সর্বশেষ

চামড়ার দাম কমার কারণ || ভারতে পাচারের সম্ভাবনা?

মহামূল্যবান চামড়া। পাচারের আশঙ্কা। ছবি/ডিবিসি।

এই যে সোনার বাংলাদেশে সোনার চামড়ার দাম কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে এ নিয়ে নীতিনির্ধারক, রাজনীতিবিদ, আমলা, পুলিশ, মাস্টার, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী প্রমুখদের ভাবনা কী? এরা কী জানে বা বোঝে এই চামড়ার রাজনীতি? অথচ চামড়াজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বে চামড়া একটি অপরিহার্য কাঁচামাল। চামড়া ব্যবহৃত হয় বেশিরভাগ বিলাসবহুল দ্রব্য তৈরিতে। এর মধ্যে জুতা, বেল্ট, ব্যাগ ইত্যাদিকে ভীষণ প্রয়োজনীয়ও বলা যায়। অথচ এই চামড়া শিল্প আজ মুমূর্ষু! এর নেপথ্য কী? সেটি নিয়ে গরু ব্যবসায়ী, মধ্যস্বত্বভোগী বা কৃষক বা মালিকপক্ষ কী ভাবছে তা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করা যায়। কে করবে? অল্প দামে চামড়া কিনে গুদামজাত করা মধ্যস্বত্বভোগী ইবলিশগুলো এই চামড়া অবৈধপথে ভারতে পাচার করে কী না খতিয়ে দেখা হয়েছে?



ভারতে গোমাতা হত্যা এখন বেশ নিষিদ্ধ গোরাজনীতির ভাঁড়পুত্র বা ষাড়পুত্রপাল ক্ষমতায় থাকায়। কিন্তু গোমহাভারতের ১৩০+কোটি মানুষের কি গরুর চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমেছে? না। বরং বাড়ার কথা। তো তাদের এই চামড়ার চাহিদা কে পূরণ করবে? ভাবুন ভাবুন। ছোটবেলায় যে চামড়ার দাম ৩ হাজার পর্যন্ত দেখেছি সব কিছুর দাম বাড়লেও সেই চামড়া কীভাবে ৭০ টাকা হয়ে যায়? আমার কাছে চামড়াশিল্পে এই নৈরাজ্যময় মূল্যহ্রাস একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাজ যারা এই অল্প দামের চামড়া ভারতে পাচার করে, যেকোনভাবেই এই অল্প দামে চামড়া ভারতকেই লাভবান করবে। যখন ভারতের গরু এদেশে আসতো তখনই দেশী গরুর চামড়ার দাম অধিক, আর এখন ভারতের গরু আসেনা অথচ আমাদের চামড়ার দাম পড়ে গেলো! এত্ত সোজা বিষয়টি? 


কোথাও বড় ধরনের শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। যেভাবে পদ্মার ইলিশ বাংলাদেশে ১০০০ টাকা কেজি হলেও কলকাতায় ৩০০ টাকা হয়ে যায়; সেভাবে বাংলাদেশের চামড়া সস্তায় কিনে তা দিয়ে জুতা স্যান্ডেল বেল্ট বানিয়ে বাংলাদেশে চড়া দামে বিক্রির পাঁয়তারা আছে কী না খতিয়ে দেখা হোক। আবির্ভূত সংকটের সঙ্গে অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে জটিলভাবে অধ্যয়ন করার মত মাথা এই দেশে নাই, এমন কী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের এই বিষয়গুলো ছাত্রছাত্রীদের জানানো উচিত তারা পশ্চিমা দেশ ও ভারতের মানসিক দাসত্বের ছবক দেয়। তাই চামড়াজাত দ্রব্য নিয়ে একটু ভাবুন সবাই। কোরবানিতে কোটি গরু জবাই হয়, সারাদেশে দৈনিক হাজার হাজার গরু জবাই হয়, এই বিপুল পরিমাণ চামড়ার বাজারের দিকে কোন শকুনের দৃষ্টি পড়েছে তা খুঁজে দেখুন। ইতিহাস বলে স্বদেশী কিছু দালাল/রাজাকার আজীবন ব্যক্তিস্বার্থের কারণে দেশ ও জাতির মর্যাদা, স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়। সেই দুষ্টুচক্রটিকেও খুঁজে বের করতে হবে আমাদের সবাইকে। মনে রাখবেন, বহু মীর জাফর, ঊমিচাঁদ, রায়দুর্লভ আমাদের আশেপাশেই আছে, তারা দুর্লভ নয়।

সুতরাং চামড়ার দাম বৃদ্ধি কর হে চামড়ামোটা বেহায়ার দল; নইলে মজলুম বাংলাদেশ অভিশাপ দেবে। তাঁর বুক থেকে একে একে তাঁত থেকে শুরু করে কৃষিব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে, তাঁর সন্তানদের কর্মসংস্থান নাই, ব্রিটিশপন্থী চাকরব্যবস্থার জয়জয়কার! স্বনির্ভর উৎপাদনব্যবস্থা এখন মুমূর্ষু!এবার কী চামড়ার পালা?
পাঠ অনুভূতি

Post a Comment

0 Comments