সর্বশেষ

কথিত অক্টোবর বিপ্লব, লাল সন্ত্রাসবাদ ও গণহত্যাকারী ইহুদী কমিউনিস্টদের ঘৃণ্য ইতিহাস


রাশিয়ার সাথে ইহুদী ও জায়োনিস্টদের সম্পর্কের ব্যাপারে প্রচলিত পশ্চিমা ইতিহাস আপনাকে কি জানায়?কিছুইনা।ঘন ঘন দেখবেন ইউরোপ ও আমেরিকার মিডিয়া রাশিয়াকে অবৈধ ইসরাঈল বিরোধী বা এন্টিসেমেটিক হিসেবে দেখাচ্ছে। অথচ রাশিয়ার ইহুদীবিদ্বেষের কারণ তারা বলবেনা।হলোকাস্ট নামের আষাঢ়ে গল্প শুনিয়ে বলবে,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৬ মিলিয়ন বা ৬০ লাখ ইহুদীকে হত্যা করেছে খ্রীস্টানরা। আর এই কারণে আরব ফিলিস্তিনের উপর ইসরাঈল নামের একটি ক্যানসার তৈরি করে এর কাফফারা দিতে হবে। এই ইসরাঈলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলাটাই এন্টিসেমেটিজম!অথচ তত্‍কালীন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হলোকাস্ট বা গণহত্যা চালিয়েছিল ইহুদীরাই। টেকনিক্যালি এবং নীলনকশায় এই হত্যাযজ্ঞ চালানোয় ইতিহাসে তা ভিন্ন নাম ধারন করেছে। আজ অনেকেই জানেনা ইহুদীরা কত ভয়াবহ রকমের খুনী ছিল।প্রোপাগান্ডা ও মায়াকান্নায় কোটি জীবন হত্যার ইতিহাস আড়ালে চলে গেছে।সেই ইতিহাসের পাতা খুলে দেয়া জরুরি।

২।
রাশিয়া সম্পর্কে যা বলছিলাম। ১৯১৭ সালে কথিত অক্টোবর বিপ্লব বা রুশ বিপ্লবকে আমরা কিভাবে অধ্যয়ন করি? আমরা পড়ি, বলশেভিকরা (Bolshevics) বিপ্লব করে পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করে। জারতন্ত্রের পতন হয়। শুনতে দারুন লাগে,তাইনা? অথচ এই বলশেভিকদের আন্দোলন ছিল ইহুদীনিয়ন্ত্রিত। বলশেভিক আন্দোলনটা অর্থোডক্স খ্রীস্টান ও ন্যাশনালিস্ট রাশিয়ানদের দমন করার জন্য গড়ে ওঠে। এই কথিত বিপ্লব ও তত্‍পরবর্তী দাঙ্গায় কমপক্ষে ৬৬ মিলিয়ন অর্থোডক্স খ্রীস্টানকে হত্যা করে বলশেভিক ইহুদীবাদী কমিউনিস্টরা। আমরা জানি বলশেভিকদের সংগঠিত করে লেনিন, স্ট্যালিন প্রমুখ নেতা। লেনিনের ধমনীতে প্রবাহিত ছিল ইহুদী রক্ত। তার মায়ের দিক দিয়ে সে ছিল ইহুদী। সে কারণেই ইহুদী কার্ল মার্কসের তাত্বিক শিষ্য হতে তার কোন অন্তঃদ্বন্দ্ব ছিলনা। লেনিনের মতে, কথিত বিপ্লব সফল করতে রক্ত প্রয়োজন। ১৯২১ সালে সে বলে, প্রতি ১০ জনের ৯ জনকে মরতে হলেও কমিউনিজমের জন্য তা করতে দ্বিধান্বিত হবোনা। ইহুদীরা যে নীতিতে বিশ্বাসী তা হচ্ছে তাদের পূজনীয় কোন প্রভু বা এন্টি ক্রাইস্টের উদ্দেশ্যে রক্ত উৎসর্গ করা। তো লেনিন এর ব্যকিক্রম ছিলনা। সে ঢালাওভাবে মানুষ হত্যা করেছে। পাইকারী হারে মানুষ মারার কারণেই রাশিয়ার অভ্যন্তরে অরাজকতা দেখা দেয়।

