সর্বশেষ

অ যুক্ত মানুষ...

ছেলেটি চা বিক্রি করছিল।কত আর বয়স,এই দশ কি এগারো।ওর নাম রফিক অথবা আলমগীর অথবা বাদশাহ।এই মুহূর্তে মনে পড়ছেনা।এর ওর কাছে বলছিল তার চা লাগবে কি না।এক মধ্যবয়সী ভদ্রলোকের কাছে চা লাগবে কি না জানতে চাইলে তিনি বললেন,'হ,চা লাগবো,বাড়ি পৌঁছায় দিবি?'। ছেলেটি হতবম্ব হয়ে না বললো।ভদ্রলোক ভারী কন্ঠে বললেন,তাইলে চুপ থাক...ইত্যাদি।ছেলেটি চুপ করে গেল।আমি মুন্নী চত্ত্বরে বসে আছি।কত রকমের বদমাশ ভদ্রলোকের বেশে আমাদের চারপাশে ঘুরছে তা ভাবছি।কোন কূল বা কিনারা পাচ্ছিনা।অ যুক্ত মানুষ পাচ্ছি শুধু।
২।
মেয়েটি হাঁটছে দলবেঁধে।না,মেয়েগুলো।না,মেয়ে ও মহিলার মিশ্রিত দল।কেউ কারো দিকে চাচ্ছেনা।হাতে টিফিন ক্যারিয়ার,কাঁধে সাভার থেকে কেনা সস্তা ভ্যানিটি ব্যাগ বা এই জাতীয় কিছু।রাস্তা দিয়ে প্রেমিক ও প্রেমিকা রসালো আলাপে হাত ধরে যাচ্ছে,ওরা নির্বিকার।বন্ধুবান্ধব মজামাস্তি করছে,ওদের দৃষ্টি নেই।ওরা ইসলামনগর বা আমবাগানের খুপরি ঘরে যাবে ও রান্না করবে।তারপর খেয়ে ঘুম ও ভোর পাঁচটায় আবার পথচলা।দ্রুত হাঁটা।রাস্তা দিয়ে তখনো হয়তো মজা লুটতে থাকা মেয়ে হেঁটে যাবে লম্পট প্রেমিকের হাত ধরে।ওরা সে খবর রাখেনা।ওরা গার্মেন্টসের মেয়ে যে...!ওদের সময় এত সস্তা না যে পথেঘাটে তা বিলিয়ে বেড়াবে।ওরা অ যুক্ত মানুষ না,ওদের দিকে পর্ণগ্রাফিতে আসক্ত বাজে চোখ দিয়ে বাজেভাবে তাকাবেননা।
৩।
আমাদের সভ্য ও ভদ্র সমাজের দেহপসারিনী কিংবা লম্পট যখন 'গার্মেন্টসের মেয়ে' শব্দযুগল অবহেলা করতে ব্যবহার করে তখন বলতে ইচ্ছে করে,তাঁর ও তাঁদের অর্থেই তোমার জীবন এমন স্বচ্ছল।তোমার ও তোমাদের মত মজা করতে,ভোগ করতে ওরা শরীরকে বেওয়ারিশ কুকুরের মত ব্যবহার করেনা।ওরা জীবনবাদী।ওরা জানে পরিবারের ঘানি কিভাবে টেনে টেনে ওদের শরীরের হাড় গোনা যায়।তোমাদের মত ময়দা সুন্দরী ওরাও হতে পারতো।কিন্তু ওদের সেই ত্যাগের কারণে ওদের মা বাবা ও ছোট ভাইবোন দুমুঠো ভাত পায়।দোহাই হে ভোগবাদী নারী ও পুরুষ,গার্মেন্টসের মেয়েদের সম্মান করতে শিখুন।ওরাই প্রকৃত মানুষ।ওদের প্রতি অবজ্ঞা ও ঘৃণা পোষণকারী আপনি ও আপনারা অ যুক্ত মানুষ...।
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments