ্বত বাঙালি স্বত্বা অফুরন্ত তৃপ্তিতে ।।
একপাশে কর্মঠ আঁচল, ধামার ধান কুলাতে আসে
আর এক পাশে স্তুপ হয় চিটা, ঘুমঘুম বাতাসে কোকিলের হাহাকার...
প্রজন্মে এই স্বত্বা হারিয়ে যায়নি আজো ।।
এখন অনেক পরে । বাঙালির সেই রূপ বঞ্চিত
সব ঘোমটা বিলুপ্ত, কুলাগুলো নষ্ট শরীরের পদতলে পৃষ্ঠ,
ধান নেই, কুখ্যাত সব আবর্জনাভূকদের চাপে ।
বাঙালির আলতামাখা নারী আজ গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে ।
সেই শাড়ি নেই, নীলছবির টাইট জিন্সের আধিপত্যে ;
কপালে টিপ নেই, গভীর মেকাপ তাকে নষ্ট করেছে ;
সেই নিশ্ছিদ্র সতীত্ব আজ রেডিমেড বণ্টিত ।।
কোথায় বাঙালি, কোথায় বাঙালি ?
লাঙ্গল নিয়ে ব্যস্ত সেই মধ্যবয়সী অথবা ধান ক্ষেতে সেই মাথাল পরা ছেলেটি
কাদামাটিতে বর্ষায় হাঁটু পর্যন্ত দেবে যাওয়া
এসব আর নেই, কৃত্রিম যান্ত্রিকতা ঘিরেছে আমাদের ।
সংস্কৃতির ধ্বজাধারী নর-নারী আজ নোংরামীতে ব্যস্ত
একদিন বাঙালি সেজে অস্থিরতায় উন্মাতাল, ক্ষুধার্ত শরীর-মন অশান্ত
সময় নেই একবিন্দু, বাঙালির সহস্র ইতিহাস সংরক্ষণের ।।।
ফুটন্ত বেহায়া, অশ্লীল চিন্তা, বিকৃত বাংলা
কোমর বাঁকিয়ে পসারিনীর হওয়া, বৃদ্ধাঙ্গুলি নিজের মাকে ।
বাঙালি আজ হতাশ, গ্লানি এসেছে একদিনের বাঙাল থেকে ।
বিজন বনে, গহীন মনে, কাঁদে বাঙালি অন্তরে
ওদিকে দেখো, মনে রেখো, বাঙালি নানা সম্ভারে ।।
0 Comments