রক্তাক্ত অক্টোবরের আরেক  যে নেতার কথা আমরা জানিনা তার নাম ট্রটস্কি (Leon Trotsky)। লেনিনের পাশে থেকে ট্রটস্কিই মূলত সমাজতন্ত্রের কাঁধে বন্দুক রেখে এন্টিজায়োনিস্ট অর্থোডক্স খ্রীস্টানদের ঢালাওভাবে হত্যা করে [Ynetnews, rense.com]। ট্রটস্কি ছিল খাঁটি ইহুদী এবং ১৮৯৬ সালে জনসম্মুক্ষে আসা ইহুদীবাদ তখন টগবগে তারুণ্যে। ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখলে জায়োনিস্ট বলশেভিকরা রাশিয়ার দিকে দৃষ্টি দেয়। এই যে বলশেভিক বিপ্লবের কথা বলে ৬৬ মিলিয়ন লোকের প্রাণহানী ঘটালো এটি ইতিহাসে নেই কেন? ধরলাম ৬৬ মিলিয়ন বাড়াবাড়ি, তা ঠিক কত মিলিয়ন লোক বলশেভিকদের হাতে নিহত হয়েছে তার সংখ্যা প্রকাশের উদ্যোগ নেয়না কেন?নাকি ইহুদীরা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় আছে? নাকি কমিউনিস্টদের রক্তের রাজনীতির গোমর ফাঁস হয়ে যাবে? কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউটোপিয়া খেয়ে বড় হওয়া বদরুদ্দিন উমররা তাই মস্কোর তুষারপাতে আজো বাংলাদেশের গোল বা চারকোণা টেবিলে বসে ছাতা ফোটান। তবে জনগণের দ্বারা আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে দেয়া কমিউনিজমের অজনপ্রিয়তার কারণ চিহ্ণিত করেননা। 


৩।
এত সাধের বলশেভিক বা অক্টোবর বা রুশ বিপ্লব আমরা পড়ি। তা এই কথিত বিপ্লবের পরে যে রাশিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় সেটি কেন পড়িনা? এত আকাঙ্খিত বিপ্লবের বিরুদ্ধে কেন জনগণ অস্ত্র ধরলো? এর কারণ জায়োনিস্ট বলশেভিক কর্তৃক লাখ লাখ অর্থোডক্স খ্রীস্টানদের হত্যা করা। সেই সাথে রাশিয়া জুড়ে অর্থোডক্স চার্চ পুড়িয়ে ও গুঁড়িয়ে দেয় ইহুদী সন্ত্রাসীরা। রেড আর্মি নামের অত্যাচারী বাহিনীর প্রধানদের একাংশ ছিল ইহুদী। এসময় রাশিয়া জুড়ে লাল সন্ত্রাসবাদ শব্দটি ছড়িয়ে যায়। অক্টোবর বিপ্লবের নামে রাশিয়া ও পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ড জুড়ে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল কমিউনিস্টরা তাকে Red Terror হিসেবে ইতিহাস চিহ্ণিত করে। অবশ্য এ ইতিহাস কমিউনিস্ট ইউটোপিয়ার শরবত খাওয়া অনেকেই পড়তে চাননা। 

বলশেভিকদের এই আন্দোলনে জায়োনিস্ট রথচাইল্ড পরিবারের অর্থায়নের ব্যাপারে ইতিহাসের নিরবতার কারণ অনুসন্ধান জরুরি। আর বিশ্বব্যাপী ZOG (Zionist Occupied Government ) এর নীল নকশার বাস্তব রূপটাও এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তাই রাশিয়ানদের বুঝতে বাকি থাকেনা যে, রাশিয়ান অর্থোডক্স পোপ কিরিলের প্রিয় ভ্লাদিমির পুতিন বিরোধীদের অর্থায়নটা কোথা থেকে আসে অথবা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য বা এশিয়ার পুতুল বা সামরিক সরকারের পিছনে কে বা কারা নাটাই হাতে বসে আছে...।

৪।
সাধারণত খ্রীস্টানদের মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ মতবাদে বিশ্বাসীদের অর্থোডক্স খ্রীস্টান বলা হয়। এই অর্থোডক্সরা যিশুর হত্যার জন্য ইহুদীদের অভিশাপ দিতো। পূর্ব ইউরোপ জুড়ে ঘৃণার চোখে দেখা হতো ইহুদীদের। কার্ল মার্ক্স নামের ইহুদী যখন কমিউনিজম তত্ত্ব দেয় সেটি ইহুদীদের মেইনস্ট্রিমে মিশে যাওয়ার সুযোগ এনে দেয়। এই সুযোগে রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক ব্লকে ঢুকে পড়ে ইহুদীরা। এরা ঢোকার পরেই বলশেভিক ও মেনশেভিক পৃথক হয়। জায়োনিস্ট পরিকল্পনায় আগেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর সর্বশেষ সাম্রাজ্য ওসমানীয় সাম্রাজ্যকে ভেঙে ফেলা হয়। তারপর ১৯১৭ এর অক্টোবরে রাশিয়াজুড়ে লাল পতাকার কথিত বিপ্লব শুরু হয়। মানুষ হত্যার খেলা শুরু করে ইহুদীরা। শত বছর ধরে অর্থোডক্স খ্রীস্টানদের উপর থাকা ক্ষোভের প্রতিশোধ একের পর এক গণহত্যা চালিয়ে নেয় জায়োনিস্ট ইহুদীরা।
অর্থোডক্স রাশিয়ানদের মন থেকে এই ক্ষত আজো যায়নি। ইহুদীদের স্বরূপ চিনতে দেরি করে ফেললেও ১৯৫৩ সালে ইহুদীবাদী লেনিনের নীতির বাইরে আসতে চেষ্টা করা স্ট্যালিন বলতে বাধ্য হন:
Every Jew is a potential spy of USA.


এই সময় থেকেই ইহুদীদের প্রতি সাধারণ রাশানদের ঘৃণা প্রকাশিত হতে থাকে। হিটলারের রাশিয়ায় আক্রমণের পিছনের ইতিহাসও এই ইহুদীবিদ্বেষ। হিটলারের সময়ে বলশেভিক বলতেই ইহুদী বোঝানো হতো। বলশেভিক বিপ্লবের নামে কোটি কোটি রাশিয়ান হত্যার অভিযোগে ১৯৩৪ সালে ট্রটস্কির বিচার শুরু হয় খোদ রাশিয়ায়। হত্যাকান্ড প্রমাণিত হবে জেনে আগেই রাশিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায় ট্রটস্কি ও নেতৃস্থানীয় ইহুদীরা। ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয় স্ট্যালিনকে খুন করে ইহুদীরা রাশিয়ার ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল। স্নায়ুযুদ্ধের পুরোটা সময় রাশিয়ার তথ্য আমেরিকায় পাচার করেছে ইহুদীরা। সেই সাথে ধীরে ধীরে রাশিয়া ছেড়ে আমেরিকা ও ইসরাঈলে চলে গিয়েছে তারা।বর্তমানে রাশিয়ায় ইহুদী একেবারেই নেই বললে চলে। তো ট্রটস্কি যে খুনী হিসেবে চিহ্ণিত হলেন সেটি অক্টোবর বিপ্লবওয়ালারা আলোচনায় আনেন তো?

৫।
আমেরিকা ও ইউরোপীয় খ্রীস্টানদের সাথে রাশিয়ার খ্রীস্টানদের বিশ্বাসগত পার্থক্য রয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপীয়ান খ্রীস্টানরা রোমান ক্যাথলিক, অন্যদিকে রাশিয়ান খ্রীস্টানরা অর্থোডক্স, এরা একসময় পূর্ব বাইজেনটাইন খ্রীস্টান নামের পরিচিত ছিল। ল্যাটিন আমেরিকার অধিকাংশ খ্রীস্টানও অর্থোডক্স। রাশিয়ার সাথে ল্যাটিনদের সুসম্পর্কের মূলে এটিও কাজ করে। আবার সিরিয়ার পালমিরায় যে খ্রীস্টানরা বাস করে তারাও অর্থোডক্স। এ কারণেই রাশিয়ান খ্রীস্টান ধর্মগুরু ফতোয়া দিয়েই পুতিনকে সিরিয়ায় পাঠায়। সে অন্য কথা। যা বলছিলাম, এই অর্থোডক্স খ্রীস্টানরা ইহুদীবিদ্বেষী আগেই বলেছি। তারা এখনো বিশ্বাস করে, যিশুকে খুন করেছে ইহুদীরা এবং একারণে ওরা অভিশপ্ত। ইউরোপ জুড়ে এক সময় একারণেই ইহুদীদের ঘৃণার চোখে দেখা হতো। তার সঙ্গে বলশেভিক আন্দোলনের নামে রাশিয়ার মিলিয়ন মিলিয়ন খ্রীস্টানকে হত্যা করে পালিয়ে যায় ইহুদীরা। নতুন প্রজন্মের রাশিয়ানরা এ ইতিহাস জানে। তারা তাই মনেপ্রাণে ইসরাঈলের বিরোধীতা করে। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Russia Today বা RT তে অবৈধ ইসরাঈলের অত্যাচারের বিষয়ে প্রতিদিন সংবাদ প্রচার করা হয়। আবার রাশিয়া ও ইরান কৌশলগত মিত্র রাষ্ট্র। ইরানীরা ইহুদীদের এক নম্বর শত্রু ভাবে। রাশিয়াও মিত্রের দ্বারা প্রভাবিত। ইসরাঈল ও তুরস্ক NATO এর সাথে সম্পৃক্ত। রাশিয়া তার অস্তিত্ত্বের জন্য NATO কে হুমকী মনে করে।

এসব কারণে রাশিয়ায় ইসরাঈল বিরোধীতা বাড়ছে। তবে তুর্কি, ইরান ও রাশিয়া জোট গঠন করলে তা বিশ্বের সকল পরাশক্তির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং হবে।
সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাশিয়া ও আমেরিকার পারমাণবিক যুদ্ধটা অত্যাসন্ন। সেটি কোথায় সংঘটিত হবে সেটি আলোচনার দাবি রাখে। হতে পারে সিরিয়ায়, হতে পারে ইউক্রেনে কিংবা আলাস্কায় বা উত্তর কোরিয়ায়। যেখানেই হোক, এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমেরিকার পতন ঘটবে, বিশ্বের ক্ষমতার পট পরিবর্তন হবে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসবে অবৈধ ইসরাঈল তথা জায়োনিস্টরা। New World Order এর আওতায় ইসরাঈল থেকে পৃথিবীব্যাপী অত্যাচারের ছড়ি ঘোরানো হবে। ইতিহাসের সেই সময়টার আগেই রাশিয়ার অর্থোডক্স খ্রীস্টানরা জায়োনিস্ট ইহুদীদের বিরুদ্ধপক্ষে চলে গিয়েছে। এখন অবস্থান একদম পরিষ্কার। একপক্ষে অভিশপ্ত ইসরাঈল ও তার মিত্ররা। অন্যপক্ষে ইরান, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও এদের মিত্র দেশ ও জাতি। পৃথিবী নির্মমভাবে অপেক্ষা করছে সেই Armageddon বা সর্বশেষ ধ্বংসাত্মক মহাযুদ্ধটির জন্য...।
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

1 Comments